ভারপ্রাপ্তে ভারাক্রান্ত স্কুল

সনি আজাদ, চারঘাট 
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৫: ০৪

চারঘাট উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ দিয়েই চলছে ৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে এসব প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ৭৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। এ ছাড়া ৯টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ নিয়ে মামলা চলায় সেগুলোও চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৯৫টি। এর মধ্যে ৭টি মাধ্যমিক, ৩টি উচ্চমাধ্যমিক ও ৩টি কারিগরি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।

উপজেলার একমাত্র সরকারি স্কুল সরদহ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ও একমাত্র সরকারি কলেজ সরদহ সরকারি মহাবিদ্যালয়ও চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। সরদহ সরকারি মহাবিদ্যালয়ে গত তিন বছরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ৬ জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করেছেন। একই অবস্থা চারঘাট সদরের মহিলা ডিগ্রি কলেজেও। সেখানেও গত তিন বছরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ৩ জন শিক্ষক অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হলেও নিয়োগের কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই ব্যক্তি দুই দফার বেশি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার নিয়ম নেই। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে একই ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর ধরে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরা নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রতিষ্ঠানপ্রধান নিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছেন। এ ছাড়া একাধিকবার প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও নিয়োগ দেয়নি কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে অন্যান্য শিক্ষক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর নিয়োগ যথারীতি চলছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এ অবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়ী করেছেন অভিভাবকেরা ও শিক্ষাবিদরা।

স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ ফাঁকা থাকলে শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। অন্য পদে নিয়োগ চলছে অথচ যেটা জরুরি সেই প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ হচ্ছে না। এমন পরিবেশে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ সাইফুল বাদশা বলেন, একজন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে কেন্দ্র করেই সে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য রচিত হয়। অথচ কিছু মানুষ নিজেদের সুবিধা আদায়ে ও নিয়োগ বাণিজ্য করতে বছরের বছর ধরে এসব স্কুল ও কলেজে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, অধিকাংশ স্কুলে ব্যবস্থাপনা কমিটি নেই। চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। এর ফলে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে অতি দ্রুত যাতে নিয়োগ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানে নতুন কমিটি গঠন শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত