ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে চারপাশে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে চারপাশ। প্রচারের শেষ সময়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারের দরজায় কড়া নাড়ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের মন পেতে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। তবে নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, সেই হিসাব ইতিমধ্যেই কষে নিয়েছেন ভোটাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, কারও কথায় নয়, দেখেশুনে যোগ্য প্রার্থীকে নিজের ভোট দেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় প্রতীক ছাড়াই এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এবার বাড়তি আগ্রহ এই উপজেলার ইউপি নির্বাচন। ভোটারের মধ্যেও চলছে নির্বাচনী আমেজ। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে চলছে নির্বাচনী আড্ডা। পুরো উপজেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। জমে উঠেছে ভোটের মাঠ।

মোগড়া ইউনিয়নের নতুন ভোটার জাকির বলেন, ‘অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। কিন্তু ইউনিয়নের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয় না। এবার আমরা যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেব।’

সরেজমিন উপজেলার মোগড়া ইউপির বাউতলা গ্রামে দেখা গেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন মোগড়া ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নান্নু মিয়া। তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ খুবই ভালো। আশা করা হচ্ছে এবার উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে উপজেলার আখাউড়া উত্তর ইউপিতে দেখা গেছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা বয়সী ভোটারের কাছে গিয়ে ভোট যাচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান। এ সময় তিনি বলেন, ‘জনগণ আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছেন। তাঁদের অনুরোধে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’

মনিয়ন্দ ইউপির নারী ভোটার রশিদা বলেন, ‘ভোট আসলে প্রার্থীদের আনাগোনার কমতি থাকে না। ভোট শেষ হলেই তাঁদের দেখা পাওয়া যায় না। প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে সেই মোতাবেক কাজ করে না, বরং নির্বাচনের পর সব ভুলে যান প্রার্থীরা। তবে এবার যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করব।’

উপজেলার ১ নম্বর মনিয়ন্দ ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিন মোল্লা বলেন, ‘সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করে আদর্শ ইউনিয়নে পরিণত করা হবে আমার মূল লক্ষ্য।’

তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৬ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩০ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৪৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মোট ভোটার ৮৪ হাজার ৪৩৮ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৪২ হাজার ৯৮৩ এবং নারী ভোটার ৪১ হাজার ৪৫৫ জন।

এদিকে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর কুমার দাস। তিনি বলেন, নির্বাচন পরিচালনা ও সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করার লক্ষ্যে চলমান ইউপি নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।