ঝড়-বৃষ্টি এলে থাকা যায় না ঘরে

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২২, ১৩: ০৯

উঠতি বয়সেই পা হারাতে হয়েছে। অভাবের সংসারে খাবার জোটানোই যেখানে দায়, সেখানে জরাজীর্ণ কুঁড়েঘরেই শান্তি খোঁজেন তিনি। তবে সেখানেই শান্তি নেই যখন আকাশে দেখেন মেঘের ঘনঘটা। কারণ, ঝড় কিংবা বৃষ্টিতে সেই ঘরে থাকা দায়। তখন বাধ্য হয়েই অন্যের ঘরে আশ্রয় নেন পরিবার নিয়ে।

বলা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার কাশেমের কথা। উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাধখলা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিন শতকের ভিটেমাটি ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে কিছুই নেই পঙ্গু কাশেমের।

ছোটবেলা থেকেই কাঠমিস্ত্রির কাজ করছিলেন কাশেম। যুবক বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বাম পায়ে পচন দেখা দেয় তাঁর। বহু চিকিৎসা করেও শেষরক্ষা হয়নি। আর্থিক দৈন্যের মধ্যেও বাধ্য হয়ে বাম পা কেটে ফেলতে হয়েছে তাঁকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে টানা দুই বছর বিশ্রামে থাকতে হয় কাশেমকে। পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন জোগাতে পঙ্গু অবস্থায় আবারও কাজে নামেন। কিন্তু আগের মতো কাজ করতে পারেন না তিনি। এ কারণে কেউ আর কাজে ডাকেন না। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে তাঁকে।

কাশেমের বড় মেয়ে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী। তবে ঘরের কারণে পড়াশোনায় অনেক কষ্ট হয়। ঝড়বৃষ্টি এলেই অন্যের ঘরে আশ্রয় নিতে হয় তাঁদের। ভাঙা পুরোনো দোচালা টিনের ঘরটিতে বৃষ্টি এলেই পানি পড়ে। কাশেমের স্ত্রী রুনা আক্তার জানান, শুধু একটি ঘরের  জন্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধরনা দিলেও ঘর পাইনি।

প্রতিবন্ধী কাশেম হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, ‘সারা জীবন মানুষের ঘর তৈরির কাজ করেছি। কিন্তু আজ আমি একটি ঘরের জন্য কষ্ট করছি। ঝড়-বৃষ্টিতে ঘর ভেঙে পড়ার ভয়ে থাকি। সরকারের সুদৃষ্টি পেলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’

কাশেমের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার ৩ নম্বর গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই হৃদয়বিদারক। কাশেমের ঘরের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত