অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
বিএনপিবিহীন নির্বাচনের যে চ্যালেঞ্জগুলো সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার এখন শেষ ধাপ চলছে। এই ধাপে তিনটি প্রধান সমস্যা দেখা দিয়েছে সরকারের সামনে।
এক. নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এবং হরতাল-অবরোধের ঘোষিত কর্মসূচিকে ভিত্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার যে নৃশংস ঘটনাবলি ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং ঘনীভূত হচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করা।
দুই. আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কার প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সঙ্গে ডামি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ বন্ধ করে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে জনমনে আস্থার সঞ্চার করা। তিন. নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বাড়ানো।
শেষ ধাপের এই চ্যালেঞ্জগুলো আগামী দিনের, অর্থাৎ নির্বাচনের পরবর্তী সময় নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে অসহযোগ আন্দোলন। অবশ্য ইতিমধ্যেই বিএনপি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকারকে অসহযোগিতা করার জন্য। যত দূর শোনা যায় তাতে ওই অসহযোগের কর্মসূচি হবে দীর্ঘমেয়াদি ও ধারাবাহিক। নতুন সরকার কতটা দক্ষতার সঙ্গে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবে, তার ওপর নির্ভর করবে চ্যালেঞ্জের মাত্রা এবং কর্মসূচির সাফল্য। সেই ভাবনা ভাবার জন্য আরও কিছু সময় সরকারের হাতে আছে। এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো শেষ ধাপের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা।
বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা ভালোভাবেই বহাল রয়েছে। হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিও চলছে। এর সঙ্গে গত বুধবার থেকে যুক্ত হয়েছে সরকারকে সহযোগিতা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান। এর আগে থেকেই অবশ্য নাশকতার ঘটনাবলি ঘটে চলেছে। সেই নাশকতা বাস-ট্রাক-গাড়িতে অগ্নিসংযোগ থেকে ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আমরা স্মরণ করতে পারি ২০১৪ সালের কথা। নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য সে বছর সব ধরনের যানবাহনে আগুন লাগিয়ে অনেক মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করা যায়নি। তাহলে বিএনপি কেন ভাবছে যে এবার সেই একই কায়দায় তারা সফল হতে পারবে?
ভাবতে পারে একটি কারণে। তা হলো, আন্দোলনের নানারূপ কর্মসূচি দিয়ে তারা সরকারকে চাপে রাখবে। তাতে সরকারের দক্ষতা ও কাজের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হবে। নির্বাচনও দেশে-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ এবং অগ্রহণযোগ্য হবে।
ক্রমান্বয়ে আন্দোলন জোরদার হবে এবং নাশকতা বাড়ানো হবে। এর পরিণতি হবে একটি স্বল্পকালীন সরকার। সরকার বাধ্য হবে তাদের দাবি অনুযায়ী নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে। বিদেশি বন্ধুরা তখন তাদের আরও বেশি সহায়ক হবেন। তাদের এই কৌশলের বিপরীতে সরকার কী কৌশল অবলম্বন করে এবং সেই কৌশল কতটা কার্যকর হয় তার ওপর নির্ভর করবে জয়-পরাজয় বা সাফল্য-ব্যর্থতা। যদিও সরকারের কৌশলের একটি অংশ হচ্ছে, বিএনপি এবং তার সমমনাদের সন্ত্রাসী চরিত্র দেশে-বিদেশে প্রকটভাবে উন্মোচন করে দেওয়া।
তথাপি সরকার যদি আগুনসন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে নির্বাচনের আগেই দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
আওয়ামী লীগের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কার প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সঙ্গে ডামি প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সংঘাত। ইতিমধ্যে ছোট-বড় অনেক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। একটি প্রাণও গেছে। প্রতিদিনই এ ধরনের সংঘাতের পরিসর বাড়ছে। ফলে শুধু যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে সন্দেহ বাড়ছে তা-ই নয়, নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগের মধ্যে এর দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব বজায় থাকতে পারে। উপদলীয় কোন্দল বাড়তে পারে। তাই দলের স্বার্থে যেমন, তেমনি একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে জনমনে আস্থার সঞ্চার করার জন্যও এই সংঘর্ষ বন্ধ করার কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বিষয়টিও উল্লেখ করা প্রয়োজন। এ কথা কেউ অস্বীকার করবে না যে ১৪-দলীয় জোটের কোনো প্রার্থীই আওয়ামী লীগের একান্ত আনুকূল্য ছাড়া নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে পারবেন। তাঁদের দলীয় প্রতীক দিয়ে, তাঁদের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না দিয়ে সহযোগিতা করতে হয় আওয়ামী লীগকে। আবার এ কথাও স্বীকার করতে হবে যে তাঁরা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক মিত্র। তাঁদের দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের এই শরিকদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিও অন্য অনেকের তুলনায় স্বচ্ছ।
এই শরিকেরাও কিন্তু এবারের আসন বণ্টনে খুশি নয়; বরং বিরক্তই বলা যায়। কারণ প্রথমত, আসন বণ্টন-প্রক্রিয়ায় তাঁদের অনেক দিন একটা অনিশ্চিত অবস্থায় অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে, যা না করলে আওয়ামী লীগের খুব একটা ক্ষতি কিছু হতো বলে মনে হয় না। তারপরও এটা করা হয়েছে, কারণ ওই শরিকদের বুঝিয়ে দেওয়া যে আওয়ামী লীগ যেভাবে চাইবে, সেভাবেই তাঁদের মানিয়ে নিতে হবে।
ভবিষ্যতে এই শরিকেরা যদি কোনো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভিন্ন রকম কোনো অবস্থান গ্রহণ করে তাতে বিস্ময়ের কিছু থাকবে না।
সরকারের জন্য শেষ ধাপের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বাড়ানো নিশ্চিত করা। একমাত্র এ বিষয়টি মাথায় রেখে এবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র হিসেবে দলের নেতাদের মধ্য থেকে ডামি প্রার্থীর বিষয়টি অনুমোদন করেছে। কারণ অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের পর নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে, তাহলে সেই নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য বলার সুযোগ কারও থাকবে না।
কৌশল হিসেবে বিষয়টি কার্যকর হতে পারত। এখনো হয়তো হবে। কিন্তু একটা সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে গেছে। কারণ দলের যে নেতাদের ওপর নির্ভর করে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে, নির্বাচনী ময়দানে অবতীর্ণ হয়েই তাঁরা শুরু করে দিয়েছেন নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ। কোনো কোনো ডামি প্রার্থী আবার ভোটারদের কাছে দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের, নেতৃত্বের সমালোচনাও করছেন। তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অন্তত একজন সংসদ সদস্যকে (যিনি এবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নন) সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটি বহিষ্কারও করেছে; অর্থাৎ দলের মধ্যে একটা ভাঙচুর হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে।
অথচ তাঁদের কাছে দলের প্রত্যাশা ছিল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর কাজে মনোনিবেশ করা। কিন্তু তাঁরা তা না করায় এখন এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো তো দূরের কথা, আদৌ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকেও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এখন আবার তাঁদের উদ্যোগ নিতে হচ্ছে, এই ভাঙচুর ঠেকিয়ে দলকে এককাট্টা রাখা। এ কাজে সাফল্যের ওপর আওয়ামী লীগের আগামী দিনের অনেক কিছু নির্ভর করছে।
বিএনপিবিহীন নির্বাচনের যে চ্যালেঞ্জগুলো সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তার এখন শেষ ধাপ চলছে। এই ধাপে তিনটি প্রধান সমস্যা দেখা দিয়েছে সরকারের সামনে।
এক. নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এবং হরতাল-অবরোধের ঘোষিত কর্মসূচিকে ভিত্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার যে নৃশংস ঘটনাবলি ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং ঘনীভূত হচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করা।
দুই. আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কার প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সঙ্গে ডামি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ বন্ধ করে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে জনমনে আস্থার সঞ্চার করা। তিন. নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বাড়ানো।
শেষ ধাপের এই চ্যালেঞ্জগুলো আগামী দিনের, অর্থাৎ নির্বাচনের পরবর্তী সময় নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে অসহযোগ আন্দোলন। অবশ্য ইতিমধ্যেই বিএনপি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকারকে অসহযোগিতা করার জন্য। যত দূর শোনা যায় তাতে ওই অসহযোগের কর্মসূচি হবে দীর্ঘমেয়াদি ও ধারাবাহিক। নতুন সরকার কতটা দক্ষতার সঙ্গে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবে, তার ওপর নির্ভর করবে চ্যালেঞ্জের মাত্রা এবং কর্মসূচির সাফল্য। সেই ভাবনা ভাবার জন্য আরও কিছু সময় সরকারের হাতে আছে। এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো শেষ ধাপের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা।
বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা ভালোভাবেই বহাল রয়েছে। হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিও চলছে। এর সঙ্গে গত বুধবার থেকে যুক্ত হয়েছে সরকারকে সহযোগিতা না করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান। এর আগে থেকেই অবশ্য নাশকতার ঘটনাবলি ঘটে চলেছে। সেই নাশকতা বাস-ট্রাক-গাড়িতে অগ্নিসংযোগ থেকে ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আমরা স্মরণ করতে পারি ২০১৪ সালের কথা। নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য সে বছর সব ধরনের যানবাহনে আগুন লাগিয়ে অনেক মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করা যায়নি। তাহলে বিএনপি কেন ভাবছে যে এবার সেই একই কায়দায় তারা সফল হতে পারবে?
ভাবতে পারে একটি কারণে। তা হলো, আন্দোলনের নানারূপ কর্মসূচি দিয়ে তারা সরকারকে চাপে রাখবে। তাতে সরকারের দক্ষতা ও কাজের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হবে। নির্বাচনও দেশে-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ এবং অগ্রহণযোগ্য হবে।
ক্রমান্বয়ে আন্দোলন জোরদার হবে এবং নাশকতা বাড়ানো হবে। এর পরিণতি হবে একটি স্বল্পকালীন সরকার। সরকার বাধ্য হবে তাদের দাবি অনুযায়ী নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে। বিদেশি বন্ধুরা তখন তাদের আরও বেশি সহায়ক হবেন। তাদের এই কৌশলের বিপরীতে সরকার কী কৌশল অবলম্বন করে এবং সেই কৌশল কতটা কার্যকর হয় তার ওপর নির্ভর করবে জয়-পরাজয় বা সাফল্য-ব্যর্থতা। যদিও সরকারের কৌশলের একটি অংশ হচ্ছে, বিএনপি এবং তার সমমনাদের সন্ত্রাসী চরিত্র দেশে-বিদেশে প্রকটভাবে উন্মোচন করে দেওয়া।
তথাপি সরকার যদি আগুনসন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে নির্বাচনের আগেই দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
আওয়ামী লীগের জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কার প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সঙ্গে ডামি প্রার্থীদের সমর্থকগোষ্ঠীর সংঘাত। ইতিমধ্যে ছোট-বড় অনেক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। একটি প্রাণও গেছে। প্রতিদিনই এ ধরনের সংঘাতের পরিসর বাড়ছে। ফলে শুধু যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে সন্দেহ বাড়ছে তা-ই নয়, নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগের মধ্যে এর দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব বজায় থাকতে পারে। উপদলীয় কোন্দল বাড়তে পারে। তাই দলের স্বার্থে যেমন, তেমনি একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে জনমনে আস্থার সঞ্চার করার জন্যও এই সংঘর্ষ বন্ধ করার কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের বিষয়টিও উল্লেখ করা প্রয়োজন। এ কথা কেউ অস্বীকার করবে না যে ১৪-দলীয় জোটের কোনো প্রার্থীই আওয়ামী লীগের একান্ত আনুকূল্য ছাড়া নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে পারবেন। তাঁদের দলীয় প্রতীক দিয়ে, তাঁদের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না দিয়ে সহযোগিতা করতে হয় আওয়ামী লীগকে। আবার এ কথাও স্বীকার করতে হবে যে তাঁরা আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক মিত্র। তাঁদের দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের এই শরিকদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিও অন্য অনেকের তুলনায় স্বচ্ছ।
এই শরিকেরাও কিন্তু এবারের আসন বণ্টনে খুশি নয়; বরং বিরক্তই বলা যায়। কারণ প্রথমত, আসন বণ্টন-প্রক্রিয়ায় তাঁদের অনেক দিন একটা অনিশ্চিত অবস্থায় অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে, যা না করলে আওয়ামী লীগের খুব একটা ক্ষতি কিছু হতো বলে মনে হয় না। তারপরও এটা করা হয়েছে, কারণ ওই শরিকদের বুঝিয়ে দেওয়া যে আওয়ামী লীগ যেভাবে চাইবে, সেভাবেই তাঁদের মানিয়ে নিতে হবে।
ভবিষ্যতে এই শরিকেরা যদি কোনো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভিন্ন রকম কোনো অবস্থান গ্রহণ করে তাতে বিস্ময়ের কিছু থাকবে না।
সরকারের জন্য শেষ ধাপের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ হলো, নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বাড়ানো নিশ্চিত করা। একমাত্র এ বিষয়টি মাথায় রেখে এবার আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র হিসেবে দলের নেতাদের মধ্য থেকে ডামি প্রার্থীর বিষয়টি অনুমোদন করেছে। কারণ অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের পর নির্বাচনে যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে, তাহলে সেই নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য বলার সুযোগ কারও থাকবে না।
কৌশল হিসেবে বিষয়টি কার্যকর হতে পারত। এখনো হয়তো হবে। কিন্তু একটা সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে গেছে। কারণ দলের যে নেতাদের ওপর নির্ভর করে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে, নির্বাচনী ময়দানে অবতীর্ণ হয়েই তাঁরা শুরু করে দিয়েছেন নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ। কোনো কোনো ডামি প্রার্থী আবার ভোটারদের কাছে দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের, নেতৃত্বের সমালোচনাও করছেন। তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অন্তত একজন সংসদ সদস্যকে (যিনি এবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নন) সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটি বহিষ্কারও করেছে; অর্থাৎ দলের মধ্যে একটা ভাঙচুর হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে।
অথচ তাঁদের কাছে দলের প্রত্যাশা ছিল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর কাজে মনোনিবেশ করা। কিন্তু তাঁরা তা না করায় এখন এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো তো দূরের কথা, আদৌ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকেও দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এখন আবার তাঁদের উদ্যোগ নিতে হচ্ছে, এই ভাঙচুর ঠেকিয়ে দলকে এককাট্টা রাখা। এ কাজে সাফল্যের ওপর আওয়ামী লীগের আগামী দিনের অনেক কিছু নির্ভর করছে।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
২ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
২ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৬ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে