আসন্ন ঈদ উৎসব সামনে রেখে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে জমজমাট হয়ে উঠেছে বিকিকিনি। নিজেদের পছন্দের পোশাক কিনতে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন পৌর সদরের দোকানগুলোতে। আর ঈদ ঘিরে পছন্দের কেনাকাটায় ক্রেতার সরগরম উপস্থিতির সুযোগে ছিনতাই করতে সীতাকুণ্ডের পৌর সদর বাজারে ছিনতাইকারী চক্রের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।

গত দুদিনে ছিনতাইকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে মোবাইল ফোন খুইয়েছেন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ১৩ জন ক্রেতা। পাশাপাশি ছিনতাইকারী চক্রের কবলে পড়ে সোনার চেইন খুইয়েছেন মন্দিরে আসা এক পুণ্যার্থী বৃদ্ধা। ঈদ ঘিরে পৌর সদর এলাকায় ছিনতাইকারী চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধিতে ক্রেতার পাশাপাশি চরম উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন পৌর সদরের ব্যবসায়ীরা। 
ছিনতাইকারী চক্রের হাত থেকে নিজেদের মূল্যবান জিনিসপত্র রক্ষার্থে ব্যবসায়ী নেতারা মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালালেও এখনো মার্কেটগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়নি।

পৌর সদরের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ সামনে রেখে পৌর সদরের প্রতিটি মার্কেটের দোকানগুলোতে বিকিকিনি জমজমাট হয়ে উঠেছে। নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক কিনতে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পৌর সদরের মার্কেটে ছুটে আসছেন হাজারো মানুষ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজারে হঠাৎই সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক ছিনতাইকারী চক্র। চক্রের সদস্যরা পৌর সদরের বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতার ভিড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মুঠোফোন, স্বর্ণালঙ্কারসহ টাকা।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, গত দুদিনে পৌর সদরের ন্যাশনাল মার্কেট, বদিউল আলম নিউমার্কেট, আফরোজা প্লাজা, শপিং সেন্টার ও মাছ বাজারের সামনে থেকে অন্তত ১৩ জন ক্রেতার মোবাইল ছিনতাই করেছে ছিনতাইকারী চক্র।

এ ছাড়া শুক্রবার চন্দ্রনাথ ধামে তীর্থ করতে আসা এক বৃদ্ধার গলা থেকে সোনার চেইন প্রকাশ্যে টেনে নিয়ে যায় চক্রের এক সদস্য। একই দিনে বাজার করতে আসা এক মহিলার ব্যাগ থেকে ৩০ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে বাজারের একটি দোকানের সামনে। এ ছাড়া শুক্রবার রাতে বাজারে নতুন চালু হওয়া জুতার দোকান ‘বে’ তে হানা দিয়ে তিন জোড়া জুতা বিনা মূল্যে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে একটি চক্র। পরে দোকানের মালিক থানায় খবর দিলে এস. আই হারুন-উর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। এভাবে ঈদের বাজার জমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে চোর-ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায় চরম উদ্বিগ্নতার পাশাপাশি হতাশায় ভুগছেন তাঁরা।

পৌর সদর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বাহার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বলা হয়েছে, সীতাকুণ্ড থানার পক্ষ থেকেও নিয়মিত মহিলা ও পুরুষ পুলিশের যৌথ টিম থাকবে। কিন্তু এখনো কোনো টহল শুরু হয়নি।’

অন্যদিকে প্রতিদিন মোবাইল, টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে। বাজারে নেমে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন তীর্থযাত্রীও। কিন্তু প্রতিরোধের যেন কেউ নেই! তিনি দ্রুত এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল শনিবার থেকে আমরা একটি টহল টিম দিয়েছি। আজ (রোববার) থেকে মহিলা কনস্টেবল দেব। সব মিলিয়ে বাজারে টহল জোরদার করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’