রহমান মৃধা
আমি খাঁটি বাঙালি, বাংলাদেশকে ভালোবাসি। অনেক সময় দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলি। তার কারণ হচ্ছে, ‘শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে’। আমি আমার দেশ স্বাধীন করা থেকে বিপদে, আপদে, সুদিনে, দুর্দিনে, নিশ্বাসে, বিশ্বাসে আছি।
ভুলত্রুটি হলে অবশ্যই আমি সমালোচনা করব, কিন্তু যার বা যাদের কোনো অবদান নেই, তারা যখন আমার দেশ সম্পর্কে কথা বলবে, তখন কী করব? কী মনে হয়? আমি তাদেরই অপছন্দ করি, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে ঘৃণা করি, যারা দেশের দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছায়, এমনকি জনগণের অনুমতি ছাড়া।
তারপর দুর্নীতি ও অনীতির সঙ্গে জড়িত। যারা সারাক্ষণ প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে, মিথ্যা কথা বলে দেশের নানা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে, তাদেরও আমি অপছন্দ করি, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনা করে, নানা ধরনের উন্নয়নের দিক দিয়ে। যারা ঘুষ খায়, তারা অপছন্দের তালিকায় শীর্ষেই আছে।
আমি আমার গ্রামের ভাষায় কথা বলি। বাঙালির হিউমার বা বাঙালির তামাশা, মশকরা এবং রসিকতা, এটা বাংলা ভাষার দক্ষতা। সর্বোপরি বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্য হবে সব ভাষার সেরা হিসেবে তুলে ধরার মতো যোগ্যতা এবং আমার মাতৃভাষা, যা এলাকার তথা গ্রামের ভাষা, তাকে নিয়ে গর্ব করতে আমার ভালো লাগে।
যখন আমি বলি ‘পানি খাচ্ছি’, যারা শুদ্ধ ভাষা বলে তারা দেখা গেল মুখের ওপর বলে দিল, ‘আরে জল কি খাওয়া যায়?’ কথা ঠিক, তবে আমরা যে ঘুষ খাই, সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলে না! আমি ‘পানি খাই’ এটা নিয়ে হাসিঠাট্টা হয়। অনেকে আবার ডুবে ডুবেও পানি খায়। আর শুধু পানি কেন, দুধ খায়, চা খায়, কফি খায়, শরবত খায়। আমি সিগারেট খাই না; তবে অনেকে সেটাও খায়, কেউ কেউ বিড়ি খায়, চুরুট খায়। কর্তাব্যক্তিরা সুযোগ পেলে অধস্তনের চাকরিও খায়। গাড়ি তেল বা পেট্রল খায়। বিশ্বাস না হলে ড্রাইভারদের জিজ্ঞেস করুন।
তারা বলে দেবে গাড়ির কোন মডেল তেল বেশি খায়। আকাশে ঘুড়ি গোঁৎ খায়, মাটিতে লাট্টু বনবন করে পাক খায়। কেউ বাড়িতে নেই, হঠাৎ একটি অঘটন ঘটেছে। দেখা গেল বড় ছেলে বাড়িতে এসেছে, বাবা বলবে, ‘এদিকে বিপদ গেল, আর তুমি হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছ?’
ছোটবেলায় মাস্টারের কাছে কানমলা খেয়েছি, বন্ধুদের কাছে ‘প্যাঁক’ খেয়েছি, ভয়ে থতমত খেয়েছি।
ভুল করলে বকা খেয়েছি আর ভালোবেসে চুমু খাই, ছেঁড়া চটি পরে হাঁটতে হোঁচট খাই। অনেকে আয়েশ করে পায়েস খায় আর মাঠে গিয়ে হাওয়া খায়, কাজ করতে হিমশিম খায়, আর পা পিছলে আছাড় খায়, অবসরে দোল খায়, গালি খায়, জুতাপেটাসহ গুঁতো সবই খায়। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
যা-ই হোক নিজ ভাষায় যদি কেউ তাড়া খায়, মার খায়, ঘুষি খায় কিংবা আদর খায়, সে খাওয়া কি খুব অস্বাভাবিক? বাংলা ভাষায় তাই ভাবের প্রকাশে খাওয়ার কোনো অভাব নেই। খাপে খাপে খাপ খাওয়া, তেলে-জলে মিশ খাওয়া, মাল খেয়ে টাল খাওয়া, বোকা বনে ধোঁকা খাওয়া, একেবারে ঘোল খাওয়ার ব্যবস্থা! আমরা বাঙালি দুধও খাই, আবার তামাকও খাই।
কেউ কেউ চুপিচুপি টাকা খায়, পকেটমার ধরা পড়ে মার খায়, কারা যেন আবার ঘুষ খায়! ওহ, ভিড়ের মধ্যে অনেকে ধাক্কা খায়। ফুটবল মাঠে গোল খায়। এত খাওয়া খাতের মধ্যে আমি যদি ‘পানি খাই’ তাতে সমস্যা কোথায়, বলুন? ‘ঘুষ’ তো খাই না। যা-ই হোক, অনেক কিছুই লিখলাম, জানি না সবাই ‘খাবে’ কি না!
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
আমি খাঁটি বাঙালি, বাংলাদেশকে ভালোবাসি। অনেক সময় দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলি। তার কারণ হচ্ছে, ‘শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে’। আমি আমার দেশ স্বাধীন করা থেকে বিপদে, আপদে, সুদিনে, দুর্দিনে, নিশ্বাসে, বিশ্বাসে আছি।
ভুলত্রুটি হলে অবশ্যই আমি সমালোচনা করব, কিন্তু যার বা যাদের কোনো অবদান নেই, তারা যখন আমার দেশ সম্পর্কে কথা বলবে, তখন কী করব? কী মনে হয়? আমি তাদেরই অপছন্দ করি, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে ঘৃণা করি, যারা দেশের দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছায়, এমনকি জনগণের অনুমতি ছাড়া।
তারপর দুর্নীতি ও অনীতির সঙ্গে জড়িত। যারা সারাক্ষণ প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে, মিথ্যা কথা বলে দেশের নানা উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে, তাদেরও আমি অপছন্দ করি, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশকে বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনা করে, নানা ধরনের উন্নয়নের দিক দিয়ে। যারা ঘুষ খায়, তারা অপছন্দের তালিকায় শীর্ষেই আছে।
আমি আমার গ্রামের ভাষায় কথা বলি। বাঙালির হিউমার বা বাঙালির তামাশা, মশকরা এবং রসিকতা, এটা বাংলা ভাষার দক্ষতা। সর্বোপরি বাংলা ভাষার বৈশিষ্ট্য হবে সব ভাষার সেরা হিসেবে তুলে ধরার মতো যোগ্যতা এবং আমার মাতৃভাষা, যা এলাকার তথা গ্রামের ভাষা, তাকে নিয়ে গর্ব করতে আমার ভালো লাগে।
যখন আমি বলি ‘পানি খাচ্ছি’, যারা শুদ্ধ ভাষা বলে তারা দেখা গেল মুখের ওপর বলে দিল, ‘আরে জল কি খাওয়া যায়?’ কথা ঠিক, তবে আমরা যে ঘুষ খাই, সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলে না! আমি ‘পানি খাই’ এটা নিয়ে হাসিঠাট্টা হয়। অনেকে আবার ডুবে ডুবেও পানি খায়। আর শুধু পানি কেন, দুধ খায়, চা খায়, কফি খায়, শরবত খায়। আমি সিগারেট খাই না; তবে অনেকে সেটাও খায়, কেউ কেউ বিড়ি খায়, চুরুট খায়। কর্তাব্যক্তিরা সুযোগ পেলে অধস্তনের চাকরিও খায়। গাড়ি তেল বা পেট্রল খায়। বিশ্বাস না হলে ড্রাইভারদের জিজ্ঞেস করুন।
তারা বলে দেবে গাড়ির কোন মডেল তেল বেশি খায়। আকাশে ঘুড়ি গোঁৎ খায়, মাটিতে লাট্টু বনবন করে পাক খায়। কেউ বাড়িতে নেই, হঠাৎ একটি অঘটন ঘটেছে। দেখা গেল বড় ছেলে বাড়িতে এসেছে, বাবা বলবে, ‘এদিকে বিপদ গেল, আর তুমি হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছ?’
ছোটবেলায় মাস্টারের কাছে কানমলা খেয়েছি, বন্ধুদের কাছে ‘প্যাঁক’ খেয়েছি, ভয়ে থতমত খেয়েছি।
ভুল করলে বকা খেয়েছি আর ভালোবেসে চুমু খাই, ছেঁড়া চটি পরে হাঁটতে হোঁচট খাই। অনেকে আয়েশ করে পায়েস খায় আর মাঠে গিয়ে হাওয়া খায়, কাজ করতে হিমশিম খায়, আর পা পিছলে আছাড় খায়, অবসরে দোল খায়, গালি খায়, জুতাপেটাসহ গুঁতো সবই খায়। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
যা-ই হোক নিজ ভাষায় যদি কেউ তাড়া খায়, মার খায়, ঘুষি খায় কিংবা আদর খায়, সে খাওয়া কি খুব অস্বাভাবিক? বাংলা ভাষায় তাই ভাবের প্রকাশে খাওয়ার কোনো অভাব নেই। খাপে খাপে খাপ খাওয়া, তেলে-জলে মিশ খাওয়া, মাল খেয়ে টাল খাওয়া, বোকা বনে ধোঁকা খাওয়া, একেবারে ঘোল খাওয়ার ব্যবস্থা! আমরা বাঙালি দুধও খাই, আবার তামাকও খাই।
কেউ কেউ চুপিচুপি টাকা খায়, পকেটমার ধরা পড়ে মার খায়, কারা যেন আবার ঘুষ খায়! ওহ, ভিড়ের মধ্যে অনেকে ধাক্কা খায়। ফুটবল মাঠে গোল খায়। এত খাওয়া খাতের মধ্যে আমি যদি ‘পানি খাই’ তাতে সমস্যা কোথায়, বলুন? ‘ঘুষ’ তো খাই না। যা-ই হোক, অনেক কিছুই লিখলাম, জানি না সবাই ‘খাবে’ কি না!
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে