চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কুড়িগ্রামের উলিপুর ও রাজারহাটে বিধি ভঙ্গ আর সহিংসতার প্রচার আজ শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শেষ হচ্ছে। পোস্টার ছাপানো ও সাঁটানো থেকে শুরু করে প্রচারণায় সব পর্যায়ে আচরণবিধি ভঙ্গের পাশাপাশি নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপিগুলোর দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না বলে দাবি করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

আগামী রোববার জেলার উলিপুরের ১৩টি, রাজারহাটের ৭টি এবং নাগেশ্বরী উপজেলার ১টি ইউপিসহ ২১ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আজ রাত ৮টা থেকে মাইকিং এবং রাত ১২টা থেকে সব ধরনের প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে। ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হবে।

এদিকে গত মঙ্গলবার ভোররাতে উলিপুরের দুর্গাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খায়রুল ইসলাম বাবলুর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত প্রতীকী নৌকা পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। এর প্রতিবাদে মিছিল করে নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা।

১৩ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বাগুয়া অনন্তপুর বাজারের একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে প্রায় ৩০০ লগি-বইঠা জব্দ করে পুলিশ। নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে দুষ্কৃতকারীরা এসব লগি-বইঠা জড়ো করেছিল বলে দাবি করেছেন ওই ইউপির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

এদিকে গত বুধবার বিকেলে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিগ্রামে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাজুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উভয় প্রার্থীর পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে।

রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার জানান, বিদ্যানন্দের সহিংসতার ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ২৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নিয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবস্থা নিতে বলব।’

নির্বাচনপূর্ব সহিংসতার ঘটনাগুলো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) উৎপল কুমার। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রাকিব জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনায় রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার ২০টি ইউপির প্রত্যেকটি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।