‘ডিজেলে অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে সরকার। সেখান থেকে ভর্তুকি না দিয়ে জনগণের ওপরে তারা অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। অনুরূপ গ্যাস, চাল, ডাল ও সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যর দাম বেড়েছে। এতে ক্রয়ক্ষমতা হারাচ্ছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। অথচ সরকারের এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই।’

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যর মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও রেশন ব্যবস্থা চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন নেতারা। গতকাল শনিবার বিকেলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ যশোরের উদ্যোগে টাউন হল ময়দানে এ জনসভা হয়।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘তেলের দাম বৃদ্ধি করে সরকার নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে। অথচ সাধারণ মানুষকে ইতিমধ্যেই তিনবেলার জায়গায় দুবেলা খেতে হচ্ছে। এতে পুষ্টির ঘাটতি বাড়ছে। বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট, সেটাও আজ ধ্বংসের মুখে। চামড়া শিল্প ধ্বংসের মুখে। ক্রমেই বাড়ছে বেকারত্ব। কার স্বার্থে এসব করা হচ্ছে? অথচ বাংলাদেশের পাটকল বন্ধ করে ভারত থেকে পাট আমদানি করা হচ্ছে।’

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রী একজন ব্যবসায়ী। তিনি মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা না দিয়ে, খাদ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। অনুরুপ সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আমলারা আজ ব্যবসায়ী বনে গেছেন। মানুষের দুর্ভোগ, দুর্দশা দেখার সময় তাঁদের নেই। তারা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নেতারা আরও বলেন, ‘সরকার শুধু ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা করছে। তারা জনগণের ভেতরে আতঙ্ক সৃষ্টি করে মসজিদ-মন্দিরে হামলা চালিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার অপচেষ্টা করছে। ওদিকে ভারতে মুসলিমদের ওপর হামলা চলছে, এদিকে শেখ হাসিনা সরকার মন্দিরে হামলা চালাচ্ছে। সব মিলে তারা দেশে একটি নৈরাজ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। সরকার ভারতের কাছে জাতীয় সমস্ত স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে। সুতরাং ফ্যাসিবাদী এ সরকারের পতনের জন্য একটি গণঅভ্যুত্থান দরকার।’

জনসভা থেকে জ্বালানী তেল, গ্যাস ও টিসিবির পণ্য মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসঙ্গে বাস ও লঞ্চের বর্ধিত ভাড়া বাতিল, ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সামাধান যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন ও ফ্যাসিবাদ অবসানের দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) যশোরের সভাপতি নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তৃতা করেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ইসরাবুল হক, তসলিমুর রহমান প্রমুখ।