দেশের অর্থনীতির প্রাণ হলেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) উদ্যোক্তারা। এই শিল্পের মাধ্যমে দেশে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনীতিকে গতিশীল করা সম্ভব। এ শিল্পের মাধ্যমে দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে। পরিকল্পিত ব্যবস্থা নিলে এই খাতে আরও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এ জন্য রপ্তানিপণ্য বহুমুখী করা প্রয়োজন। উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।

গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া রংপুর বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিক্রি ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

বিকেল ৫টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঞা। পরে তিনি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মফিজুর রহমান, পরিচালক মির্জা নুরুল গণি শাভন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাস্তফা সাহরাব চৌধুরী টিটু, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন, উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আনায়ারা ফেরদৌস পলি প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এসএমই শিল্প উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এই মেরুদণ্ড শক্ত হলে দেশের মেরুদণ্ড শক্ত হবে। সরকার এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আন্তরিক। তাই উদ্যোক্তাদের ভয়ের কিছু নেই। পড়াশোনা শেষে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে।

করোনাকালে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা পণ্য বিক্রি করতে পারেননি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব বিভাগীয় শহরে এসএমই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা যেন তাঁরা সঠিকভাবে পান সে বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সাত দিনের এই বিভাগীয় মেলায় শুধুমাত্র এসএমই উদ্যোক্তারা তাঁদের উৎপাদিত দেশীয় পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয় করছেন। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে সারা দেশের ৬৫টি এসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এ মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলায় রয়েছে পাটজাত পণ্য, পোশাক, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার, হ্যান্ডিক্রাফট এবং অন্যান্য খাতের স্বদেশি পণ্য।

বিকেলে উদ্বোধনের আগে দুপুরে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর থেকে বেলুন উড়িয়ে মেলার প্রচারণামূলক কার্যক্রমের শুরু হয়। মেলার পঞ্চম দিনে ২৮ মার্চ বিকেলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে স্থানীয় পণ্যের প্রভাব-সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।