টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৭
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৬

নেত্রকোনায় করোনার টিকা নিতে স্কুল- কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী টিকা নিতে আসায় এবং টিকাকেন্দ্রে অব্যবস্থাপনা থাকায় শিক্ষার্থীরা এই ভোগান্তির শিকার হয়। অনেক কিশোর টিকা না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নাগাদ শহরের নাগড়া এলাকায় জেলা পরিষদ কার্যালয়ের টিকাকেন্দ্রে এই অবস্থা দেখা যায়।

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ১২ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা শহরের নাগড়া এলাকায় জেলা পরিষদ কেন্দ্রে দেওয়া হয়। সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হয়। সপ্তাহব্যাপী এই টিকাদান শুরু হয় গত শনিবার। সকালে ওই টিকাদান কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। তখন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের শামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা হইহুল্লোর শুরু করে। হইহুল্লোর করার সময় ধাক্কায় চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিয়াসহ অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে টিকা না নিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এ সময় তাদের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ করা গেছে।

টিকা নিতে এসে না পেয়ে সুরাইয়া ইসলাম রিতু নামে এক শিক্ষার্থী গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জানায়, ‘জেলা পরিষদ কেন্দ্রে টিকা নিতে খুবই বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। খুবই বিশৃঙ্খল অবস্থা। ঠেলাধাক্কায় নিচে পড়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছি। টিকা না পেয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

বড়িইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানায়, ‘স্বেচ্ছাসেবী সদস্যরা অনেকক্ষণ ধরে প্রথমে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখেন। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে তারা টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগে যায়। চার ঘণ্টা লাইনে থেকেও আমরা ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না।

জেলা সদরের নন্দীপুর সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সেকান্দার মিয়া বলেন, ‘টিকা কেন্দ্রে টিকাদানকারী নার্স কম থাকায় ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা দক্ষ না হওয়ায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্কুল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ অপেক্ষার পর অনেককে টিকা না পেয়েই ফেরত যেতে হয়েছে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা পরিষদের বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সৈয়দ মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, মেয়ে টিকার নিতে ভেতরে গেছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো মেয়ে ফেরেনি। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে ভেতরেও যেতে পারছি না।

এ ব্যপারে জেলা সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিয়া বলেন, জেলা পরিষদ টিকাকেন্দ্রে লক্ষ্মীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, নন্দীপুর সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়, কৃষ্ণগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়, উন্মেষ উচ্চ বিদ্যালয়সহ সদরের ৬টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গতকাল বৃহস্পতিবার টিকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর বাইরেও অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চলে আসায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে জেলা পরিষদ টিকাকেন্দ্রে গিয়েছিলাম। পরে পুলিশ ও আনসার ডেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগকে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে টিকা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও টিকা নিতে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরেও অনেক শিক্ষার্থী আসে। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত