শৈহ্লাচিং মারমা, রুমা (বান্দরবান)
‘আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের লেখাপড়ার খরচ কে দেবে? আমার মতো ছোট দুই ভাই ও এক বোন লেখাপড়া করত। এখন সে সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন অনাথ।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিল ১৬ বছরের তাংপয় ম্রো। বান্দরবানের রুমার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম আবুপাড়ার লেংঙি ম্রোর মেয়ে তাংপয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লেনঙি ম্রোসহ তাঁর বাবা ও তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর নিহতদের পরিবারে নেমে এসেছে দুর্দশা। এদিকে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সন্তানেরও পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তাংপয় ম্রো বলে, ‘লেখাপড়া আর করা হলো না। মায়ের সঙ্গে ঘরে থাকতে হবে। ইচ্ছে থাকলেও লেখাপড়ার খরচ চালাবে কে? আমাদের টাকা-পয়সা নেই। জুমচাষ করে সংসার চালাই।’
গত সপ্তাহে মুরং বাজারে এক দোকানে বসে কথা হয় তাংপয় ম্রোর সঙ্গে। হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেওয়ার সময় নিজেদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে সে। তাংপয় ম্রো বান্দরবানের সুয়ালক ম্রো আবাসিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। হত্যাকাণ্ডের আগে করোনাকালীন ছুটিতে সে বাড়ি এসেছিল।
তাংপয় ম্রো বলে, ‘বাড়িতে এলে আমাকে কাজে নিয়ে যেতে চাইতেন না বাবা, আমার কষ্ট হবে বলে। শুধু বলতেন, ভালো করে পড়ালেখা শিখতে। তাই আমরা চার ভাই-বোন সবাই পাড়া ও বাইরে পড়ালেখা করছি।’
তাংপয়ের চোখের সামনেই হত্যা করা হয়েছে তার বাবাকে। সেই কথা বলতে গিয়ে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এক হাতে চোখের পানি মুছতে মুছতে তাংপয় বলে, ‘নিজের চোখেই দেখেছি কীভাবে হত্যা করা হলো। বাবাকে প্রথমে জুম কাটা ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ দিয়েছিল। তখন বাবা চিৎকার করেননি। আরেকজন কুপিয়েছে কানের নিচে। তারপর ঘরের সামনে থেকে টেনে নিয়ে গেছে তারা।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রুমার দুর্গম আবুপাড়ার কার্বারি লকরুই ম্রো ও তাঁর চার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে পাড়াবাসী। তন্ত্রমন্ত্রের ক্ষমতায় দীর্ঘদিন ধরে পাড়াবাসীকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে এই সন্দেহে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। খবর পেয়ে পরের দিন পুলিশের একটি দল পাঁচটি লাশ উদ্ধার করে। ওই রাতেই পাড়ার ২২ বাসিন্দাকে আটক করা হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি নিহত পাড়াপ্রধানের সেজ ছেলের স্ত্রী বাদী হয়ে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগে মামলা করেন। ওই দিন সকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তি ও উদ্ধার হওয়া মরদেহ জেলায় পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সেদিন সন্ধ্যায় লাশ পাড়ায় এলে রাত ১০টার দিকে সমাহিত করা হয়।
রুমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, এজাহারভুক্ত ২২ জনকে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আবুপাড়া কার্বারির নিহত চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় তুংতুই ম্রোর স্ত্রী-সন্তান নেই। সবার ছোট রিংরাও ম্রো অবিবাহিত ছিলেন। মেজ ছেলে লেংঙি ম্রোর দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। এর মধ্যে দুই ছেলে-মেয়ে বান্দরবানে ও বাকি দুজন পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে।
সেজ ছেলে মেনওয়াই ম্রো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে যৌথভাবে বসবাস করতেন। তাঁর চার সন্তানের মধ্যে ১৩ বছরের ইপয় ম্রো, ১১ বছরের ঙানচ্যং ম্রো ছাড়াও যমজ সন্তান সিংপাত ও সিংপয় ম্রোর বয়স ৮ বছর।
গালেঙ্গ্যা ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ঙানরাও ম্রো (৪৭) বলেন, তাঁর ওয়ার্ডের আবুপাড়ায় ২১ পরিবারের বসবাস। বেশির ভাগই যৌথপরিবার। পাড়ায় লোকসংখ্যা দেড় শতাধিক। এর মধ্যে কার্বারি ও তাঁর চার ছেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় বাকি ১৬টি পরিবার থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একই পরিবারের দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে। এতে পাড়াটি অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পাড়ায় নিহত পরিবারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সন্তানেরাও পড়ালেখা করতে পারবে না বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।
ঙানরাও ম্রো বলেন, সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মতো পাড়ার লোকজনের মধ্যে যেন এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য মৌজার হেডম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার ম্রো সমাজে নেতাদের নিয়ে আবুপাড়ায় আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মামলা অগ্রগতি সম্পর্কে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের অধিক তথ্যের জন্য গত বুধবার জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ আসামির মধ্যে বাছাই করে ৬ জনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তাঁদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনি বা রোববার তাঁদের রিমান্ডের জন্য আনা হবে।’
‘আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের লেখাপড়ার খরচ কে দেবে? আমার মতো ছোট দুই ভাই ও এক বোন লেখাপড়া করত। এখন সে সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন অনাথ।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিল ১৬ বছরের তাংপয় ম্রো। বান্দরবানের রুমার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম আবুপাড়ার লেংঙি ম্রোর মেয়ে তাংপয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লেনঙি ম্রোসহ তাঁর বাবা ও তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর নিহতদের পরিবারে নেমে এসেছে দুর্দশা। এদিকে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সন্তানেরও পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তাংপয় ম্রো বলে, ‘লেখাপড়া আর করা হলো না। মায়ের সঙ্গে ঘরে থাকতে হবে। ইচ্ছে থাকলেও লেখাপড়ার খরচ চালাবে কে? আমাদের টাকা-পয়সা নেই। জুমচাষ করে সংসার চালাই।’
গত সপ্তাহে মুরং বাজারে এক দোকানে বসে কথা হয় তাংপয় ম্রোর সঙ্গে। হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেওয়ার সময় নিজেদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে সে। তাংপয় ম্রো বান্দরবানের সুয়ালক ম্রো আবাসিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। হত্যাকাণ্ডের আগে করোনাকালীন ছুটিতে সে বাড়ি এসেছিল।
তাংপয় ম্রো বলে, ‘বাড়িতে এলে আমাকে কাজে নিয়ে যেতে চাইতেন না বাবা, আমার কষ্ট হবে বলে। শুধু বলতেন, ভালো করে পড়ালেখা শিখতে। তাই আমরা চার ভাই-বোন সবাই পাড়া ও বাইরে পড়ালেখা করছি।’
তাংপয়ের চোখের সামনেই হত্যা করা হয়েছে তার বাবাকে। সেই কথা বলতে গিয়ে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এক হাতে চোখের পানি মুছতে মুছতে তাংপয় বলে, ‘নিজের চোখেই দেখেছি কীভাবে হত্যা করা হলো। বাবাকে প্রথমে জুম কাটা ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ দিয়েছিল। তখন বাবা চিৎকার করেননি। আরেকজন কুপিয়েছে কানের নিচে। তারপর ঘরের সামনে থেকে টেনে নিয়ে গেছে তারা।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রুমার দুর্গম আবুপাড়ার কার্বারি লকরুই ম্রো ও তাঁর চার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে পাড়াবাসী। তন্ত্রমন্ত্রের ক্ষমতায় দীর্ঘদিন ধরে পাড়াবাসীকে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে এই সন্দেহে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। খবর পেয়ে পরের দিন পুলিশের একটি দল পাঁচটি লাশ উদ্ধার করে। ওই রাতেই পাড়ার ২২ বাসিন্দাকে আটক করা হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি নিহত পাড়াপ্রধানের সেজ ছেলের স্ত্রী বাদী হয়ে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগে মামলা করেন। ওই দিন সকালে গ্রেপ্তার ব্যক্তি ও উদ্ধার হওয়া মরদেহ জেলায় পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে সেদিন সন্ধ্যায় লাশ পাড়ায় এলে রাত ১০টার দিকে সমাহিত করা হয়।
রুমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, এজাহারভুক্ত ২২ জনকে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আবুপাড়া কার্বারির নিহত চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় তুংতুই ম্রোর স্ত্রী-সন্তান নেই। সবার ছোট রিংরাও ম্রো অবিবাহিত ছিলেন। মেজ ছেলে লেংঙি ম্রোর দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। এর মধ্যে দুই ছেলে-মেয়ে বান্দরবানে ও বাকি দুজন পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে।
সেজ ছেলে মেনওয়াই ম্রো স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে যৌথভাবে বসবাস করতেন। তাঁর চার সন্তানের মধ্যে ১৩ বছরের ইপয় ম্রো, ১১ বছরের ঙানচ্যং ম্রো ছাড়াও যমজ সন্তান সিংপাত ও সিংপয় ম্রোর বয়স ৮ বছর।
গালেঙ্গ্যা ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ঙানরাও ম্রো (৪৭) বলেন, তাঁর ওয়ার্ডের আবুপাড়ায় ২১ পরিবারের বসবাস। বেশির ভাগই যৌথপরিবার। পাড়ায় লোকসংখ্যা দেড় শতাধিক। এর মধ্যে কার্বারি ও তাঁর চার ছেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় বাকি ১৬টি পরিবার থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একই পরিবারের দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে। এতে পাড়াটি অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পাড়ায় নিহত পরিবারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সন্তানেরাও পড়ালেখা করতে পারবে না বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।
ঙানরাও ম্রো বলেন, সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মতো পাড়ার লোকজনের মধ্যে যেন এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য মৌজার হেডম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার ম্রো সমাজে নেতাদের নিয়ে আবুপাড়ায় আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মামলা অগ্রগতি সম্পর্কে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের অধিক তথ্যের জন্য গত বুধবার জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ আসামির মধ্যে বাছাই করে ৬ জনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। তাঁদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনি বা রোববার তাঁদের রিমান্ডের জন্য আনা হবে।’
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে