এ কে এম শামসুদ্দিন
যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা পরস্পরের প্রতি যে ঘৃণা, বিদ্বেষ, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষ দর্শকের মতো তা উপভোগ করেছে। এবারের ব্যতিক্রমী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের মহাজোটের দলগুলোই শুধু অংশগ্রহণ করছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী কে হবেন, সেটিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভোটের মাঠ শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দলীয় ও স্বতন্ত্র উভয়েই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় শক্তিমত্তায় কেউ কারও চেয়ে কম নন এবং একে অপরের রাজনৈতিক ও চারিত্রিক দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। এখন একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য সেগুলোই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ডিজিটাল আইনের ভয়ে এত দিন দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের যে কথা সাহস করে বলতে পারেনি, সে কথাই এখন বিনা খরচায় ক্ষমতাসীন দলের লোকের মুখেই তা শুনতে পাচ্ছে। তাঁদের এরূপ নির্বাচনী বাহাসে দলীয় অনেক গোপন রাজনৈতিক তথ্যও জনসমক্ষে চলে এসেছে।
সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি বক্তব্য ঢাকার প্রায় সব পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। তিনি গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের এক নির্বাচনী সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উদ্দেশে কিছু বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, ‘এইবার বুইঝা-শুইনাই নামছি চোর কেমনে আটকাইতে হয়। ২০১৪ ও ২০১৮-তে কামডা আমরাই কইরা দিছিলাম। এইবার হ্যারা কী করতে চাইতেছে, সব জানি। ৭ তারিখে প্রমাণ কইরা দিমু। এহন সমান সমান। এহন আর পুলিশও থাকব না। এহন আসেন, একটা ভোট চুরি কইরা দেহেন। এইডা ২০১৪ ও ২০১৮ না। এইডা ২০২৪ সাল।’
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া আরও এককাঠি সরেস। তিনি চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। সোজা কথা। আমরা এমনে আসি নাই। ২০১৮ সালেও আমরা ভোট ডাকাতি করেছি।’ রিটন বড়ুয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের পক্ষে ভোট প্রচারণায় এই বক্তব্য দেন। এখানে গাজীপুরের জাহাঙ্গীর ও সাতকানিয়ার রিটন বড়ুয়ার বক্তব্যের মাধ্যমে বেশ কিছু সত্য তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে।
ওদিকে মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেন কথার ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন। মেহেরপুরের সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে নৌকার প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে হুমকি দিয়ে কিছু কথা বলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি ডা. অলোককে ধমক দিয়ে বলেন, ‘ভোটে আমি এমপি হই বা না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। তুমি সাবধান হয়ে যাও। আজ এতটুকুই শুধু বললাম। মনে রেখো, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন অবশ্য নিয়ম রক্ষার জন্য উভয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ করেছিল। তাঁদের উভয়ে নোটিশের জবাব দিলেও তারপর কী হয়েছে, জানা যায়নি। আমরা কেউ জানতে পারিনি প্রফেসর মান্নান শেখ হাসিনার মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও কী করে ভারতের প্রার্থী হলেন! প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে তিনি ভারতকে টেনে আনলেন কেন? ডা. অলোকের ধর্মীয় পরিচয় মাথায় রেখে প্রফেসর মান্নান তার খুঁটির শক্তি জাহির করতেই কি ভারতকে টেনে এনেছেন?
ওদিকে আওয়ামী লীগের শরিক ও মনোনীত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা খুব ভালো অবস্থানে আছেন বলা যাবে না। শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়া ৬টি আসনের ৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতারা দাঁড়িয়েছেন বলে তাঁদের অবস্থান বেশ নড়বড়ে হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এই ৬টি আসন ছেড়ে দিলেও দলটির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিধায় জোটের নেতারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। সে হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা সুখকর অবস্থানে নেই। জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশি সমর্থন। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সরিয়ে দিলেও কোথাও ওয়ার্কার্স পার্টি বনাম আওয়ামী লীগ, কোথাও জাসদ বনাম আওয়ামী লীগ এবং কোথাও জেপি বনাম আওয়ামী লীগকে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি সম্ভবত সবচেয়ে বড় আঘাত পেয়েছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। প্রচার-প্রচারণা শেষে দেখা যাচ্ছে ভাগাভাগির সমঝোতায় যে ২৬টি আসনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল, এর ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩টি আসনও হয়তো পাবে না তারা। ওদিকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হিড়িকও পড়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মনে করছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রতারিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে যে করেই হোক জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভারত প্রথমেই আসল কাজটি করে দিয়েছিল। তাঁদের মতে, ভারত নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর অনেক আগেই জি এম কাদেরকে দিল্লিতে ডেকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে দিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের কিছু নেতার বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়, আওয়ামী লীগ আরও নিশ্চিত হতে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী খরচের সিংহভাগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী পার্টির নীতিনির্ধারকেরা নির্বাচনের খরচ বাবদ ৩০ ও ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে—এ কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাঁদের প্রার্থীদের রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিশ্রুত সেই অর্থ না পাওয়ায় জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে পারেনি। ফলে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে নির্বাচন করার উৎসাহ হারিয়ে তাঁরা একে একে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাতে অবশ্য আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই। তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনা এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করা। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, তাঁদের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নই ঘটেছে।
আগামীকালের নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য করানো এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও ভোটকেন্দ্রে অধিক ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা আওয়ামী লীগের বরাবরই ছিল। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও সক্রিয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের কর্মকর্তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিং করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি সব ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ইতিপূর্বে কোনো জাতীয় নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার সমাগমের জন্য পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এভাবে অনুরোধ করেছেন কি না, জানা নেই। ওদিকে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে তাঁদের নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্যের এমন একটি হুমকির ভিডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে অধিকসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করানোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এক মাঠ জরিপে দেখা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৭৫টিতে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এসব আসনের দু-চারটি ছাড়া বাকিগুলোতে অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারছেন না। যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের জন্য কতটুকু মঙ্গল বয়ে আনবে, সে প্রশ্ন তো রয়েই গেছে। এই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে উদাহরণ রেখে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য তা ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের লাভ কী হলো? একটানা ১৫ বছর ক্ষমতা ভোগের সঙ্গে আরও ৫ বছর না হয় যোগ হলো। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর বাছাই করা কিছু নেতা হয়তো মন্ত্রী হবেন। নতুন কিছু মুখ তাঁদের সঙ্গে যোগ হবে, তা বলাই যায়। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ করতে ভবিষ্যতে হয়তো অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে। নিজ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরের ঝগড়া এখন প্রকাশ্যে-জনসমক্ষে নিয়ে এল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একে অপরকে গালাগাল, চরিত্রহনন, অপকর্ম ও দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সন্দেহ নেই। এই নির্বাচনের লাভ-ক্ষতির হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতি যাদের হবে তারা হলো, এ দেশের সাধারণ জনগণ এবং তার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশ, বাংলাদেশ।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগামীকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অনেক অনিশ্চয়তা ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন প্রস্তুতির উত্তাপ এরই মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের সাধ্যমতো প্রচারের কার্যক্রম শেষও করেছে। তবে প্রচার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা পরস্পরের প্রতি যে ঘৃণা, বিদ্বেষ, আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষ দর্শকের মতো তা উপভোগ করেছে। এবারের ব্যতিক্রমী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের মহাজোটের দলগুলোই শুধু অংশগ্রহণ করছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই মনোনয়নবঞ্চিতদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী কে হবেন, সেটিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভোটের মাঠ শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দলীয় ও স্বতন্ত্র উভয়েই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ায় শক্তিমত্তায় কেউ কারও চেয়ে কম নন এবং একে অপরের রাজনৈতিক ও চারিত্রিক দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। এখন একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য সেগুলোই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। ডিজিটাল আইনের ভয়ে এত দিন দেশের মানুষ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের যে কথা সাহস করে বলতে পারেনি, সে কথাই এখন বিনা খরচায় ক্ষমতাসীন দলের লোকের মুখেই তা শুনতে পাচ্ছে। তাঁদের এরূপ নির্বাচনী বাহাসে দলীয় অনেক গোপন রাজনৈতিক তথ্যও জনসমক্ষে চলে এসেছে।
সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি বক্তব্য ঢাকার প্রায় সব পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। তিনি গাজীপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রাসেলের এক নির্বাচনী সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উদ্দেশে কিছু বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, ‘এইবার বুইঝা-শুইনাই নামছি চোর কেমনে আটকাইতে হয়। ২০১৪ ও ২০১৮-তে কামডা আমরাই কইরা দিছিলাম। এইবার হ্যারা কী করতে চাইতেছে, সব জানি। ৭ তারিখে প্রমাণ কইরা দিমু। এহন সমান সমান। এহন আর পুলিশও থাকব না। এহন আসেন, একটা ভোট চুরি কইরা দেহেন। এইডা ২০১৪ ও ২০১৮ না। এইডা ২০২৪ সাল।’
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া আরও এককাঠি সরেস। তিনি চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনাকে একটা কথা বলতে চাই, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা ভোট ডাকাতি করেছি। সোজা কথা। আমরা এমনে আসি নাই। ২০১৮ সালেও আমরা ভোট ডাকাতি করেছি।’ রিটন বড়ুয়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোতালেবের পক্ষে ভোট প্রচারণায় এই বক্তব্য দেন। এখানে গাজীপুরের জাহাঙ্গীর ও সাতকানিয়ার রিটন বড়ুয়ার বক্তব্যের মাধ্যমে বেশ কিছু সত্য তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে।
ওদিকে মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান যেন কথার ‘বোমা’ ফাটিয়েছেন। মেহেরপুরের সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে তিনি মোবাইল ফোনে নৌকার প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে হুমকি দিয়ে কিছু কথা বলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি ডা. অলোককে ধমক দিয়ে বলেন, ‘ভোটে আমি এমপি হই বা না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেব। তুমি সাবধান হয়ে যাও। আজ এতটুকুই শুধু বললাম। মনে রেখো, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী, এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন অবশ্য নিয়ম রক্ষার জন্য উভয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ বা শোকজ করেছিল। তাঁদের উভয়ে নোটিশের জবাব দিলেও তারপর কী হয়েছে, জানা যায়নি। আমরা কেউ জানতে পারিনি প্রফেসর মান্নান শেখ হাসিনার মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও কী করে ভারতের প্রার্থী হলেন! প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে তিনি ভারতকে টেনে আনলেন কেন? ডা. অলোকের ধর্মীয় পরিচয় মাথায় রেখে প্রফেসর মান্নান তার খুঁটির শক্তি জাহির করতেই কি ভারতকে টেনে এনেছেন?
ওদিকে আওয়ামী লীগের শরিক ও মনোনীত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা খুব ভালো অবস্থানে আছেন বলা যাবে না। শরিক দলের জন্য ছেড়ে দেওয়া ৬টি আসনের ৫টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতারা দাঁড়িয়েছেন বলে তাঁদের অবস্থান বেশ নড়বড়ে হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এই ৬টি আসন ছেড়ে দিলেও দলটির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিধায় জোটের নেতারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। সে হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় খুব একটা সুখকর অবস্থানে নেই। জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশি সমর্থন। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সরিয়ে দিলেও কোথাও ওয়ার্কার্স পার্টি বনাম আওয়ামী লীগ, কোথাও জাসদ বনাম আওয়ামী লীগ এবং কোথাও জেপি বনাম আওয়ামী লীগকে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে।
জাতীয় পার্টি সম্ভবত সবচেয়ে বড় আঘাত পেয়েছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। প্রচার-প্রচারণা শেষে দেখা যাচ্ছে ভাগাভাগির সমঝোতায় যে ২৬টি আসনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল, এর ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩টি আসনও হয়তো পাবে না তারা। ওদিকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হিড়িকও পড়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মনে করছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রতারিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে যে করেই হোক জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভারত প্রথমেই আসল কাজটি করে দিয়েছিল। তাঁদের মতে, ভারত নির্বাচনী কার্যক্রম শুরুর অনেক আগেই জি এম কাদেরকে দিল্লিতে ডেকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলে দিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের কিছু নেতার বক্তব্য থেকে অনুমান করা যায়, আওয়ামী লীগ আরও নিশ্চিত হতে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী খরচের সিংহভাগ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী পার্টির নীতিনির্ধারকেরা নির্বাচনের খরচ বাবদ ৩০ ও ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে—এ কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাঁদের প্রার্থীদের রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিশ্রুত সেই অর্থ না পাওয়ায় জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে পারেনি। ফলে পরাজয় নিশ্চিত জেনে নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে নির্বাচন করার উৎসাহ হারিয়ে তাঁরা একে একে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তাতে অবশ্য আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই। তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনা এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করা। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, তাঁদের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নই ঘটেছে।
আগামীকালের নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য করানো এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও ভোটকেন্দ্রে অধিক ভোটার উপস্থিতির মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা আওয়ামী লীগের বরাবরই ছিল। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখে তারা বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও সক্রিয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশের কর্মকর্তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে মিটিং করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি সব ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। ইতিপূর্বে কোনো জাতীয় নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার সমাগমের জন্য পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এভাবে অনুরোধ করেছেন কি না, জানা নেই। ওদিকে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সমর্থকেরা ভোট দিতে না গেলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীর তালিকা থেকে তাঁদের নাম কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্যের এমন একটি হুমকির ভিডিও ক্লিপ নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে অধিকসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করানোই এখন আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এক মাঠ জরিপে দেখা গেছে, ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৭৫টিতে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এসব আসনের দু-চারটি ছাড়া বাকিগুলোতে অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারছেন না। যেসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম, সেই সব আসনে ভোটারদের ভোট নিয়ে আগ্রহও থাকে কম। ফলে সব মিলিয়ে অন্তত শতাধিক আসনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের জন্য কতটুকু মঙ্গল বয়ে আনবে, সে প্রশ্ন তো রয়েই গেছে। এই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ যে উদাহরণ রেখে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের জন্য তা ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের লাভ কী হলো? একটানা ১৫ বছর ক্ষমতা ভোগের সঙ্গে আরও ৫ বছর না হয় যোগ হলো। শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর বাছাই করা কিছু নেতা হয়তো মন্ত্রী হবেন। নতুন কিছু মুখ তাঁদের সঙ্গে যোগ হবে, তা বলাই যায়। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ করতে ভবিষ্যতে হয়তো অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতে পারে। নিজ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরের ঝগড়া এখন প্রকাশ্যে-জনসমক্ষে নিয়ে এল। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একে অপরকে গালাগাল, চরিত্রহনন, অপকর্ম ও দুর্নীতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে সন্দেহ নেই। এই নির্বাচনের লাভ-ক্ষতির হিসাবে সবচেয়ে ক্ষতি যাদের হবে তারা হলো, এ দেশের সাধারণ জনগণ এবং তার চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশ, বাংলাদেশ।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলাম লেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে