সম্পাদকীয়
লালনভক্ত মানুষের প্রতি ধর্মান্ধ ও ক্ষমতাবান হঠকারীরা বহু সময়ে এক জোট হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় তাদের ক্ষতিসাধন করেছে। সে রকমই আরেকটি ঘটনার দেখা পাওয়া গেল কুষ্টিয়ায়। স্বামীর কবরের পাশে নিজের জমিতেই যে ঘর গড়েছিলেন চায়না বেগম, সেই ঘর ভেঙে দিয়েছেন গ্রামের মেম্বার-মাতবররা।
এটা সংগীতের প্রতি বিদ্বেষ নাকি ৮০ বছর বয়সী চায়না বেগমকে আশ্রয়হারা করতে পারলে জায়গাটা নিজেরা দখল করে নিতে পারবেন তারই পাঁয়তারা, সেটা কোনো একসময় বোঝা যাবে নিশ্চয়ই। কিন্তু এ প্রবণতাটি যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের মেম্বার-মাতবরদের চরিত্রকে উলঙ্গ করে প্রকাশ করেছে, সেটা বলে দিতে হয় না।
মানসিকতায় কতটা নিকৃষ্ট হলে একজন বয়োবৃদ্ধ নারীকে ভিটেছাড়া করার মতো ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে, তা বুঝতে হলে এই মনস্তত্ত্বকেও বুঝতে হবে। যাঁরা গান-বাজনা করে উপার্জন করেন কিংবা যাঁরা কোনো সাধককে গুরু মেনে তাঁর জীবনরীতি বা ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাশালী কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে যায়। এলাকার ধর্ম, রাজনীতি এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী কিছু মানুষ দুর্বলের ওপর অত্যাচার করেছেন—এ রকম বহু নজির আছে।
ভাবনার বিষয় হলো, সংগীতের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া এ রকম প্রচারণাগুলোর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শক্ত হাতে তা প্রতিরোধ করার মতো সামাজিক শক্তি এখন প্রায় নেই বললেই চলে। যে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ভাবনা থেকে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল, সেই ভাবনা বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দেশটিতে যে যার ধর্ম কৃষ্টি ঐতিহ্য সংস্কৃতি লালন করবে, দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সেই অঙ্গীকারটি ছিল। মুশকিল হয়েছে, এখন বিভিন্নভাবে সেই অঙ্গীকার থেকে সরে গিয়ে আবার ধর্মান্ধতার একটা অবয়ব তৈরি হচ্ছে দেশের সর্বত্রই। সময়মতো এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারলে এরা সুযোগসন্ধানী হয়ে সব ধরনের দখলদারি কায়েম করে উঠবে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত কুষ্টিয়ার এ ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে স্থানীয় মসজিদের ইমামকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তা থেকে অনুমিত হয়, স্থানীয় মেম্বার-মাতবর এবং মসজিদের ইমাম এই ভাঙচুরে ইন্ধন দিয়েছেন; অর্থাৎ সামাজিক এবং ধর্মীয় নেতৃত্ব এ ক্ষেত্রে এই নারীর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তাতে কি ভাবনার দীনতার আমূল পরিবর্তন ঘটবে? শুরুতে তো ঠিক করতে হবে, যিনি ক্ষমতা বা পেশিশক্তির কারণে দুর্বলকে আঘাত করছেন, তাঁর শাস্তি হলো কি না। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার ফলে হয়তোবা তাঁরা ক্ষণিকের জন্য ভুল স্বীকার করে একটা আপস ফর্মুলায় যাবেন।
কিন্তু লালনভক্তদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের পেশিশক্তির কাছ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে কি এই আপস ফর্মুলা?
এ জন্য প্রয়োজন যুক্তিনির্ভর সামাজিক শক্তির উত্থান। সেই শক্তি ষাট এবং সত্তরের দশকে যতটা সজাগ ছিল, বর্তমানে ততটা নেই। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে সমাজ-সংস্কৃতি বিপদে পড়ে যাবে, যা আমরা চাই না একেবারেই।
লালনভক্ত মানুষের প্রতি ধর্মান্ধ ও ক্ষমতাবান হঠকারীরা বহু সময়ে এক জোট হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় তাদের ক্ষতিসাধন করেছে। সে রকমই আরেকটি ঘটনার দেখা পাওয়া গেল কুষ্টিয়ায়। স্বামীর কবরের পাশে নিজের জমিতেই যে ঘর গড়েছিলেন চায়না বেগম, সেই ঘর ভেঙে দিয়েছেন গ্রামের মেম্বার-মাতবররা।
এটা সংগীতের প্রতি বিদ্বেষ নাকি ৮০ বছর বয়সী চায়না বেগমকে আশ্রয়হারা করতে পারলে জায়গাটা নিজেরা দখল করে নিতে পারবেন তারই পাঁয়তারা, সেটা কোনো একসময় বোঝা যাবে নিশ্চয়ই। কিন্তু এ প্রবণতাটি যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের মেম্বার-মাতবরদের চরিত্রকে উলঙ্গ করে প্রকাশ করেছে, সেটা বলে দিতে হয় না।
মানসিকতায় কতটা নিকৃষ্ট হলে একজন বয়োবৃদ্ধ নারীকে ভিটেছাড়া করার মতো ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে, তা বুঝতে হলে এই মনস্তত্ত্বকেও বুঝতে হবে। যাঁরা গান-বাজনা করে উপার্জন করেন কিংবা যাঁরা কোনো সাধককে গুরু মেনে তাঁর জীবনরীতি বা ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাশালী কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে যায়। এলাকার ধর্ম, রাজনীতি এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী কিছু মানুষ দুর্বলের ওপর অত্যাচার করেছেন—এ রকম বহু নজির আছে।
ভাবনার বিষয় হলো, সংগীতের বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া এ রকম প্রচারণাগুলোর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শক্ত হাতে তা প্রতিরোধ করার মতো সামাজিক শক্তি এখন প্রায় নেই বললেই চলে। যে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ভাবনা থেকে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল, সেই ভাবনা বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ দেশটিতে যে যার ধর্ম কৃষ্টি ঐতিহ্য সংস্কৃতি লালন করবে, দেশ গড়ার ক্ষেত্রে সেই অঙ্গীকারটি ছিল। মুশকিল হয়েছে, এখন বিভিন্নভাবে সেই অঙ্গীকার থেকে সরে গিয়ে আবার ধর্মান্ধতার একটা অবয়ব তৈরি হচ্ছে দেশের সর্বত্রই। সময়মতো এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারলে এরা সুযোগসন্ধানী হয়ে সব ধরনের দখলদারি কায়েম করে উঠবে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত কুষ্টিয়ার এ ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে স্থানীয় মসজিদের ইমামকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তা থেকে অনুমিত হয়, স্থানীয় মেম্বার-মাতবর এবং মসজিদের ইমাম এই ভাঙচুরে ইন্ধন দিয়েছেন; অর্থাৎ সামাজিক এবং ধর্মীয় নেতৃত্ব এ ক্ষেত্রে এই নারীর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তাতে কি ভাবনার দীনতার আমূল পরিবর্তন ঘটবে? শুরুতে তো ঠিক করতে হবে, যিনি ক্ষমতা বা পেশিশক্তির কারণে দুর্বলকে আঘাত করছেন, তাঁর শাস্তি হলো কি না। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার ফলে হয়তোবা তাঁরা ক্ষণিকের জন্য ভুল স্বীকার করে একটা আপস ফর্মুলায় যাবেন।
কিন্তু লালনভক্তদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের পেশিশক্তির কাছ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে কি এই আপস ফর্মুলা?
এ জন্য প্রয়োজন যুক্তিনির্ভর সামাজিক শক্তির উত্থান। সেই শক্তি ষাট এবং সত্তরের দশকে যতটা সজাগ ছিল, বর্তমানে ততটা নেই। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে সমাজ-সংস্কৃতি বিপদে পড়ে যাবে, যা আমরা চাই না একেবারেই।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে