আজকের পত্রিকা: অবন্তিকার আত্মহত্যার নোট পড়ে মনে হয়েছে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?
রাশেদা রওনক খান: আসলে অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে সমাজ এবং সমাজের মানুষগুলো প্ররোচিত করেছে। কখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে? যখন তার আর কোনো অবলম্বন, কোনো আশা, শেষ আশ্রয়টুকু থাকে না, সবকিছু হারিয়ে একাকিত্বে ভোগে, তখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অবন্তিকার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি—সে যখন তার বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকে আশাহত হয়েছে, বন্ধু-সহপাঠীরা তার বিপদের সময় এগিয়ে আসেনি, আর তার বিভাগও তার পাশে দাঁড়ায়নি। প্রক্টর অফিসে আবেদন করেছিল বলে দাবি করা হয়; অর্থাৎ তার চারপাশে যেসব জায়গায় কথা বলা দরকার, সেটা করেও যখন কোনো সমাধান পায়নি, তখন কিন্তু একটা বদ্ধ ঘরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এর জন্য আসলে আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থা দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের চারপাশ দায়ী।
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার লক্ষ করা গেছে। তিনিও একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। সেই জায়গা থেকে বলব, আসলে এই সময়ের স্বার্থপর, ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা, তা দায়ী। আমরা, সমাজের মানুষ—সবাই ভান করছি একসঙ্গে থাকার। কিন্তু খুবই বিচ্ছিন্ন ও সংকীর্ণ গণ্ডিতে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। এখানে না আছে সামষ্টিকতার চিন্তাভাবনা, না আছে মানবিকতার বিশুদ্ধ চর্চা।
আজকের পত্রিকা: সাদি মহম্মদের ব্যাপারটি আলাদা। আর অবন্তিকাকে তো মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
রাশেদা রওনক খান: ভিন্ন তো বটেই। তবে সমাজের প্রতি, কাঠামোর প্রতি হতাশা দুটো ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অবন্তিকার ক্ষেত্রে হতাশার জায়গাটা হয়তো ভিন্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিপীড়নের শিকার সব নারী শিক্ষার্থী কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয় না। বলা যায় প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাবলিকলি অভিযোগ করে না। যে কয়েকজন জানায়, তারা কিন্তু তাদের জীবনের সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে—তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে যাবে, ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে, জীবনে কালিমা লেপন হতে পারে, ইমেজ-সংকট তৈরি হতে পারে, নানান পারিবারিক-সামাজিক চাপ আসতে পারে—এ রকম বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কিন্তু একটা মেয়ে আসে তার সমস্যার কথা বলার জন্য যে সে নিপীড়িত হচ্ছে। অবন্তিকা তাদের মধ্যে একজন।
যখন একজন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং নিজের পরিচয় নিয়ে সহপাঠীর বিরুদ্ধে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং বিচার চায়, তার মানে সে কিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করতে ব্যর্থ হয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন নিপীড়িত ছাত্রী ভাবে, তার বুঝি আর বেঁচে থাকার কোনো আশা বা উপায় নেই।
সেই আশাহতের জায়গা থেকেই হয়তো অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে। আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং একটি বড় ধরনের মানসিক সংকট তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আমরা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে—এমন শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণার কাজ করছি; যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, বিভাগে, আবাসিক হলে এবং বড় পরিসরে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে।
আজকের পত্রিকা: দেশের আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া একটা অপরাধ। যদিও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আপনি কী মনে করেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এই মুহূর্তে ঘটনাটি তদন্তাধীন আছে। দ্বিতীয়ত, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে। সেই ছয় দফার মধ্যে দুই নম্বর দাবিটি হচ্ছে, তার সহপাঠী আম্মান এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হয়তোবা পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পুরো বিষয়টা তো বিচারের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। আর যারা অভিযুক্ত, তাদেরও কোনো বক্তব্য থাকতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে অভিযুক্তদেরও কথা বলার অধিকার আছে। তাই বিচারকাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা কঠিন।
আজকের পত্রিকা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বা ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। এরপরও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যখন নিপীড়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়, অনেক ক্ষেত্রে নিপীড়ক বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক দ্বারা কিংবা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। এই যে বিচার-প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কিংবা বিচার না হওয়া—এগুলো হলো নতুন ঘটনা ঘটার পেছনে বড় কারণ। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যখন এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করে উদাহরণ সৃষ্টি করবে, তখন সেই ক্যাম্পাসে তো বটেই, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এর কার্যকর প্রভাব পড়বে; অর্থাৎ নিপীড়ক ভয় পাবে। কিন্তু যখন বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে, তখন পরপর অনেক ঘটনা ঘটতে পারে।
কারণ, বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নিপীড়ককে একধরনের নিপীড়ন করার সাহস ও সুযোগ দুটিই বাড়িয়ে দেয়। যেমন কেউ কেউ ধরেই নেন,তিনি তো বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন বা এসবের ঊর্ধ্বে। এ ধরনের ঘটনায় অন্য নিপীড়কেরা কিন্তু উৎসাহিত হবেন।ফলে যত দিন পর্যন্ত নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর তাঁর সঠিক বিচার করা না যায়, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। আর বিচারব্যবস্থায় আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি না করা গেলে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না, সমাজেও এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে, পড়ছে এবং আরও পড়বে।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে যথার্থ বিচার না হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রের কি কোনো ব্যর্থতা নেই?
রাশেদা রওনক খান: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই রাষ্ট্রের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো
কিছুই তো বিচ্ছিন্ন নয়। আমার বা আপনার ঘরে যা ঘটছে, তারও প্রভাব আছে রাষ্ট্রের। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো পুরোপুরি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রণাধীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হবে, সেই নিপীড়নের বিচার কেন হচ্ছে না, তা দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় রাষ্ট্র কর্তৃক এবং জনগণের টাকায়। এখানে যদি পাঁচ টাকাও খরচ করা হয়, সেটা জনগণের ট্যাক্স থেকে আসে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য থেকে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিপীড়নের বিচার ভালোভাবে হবে—স্বাভাবিকভাবে আমরা রাষ্ট্রের কাছে তা আশা করব।
আজকের পত্রিকা: বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তা গঠন করা হয়নি। আবার কোথাও এটা থাকলেও বাস্তবায়ন করা হয় না। না হওয়ার কারণটা কী?
রাশেদা রওনক খান: ২০০৯ সালে হাইকোর্ট কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল বা তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেল গঠিত হয়নি। প্রথমত, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশ দেওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এর মনিটরিং করার দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ রকম সেল গঠন করা হয়েছে কি না। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না এবং মানলেও কতটুকু মানা হচ্ছে বা কোন পরিমাণ মানা হচ্ছে, সেটা মনিটরিং করা দরকার ছিল। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল গঠন করা হলে রিসোর্স পারসন আছে কি না, অথবা কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু কমিটির লোকজন দলীয়ভাবে মদদপুষ্ট ও প্রভাবশালী নিপীড়কদের কাছের লোক—এ রকম হলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু শিক্ষার্থীরা যথার্থ বিচার পাবে না; অর্থাৎ যেভাবে নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল, সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেল গঠন করছে কি না, তা নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
আজকের পত্রিকা: এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আপনার পরামর্শ কী?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এটা বলা হয়ে থাকে যে যাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁকে দেখে-শুনে, বিচার-বিবেচনা করে নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের মধ্যে কতটা পশুত্ব আছে, সেটা ওই ব্যক্তিই জানেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা অভিযোগ আকারে না আসে। এই জায়গাটা চিহ্নিত করাটা একটু কঠিন। তারপরও আমি বলব, তাঁর অতীত ইতিহাস কেমন, ক্যাম্পাসে ছাত্র অবস্থায় তিনি কেমন ছিলেন সার্বিকভাবে, এগুলো শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনা করা দরকার। বিভিন্ন পেশায় দেখা যায়, চাকরিতে নিয়োগের পরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু করা যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবার ব্যাপার আছে। কারণ কিছুদিন আগে যিনি মাস্টার্স পাস করেছেন, তিনিই আগামীকাল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারেন এবং কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি শ্রেণিকক্ষে চলে যাচ্ছেন লেকচার দিতে। আগে এসবের প্রয়োজন না থাকলেও বর্তমানে উদ্ভূত নানা পরিস্থিতিতে ‘ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক’ কেমন হওয়া উচিত, এ ধরনের ধারণা দেওয়ার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে একজন নতুন শিক্ষকের কোনো প্রশিক্ষণ হলো না, তিনি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করবেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ কতটুকু থাকা প্রয়োজন, সম্পর্কের বাউন্ডারি কেমন হতে হবে—এ ব্যাপারগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, সমাজে সামগ্রিকভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। সেটা রোধ করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। পরিবার থেকে ছেলেসন্তানকে শেখানো উচিত, একজন নারীকে আসলে কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত, কার সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা উচিত—এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকে না শিখে এলে হঠাৎ করে একজন শিক্ষক যতই উচ্চ শিক্ষিত হোক না কেন, ছাত্র হিসেবে যত ভালোই হোক না কেন, তাকে পশুত্ব থেকে নিবারণ করা যাবে না। তাই বাবা-মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে কেবল লেখাপড়ার দিক দিয়ে নয়, একজন সৎ চরিত্রের অধিকারী এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
আজকের পত্রিকা: অবন্তিকার আত্মহত্যার নোট পড়ে মনে হয়েছে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?
রাশেদা রওনক খান: আসলে অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে সমাজ এবং সমাজের মানুষগুলো প্ররোচিত করেছে। কখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে? যখন তার আর কোনো অবলম্বন, কোনো আশা, শেষ আশ্রয়টুকু থাকে না, সবকিছু হারিয়ে একাকিত্বে ভোগে, তখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অবন্তিকার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি—সে যখন তার বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকে আশাহত হয়েছে, বন্ধু-সহপাঠীরা তার বিপদের সময় এগিয়ে আসেনি, আর তার বিভাগও তার পাশে দাঁড়ায়নি। প্রক্টর অফিসে আবেদন করেছিল বলে দাবি করা হয়; অর্থাৎ তার চারপাশে যেসব জায়গায় কথা বলা দরকার, সেটা করেও যখন কোনো সমাধান পায়নি, তখন কিন্তু একটা বদ্ধ ঘরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এর জন্য আসলে আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থা দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের চারপাশ দায়ী।
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার লক্ষ করা গেছে। তিনিও একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। সেই জায়গা থেকে বলব, আসলে এই সময়ের স্বার্থপর, ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা, তা দায়ী। আমরা, সমাজের মানুষ—সবাই ভান করছি একসঙ্গে থাকার। কিন্তু খুবই বিচ্ছিন্ন ও সংকীর্ণ গণ্ডিতে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। এখানে না আছে সামষ্টিকতার চিন্তাভাবনা, না আছে মানবিকতার বিশুদ্ধ চর্চা।
আজকের পত্রিকা: সাদি মহম্মদের ব্যাপারটি আলাদা। আর অবন্তিকাকে তো মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
রাশেদা রওনক খান: ভিন্ন তো বটেই। তবে সমাজের প্রতি, কাঠামোর প্রতি হতাশা দুটো ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অবন্তিকার ক্ষেত্রে হতাশার জায়গাটা হয়তো ভিন্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিপীড়নের শিকার সব নারী শিক্ষার্থী কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয় না। বলা যায় প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাবলিকলি অভিযোগ করে না। যে কয়েকজন জানায়, তারা কিন্তু তাদের জীবনের সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে—তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে যাবে, ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে, জীবনে কালিমা লেপন হতে পারে, ইমেজ-সংকট তৈরি হতে পারে, নানান পারিবারিক-সামাজিক চাপ আসতে পারে—এ রকম বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কিন্তু একটা মেয়ে আসে তার সমস্যার কথা বলার জন্য যে সে নিপীড়িত হচ্ছে। অবন্তিকা তাদের মধ্যে একজন।
যখন একজন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং নিজের পরিচয় নিয়ে সহপাঠীর বিরুদ্ধে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং বিচার চায়, তার মানে সে কিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করতে ব্যর্থ হয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন নিপীড়িত ছাত্রী ভাবে, তার বুঝি আর বেঁচে থাকার কোনো আশা বা উপায় নেই।
সেই আশাহতের জায়গা থেকেই হয়তো অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে। আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং একটি বড় ধরনের মানসিক সংকট তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আমরা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে—এমন শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণার কাজ করছি; যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, বিভাগে, আবাসিক হলে এবং বড় পরিসরে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে।
আজকের পত্রিকা: দেশের আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া একটা অপরাধ। যদিও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আপনি কী মনে করেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এই মুহূর্তে ঘটনাটি তদন্তাধীন আছে। দ্বিতীয়ত, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে। সেই ছয় দফার মধ্যে দুই নম্বর দাবিটি হচ্ছে, তার সহপাঠী আম্মান এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হয়তোবা পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পুরো বিষয়টা তো বিচারের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। আর যারা অভিযুক্ত, তাদেরও কোনো বক্তব্য থাকতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে অভিযুক্তদেরও কথা বলার অধিকার আছে। তাই বিচারকাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা কঠিন।
আজকের পত্রিকা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বা ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। এরপরও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যখন নিপীড়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়, অনেক ক্ষেত্রে নিপীড়ক বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক দ্বারা কিংবা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। এই যে বিচার-প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কিংবা বিচার না হওয়া—এগুলো হলো নতুন ঘটনা ঘটার পেছনে বড় কারণ। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যখন এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করে উদাহরণ সৃষ্টি করবে, তখন সেই ক্যাম্পাসে তো বটেই, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এর কার্যকর প্রভাব পড়বে; অর্থাৎ নিপীড়ক ভয় পাবে। কিন্তু যখন বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে, তখন পরপর অনেক ঘটনা ঘটতে পারে।
কারণ, বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নিপীড়ককে একধরনের নিপীড়ন করার সাহস ও সুযোগ দুটিই বাড়িয়ে দেয়। যেমন কেউ কেউ ধরেই নেন,তিনি তো বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন বা এসবের ঊর্ধ্বে। এ ধরনের ঘটনায় অন্য নিপীড়কেরা কিন্তু উৎসাহিত হবেন।ফলে যত দিন পর্যন্ত নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর তাঁর সঠিক বিচার করা না যায়, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। আর বিচারব্যবস্থায় আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি না করা গেলে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না, সমাজেও এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে, পড়ছে এবং আরও পড়বে।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে যথার্থ বিচার না হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রের কি কোনো ব্যর্থতা নেই?
রাশেদা রওনক খান: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই রাষ্ট্রের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো
কিছুই তো বিচ্ছিন্ন নয়। আমার বা আপনার ঘরে যা ঘটছে, তারও প্রভাব আছে রাষ্ট্রের। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো পুরোপুরি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রণাধীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হবে, সেই নিপীড়নের বিচার কেন হচ্ছে না, তা দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় রাষ্ট্র কর্তৃক এবং জনগণের টাকায়। এখানে যদি পাঁচ টাকাও খরচ করা হয়, সেটা জনগণের ট্যাক্স থেকে আসে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য থেকে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিপীড়নের বিচার ভালোভাবে হবে—স্বাভাবিকভাবে আমরা রাষ্ট্রের কাছে তা আশা করব।
আজকের পত্রিকা: বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তা গঠন করা হয়নি। আবার কোথাও এটা থাকলেও বাস্তবায়ন করা হয় না। না হওয়ার কারণটা কী?
রাশেদা রওনক খান: ২০০৯ সালে হাইকোর্ট কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল বা তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেল গঠিত হয়নি। প্রথমত, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশ দেওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এর মনিটরিং করার দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ রকম সেল গঠন করা হয়েছে কি না। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না এবং মানলেও কতটুকু মানা হচ্ছে বা কোন পরিমাণ মানা হচ্ছে, সেটা মনিটরিং করা দরকার ছিল। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল গঠন করা হলে রিসোর্স পারসন আছে কি না, অথবা কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু কমিটির লোকজন দলীয়ভাবে মদদপুষ্ট ও প্রভাবশালী নিপীড়কদের কাছের লোক—এ রকম হলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু শিক্ষার্থীরা যথার্থ বিচার পাবে না; অর্থাৎ যেভাবে নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল, সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেল গঠন করছে কি না, তা নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
আজকের পত্রিকা: এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আপনার পরামর্শ কী?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এটা বলা হয়ে থাকে যে যাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁকে দেখে-শুনে, বিচার-বিবেচনা করে নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের মধ্যে কতটা পশুত্ব আছে, সেটা ওই ব্যক্তিই জানেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা অভিযোগ আকারে না আসে। এই জায়গাটা চিহ্নিত করাটা একটু কঠিন। তারপরও আমি বলব, তাঁর অতীত ইতিহাস কেমন, ক্যাম্পাসে ছাত্র অবস্থায় তিনি কেমন ছিলেন সার্বিকভাবে, এগুলো শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনা করা দরকার। বিভিন্ন পেশায় দেখা যায়, চাকরিতে নিয়োগের পরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু করা যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবার ব্যাপার আছে। কারণ কিছুদিন আগে যিনি মাস্টার্স পাস করেছেন, তিনিই আগামীকাল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারেন এবং কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি শ্রেণিকক্ষে চলে যাচ্ছেন লেকচার দিতে। আগে এসবের প্রয়োজন না থাকলেও বর্তমানে উদ্ভূত নানা পরিস্থিতিতে ‘ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক’ কেমন হওয়া উচিত, এ ধরনের ধারণা দেওয়ার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে একজন নতুন শিক্ষকের কোনো প্রশিক্ষণ হলো না, তিনি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করবেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ কতটুকু থাকা প্রয়োজন, সম্পর্কের বাউন্ডারি কেমন হতে হবে—এ ব্যাপারগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, সমাজে সামগ্রিকভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। সেটা রোধ করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। পরিবার থেকে ছেলেসন্তানকে শেখানো উচিত, একজন নারীকে আসলে কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত, কার সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা উচিত—এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকে না শিখে এলে হঠাৎ করে একজন শিক্ষক যতই উচ্চ শিক্ষিত হোক না কেন, ছাত্র হিসেবে যত ভালোই হোক না কেন, তাকে পশুত্ব থেকে নিবারণ করা যাবে না। তাই বাবা-মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে কেবল লেখাপড়ার দিক দিয়ে নয়, একজন সৎ চরিত্রের অধিকারী এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
৬ ঘণ্টা আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
৯ ঘণ্টা আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে