নুসরাত জাহান শুচি, সাংবাদিক
‘আমি তো যুদ্ধে যাব, বেঁচে ফিরলে আমাদের বিয়ে হবে।’ কথাটি বিয়ের কনেকে বলেছিলেন দবিরুদ্দিন মুন্সি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি টগবগে তরুণ। বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন। কনে ছিলেন হাসিয়া বেগম। তারপর কনে পছন্দ হওয়ার পরে যুদ্ধে চলে যান।
বেঁচে ফিরবেন কি না, তা না জেনেও কনে অপেক্ষা করেছিলেন কোন বিশ্বাসে ঠিক জানি না। তবে যুদ্ধ শেষে সেই কনেকে
বউ করে ঘরে তুলেছিলেন দবিরুদ্দিন মুন্সি। এরপর একসঙ্গে কাটিয়েছেন ৫০টি বছর।
না। এটা কোনো সিনেমার গল্প নয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প। এমন অনেক গল্প রয়ে গেছে আড়ালে। এই যেমন মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে ওঠা ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’। এই দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবনের যুদ্ধের গল্পটা অনেকটা ভিন্ন প্রকৃতির। তাঁরা দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন ফুটবলের মাধ্যমে। বিনিময়ে হারিয়েছেন পরিবার। ধর্ষিত হতে দেখেছেন নিজের মা-বোন-স্ত্রী-কন্যাকে। তবু দমে যাননি। আমরা কতটুকু জানি তাঁদের সম্পর্কে?
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সৃষ্টি হয় ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’। সেখানেই পাঠ করা হতো চরমপত্র। যুদ্ধের সময় পুরো বাংলার সব খবর মানুষের কাছে পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল এটি। শুধু কি তা-ই? এই বেতারেই সম্প্রচার হতো মুক্তির গান, কবিতা ও কথিকা পাঠ। তেমনই কিছু গান মুহূর্তেই লিখে ফেলতে পারতেন সেই সময়ের গীতিকারেরা। ‘তীরহারা এ ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে,/ আমরা ক’জন নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে।’ আপেল মাহমুদের এই গণসংগীত ছিল যুদ্ধের তীব্র চেতনার বজ্রশপথের মতো।
২৫ মার্চের আগেই গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখেছিলেন, ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়/ হবে হবে হবে, হবে নিশ্চয়/ কোটি প্রাণ একসঙ্গে জেগেছে একসঙ্গে নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময়।’ তিনি আরও লেখেন, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে/ রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল।’ গানগুলো শুনলে চোখের সামনে ভেসে উঠত বাংলার আকাশে পতপত করে উড়তে থাকা বাংলাদেশের পতাকার কথা।
গোবিন্দ হালদারের লেখা, ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি/ মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।’ গানটি শুধু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সম্প্রচারিত হয়নি। সে সময় যেখানেই লোক সমাগম হতো, সেখানেই সমবেত কণ্ঠে সবাই গেয়ে উঠত মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি...। এসব গান-কবিতার প্রেক্ষাপট আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে কতটা জানা?
জরিপ করলে দেখা যাবে, শতকরা ২০ জনও জানেন না এসব ইতিহাস সম্পর্কে। তাঁরা কেবল জানেন ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতার কথা। তাঁরা জানেন, ৩০ লাখ শহীদের কথা। জানেন ২ লাখ ধর্ষিত মা-বোনের কথা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জানেন, সে সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা।
কিন্তু বাংলার এই সহজ-সরল কৃষক, শ্রমিকেরা কিসের অনুপ্রেরণায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করলেন, সেই প্রেক্ষাপট তরুণ প্রজন্মের কাছে ধোঁয়াশার মতো। তবে ধোঁয়াশার সঙ্গে আশার সম্পর্কটা বেশ নিবিড়। তাই তরুণ প্রজন্ম বিজয়ের চেতনায় রঙিন হতে চান। বাংলার দামাল ছেলেদের ইতিহাস তুলে ধরতে চান বিশ্বদরবারে। শুধু জানতে চান না, জানাতে চান আমাদের যুদ্ধের ইতিহাস কেবলই অস্ত্র আর রক্তের ইতিহাস নয়, এটি আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-সাহিত্য-চেতনার ইতিহাস।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন।
পাকিস্তানি বাহিনীর এই আত্মসমর্পণের ইতিহাস বিশ্বে বিরল ঘটনার মতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চসংখ্যক সেনা নিয়ে আত্মসমর্পণের ইতিহাস এটি। আমাদের বিজয়ই যেন এক ইতিহাস।
‘আমি তো যুদ্ধে যাব, বেঁচে ফিরলে আমাদের বিয়ে হবে।’ কথাটি বিয়ের কনেকে বলেছিলেন দবিরুদ্দিন মুন্সি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি টগবগে তরুণ। বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন। কনে ছিলেন হাসিয়া বেগম। তারপর কনে পছন্দ হওয়ার পরে যুদ্ধে চলে যান।
বেঁচে ফিরবেন কি না, তা না জেনেও কনে অপেক্ষা করেছিলেন কোন বিশ্বাসে ঠিক জানি না। তবে যুদ্ধ শেষে সেই কনেকে
বউ করে ঘরে তুলেছিলেন দবিরুদ্দিন মুন্সি। এরপর একসঙ্গে কাটিয়েছেন ৫০টি বছর।
না। এটা কোনো সিনেমার গল্প নয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প। এমন অনেক গল্প রয়ে গেছে আড়ালে। এই যেমন মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে ওঠা ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’। এই দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জীবনের যুদ্ধের গল্পটা অনেকটা ভিন্ন প্রকৃতির। তাঁরা দেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন ফুটবলের মাধ্যমে। বিনিময়ে হারিয়েছেন পরিবার। ধর্ষিত হতে দেখেছেন নিজের মা-বোন-স্ত্রী-কন্যাকে। তবু দমে যাননি। আমরা কতটুকু জানি তাঁদের সম্পর্কে?
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সৃষ্টি হয় ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’। সেখানেই পাঠ করা হতো চরমপত্র। যুদ্ধের সময় পুরো বাংলার সব খবর মানুষের কাছে পৌঁছানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল এটি। শুধু কি তা-ই? এই বেতারেই সম্প্রচার হতো মুক্তির গান, কবিতা ও কথিকা পাঠ। তেমনই কিছু গান মুহূর্তেই লিখে ফেলতে পারতেন সেই সময়ের গীতিকারেরা। ‘তীরহারা এ ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে,/ আমরা ক’জন নবীন মাঝি হাল ধরেছি শক্ত করে রে।’ আপেল মাহমুদের এই গণসংগীত ছিল যুদ্ধের তীব্র চেতনার বজ্রশপথের মতো।
২৫ মার্চের আগেই গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার লিখেছিলেন, ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়/ হবে হবে হবে, হবে নিশ্চয়/ কোটি প্রাণ একসঙ্গে জেগেছে একসঙ্গে নতুন সূর্য ওঠার এই তো সময়।’ তিনি আরও লেখেন, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে/ রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল।’ গানগুলো শুনলে চোখের সামনে ভেসে উঠত বাংলার আকাশে পতপত করে উড়তে থাকা বাংলাদেশের পতাকার কথা।
গোবিন্দ হালদারের লেখা, ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি/ মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি।’ গানটি শুধু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সম্প্রচারিত হয়নি। সে সময় যেখানেই লোক সমাগম হতো, সেখানেই সমবেত কণ্ঠে সবাই গেয়ে উঠত মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি...। এসব গান-কবিতার প্রেক্ষাপট আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে কতটা জানা?
জরিপ করলে দেখা যাবে, শতকরা ২০ জনও জানেন না এসব ইতিহাস সম্পর্কে। তাঁরা কেবল জানেন ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতার কথা। তাঁরা জানেন, ৩০ লাখ শহীদের কথা। জানেন ২ লাখ ধর্ষিত মা-বোনের কথা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জানেন, সে সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা।
কিন্তু বাংলার এই সহজ-সরল কৃষক, শ্রমিকেরা কিসের অনুপ্রেরণায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করলেন, সেই প্রেক্ষাপট তরুণ প্রজন্মের কাছে ধোঁয়াশার মতো। তবে ধোঁয়াশার সঙ্গে আশার সম্পর্কটা বেশ নিবিড়। তাই তরুণ প্রজন্ম বিজয়ের চেতনায় রঙিন হতে চান। বাংলার দামাল ছেলেদের ইতিহাস তুলে ধরতে চান বিশ্বদরবারে। শুধু জানতে চান না, জানাতে চান আমাদের যুদ্ধের ইতিহাস কেবলই অস্ত্র আর রক্তের ইতিহাস নয়, এটি আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-সাহিত্য-চেতনার ইতিহাস।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজি আত্মসমর্পণ করেন।
পাকিস্তানি বাহিনীর এই আত্মসমর্পণের ইতিহাস বিশ্বে বিরল ঘটনার মতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চসংখ্যক সেনা নিয়ে আত্মসমর্পণের ইতিহাস এটি। আমাদের বিজয়ই যেন এক ইতিহাস।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
২ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
২ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৬ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে