মফস্বলের কলেজ হিসেবে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজকে এমন দৃষ্টিনন্দন করার ভাবনা মাথায় এল কীভাবে?
আমি এই কলেজে ১৯৮৯ সাল থেকে শিক্ষকতা করছি। দীর্ঘদিন শিক্ষকতার ফলে একটি বিষয় নজরে আসে, সেটি হলো, আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ায় একটা অনীহা রয়েছে। কলেজে এলেও তারা ঠিকমতো ক্লাস করতে চায় না। সেখান থেকেই তাদের ক্যাম্পাসমুখী করার একটা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানে শিক্ষার্থীরা কলেজে ক্লাস করবে, বাসায় যাবে, পরীক্ষায় পাস করে চলে যাবে; এমনটি নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। সেখানে তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অবাধ বিচরণ থাকবে। ক্যাম্পাস হবে শিক্ষাবান্ধব। শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার পাশাপাশি লাইব্রেরিতে বই পড়বে, সবুজ ঘাসে বসে গ্রুপ স্টাডি করবে, ক্যানটিনে বন্ধুদের সঙ্গে শিক্ষণীয় গল্প করে সময় পার করবে। তা ছাড়া, ক্যাম্পাসটিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান শোনে। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন মনীষীদের উক্তি লেখা রয়েছে। এতে তাদের দেশপ্রেম ও মানসিক বিকাশ ঘটে। আমি প্রায় সাত বছর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছি। এই পুরো সময়ে ক্যাম্পাসকে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানোর চেষ্টা করেছি। বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, পৌর মেয়র জুয়েল, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সবাই কলেজটি সুন্দর করতে সহযোগিতা করেছেন। ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে প্রতিষ্ঠানটিকে ডিজিটাল ক্যাম্পাস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পুরো ক্যাম্পাস ফুলে ফুলে ছেয়ে রয়েছে!
আমি ছাত্রজীবন থেকেই একজন ফুলপ্রেমী মানুষ। কলেজ ক্যাম্পাসকে দৃষ্টিনন্দন করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটানো, তাদের শিক্ষার পরিবেশ দেওয়া; এসব চিন্তাধারা থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক ফুলের চারা রোপণের পরিকল্পনা করি। চারাগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করি। কোথায়ও কোনো ফুল ভালো লাগলে তা সংগ্রহ করি। এ ছাড়া সারা দেশে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। তাঁরা উপহার হিসেবে আমাকে ফুলের চারা দিয়ে থাকেন। ক্যাম্পাসে অনেক বিরল প্রজাতির গাছ রয়েছে, যা চাঁদপুরের আর কোথাও দেখা যায় না। মাঝে মাঝে শখ থেকে আমিও পরিচর্যার কাজে নেমে যাই। আমাকে দেখে দায়িত্বে থাকা লোকজন কাজ করতে উৎসাহ পান। তা ছাড়া, বাগানে কাজ করলে মানসিক তৃপ্তি পাওয়ার পাশাপাশি শরীরও ভালো থাকে। ক্যাম্পাসে ফুলগুলো ভালো রাখতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী—সবাই সহযোগিতা করেন।
আপনার প্রতিষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এসেছিলেন…
এরই মধ্যে সারা দেশে এটি একটি আলোচিত কলেজ। এখানে শ্রীলঙ্কার শিক্ষা উপমন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দুজন পরিচালক ড. গোলাম ফারুক ও অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান এবং ভারতীয় হাইকমিশনারের কালচারাল ডিরেক্টর কলেজটি দেখে গেছেন। কয়েক দিন আগে লন্ডনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক কলেজটি ঘুরে গেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রথিতযশা ব্যক্তি কলেজটি দেখতে এসেছেন। শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হওয়ার কারণে গুণীজনেরা কলেজটি পরিদর্শনে আসেন। বিদেশের শিক্ষার পরিবেশের মতো এখানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ক্যাম্পাস নিয়ে কলেজের ভূমিকা কেমন?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিশন ২০৪১ ঘোষণা করেছেন। সেখানে আমাদের যেতেই হবে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি ও ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু কলেজের ১০ জনের একটি দলকে রোবোটিকসের ওপর ট্রেনিং দিয়েছেন। এই দল উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখন তারা জাতীয় পর্যায়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান মেলায় দলটি পঞ্চম হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ক্যাম্পাস, ২০৪১ সালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেমন হওয়া উচিত, কী রকম স্মার্ট হবে; তারই একটি মডেল তৈরি করেছে রোবোটিকস দলটি। তাদের দলে আরও কিছু শিক্ষার্থীকে যুক্ত করেছি। কারণ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষার্থীদেরও স্মার্টভাবে তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট হতে হবে। আমরা এই লক্ষ্য পূরণে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছি।
শিক্ষার মানোন্নয়নে কোন ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন?
আমি দীর্ঘদিন কলেজে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত বলে শিক্ষার মান নিয়ে ঘাটতি বা সমস্যাগুলো খুঁজে বের করি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সহকর্মীদের সঙ্গে বসেছি। তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কিছু কৌশল অবলম্বন করেছি। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, আমাদের কৌশলগুলো কাজে লেগেছে। ৩০ শিক্ষার্থীর দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি একজন শিক্ষককে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করে থাকেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া এবং অভিভাবক সমাবেশ করার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নিতে পেরেছি। পড়াশোনার পাশাপাশি কলেজের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ‘যুক্তির আলোয়’ নামে বিতর্ক ক্লাব ও ‘মুক্তির আলোয়’ নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে আমাদের। এ ছাড়া রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট, বিএনসিসি—এসব সহশিক্ষা ক্লাবগুলো সক্রিয় আছে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে দায়িত্বে আসার পর কলেজের উল্লেখযোগ্য কী কী পরিবর্তন করেছেন?
আমি প্রায় ৭ বছর কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে আছি। এককভাবে নয়, টিমওয়ার্ক করি আমরা। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, গভর্নিং বডির সদস্য এবং শিক্ষকেরা মিলেমিশে কলেজের উন্নয়নে কাজ করি। আমার ওপর তাঁদের আস্থা আছে। এই আস্থাটা নিয়েই আমি কাজ করি। একসময় কলেজের তেমন সম্পদ ছিল না। প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে এখন। ক্যাম্পাসে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, বঙ্গমাতা ম্যুরাল ও ৭ মার্চ চত্বর তৈরি করেছি। আইডিজি প্রকল্পের কাজ এবং কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (সিইডিপি) আওতায় ৪ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। আমাদের ৩৬টি ক্লাসে এসি রয়েছে। স্মার্ট বোর্ড ও স্মার্ট ক্লাসরুম রয়েছে। ৩৬টি ল্যাপটপ দিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, যাতে শিক্ষকেরা স্মার্ট বোর্ডে ক্লাস নিতে পারেন। দুটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। ক্যাম্পাসে একটি ক্যানটিন রয়েছে। লাইব্রেরি ও সেমিনারে পর্যাপ্ত বই রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে। সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেম এবং ওয়াই-ফাই রয়েছে। কলেজে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ভবন’ নামে ১০ তলা ভবনের কাজ চলমান। বর্তমানে ৭ তলার প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আশা করি, বাকি ৪০ শতাংশ কাজ আগামী ছয় মাসে হয়ে যাবে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছেন।
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?
শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশে যেতেই হবে, এর বিকল্প নেই। আমরা স্বাধীনতার পর ৫২ বছর পেরিয়ে এসেছি। আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ও দেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সেখানে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে চাই।
রতন কুমার মজুমদার অধ্যক্ষ, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ
মফস্বলের কলেজ হিসেবে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজকে এমন দৃষ্টিনন্দন করার ভাবনা মাথায় এল কীভাবে?
আমি এই কলেজে ১৯৮৯ সাল থেকে শিক্ষকতা করছি। দীর্ঘদিন শিক্ষকতার ফলে একটি বিষয় নজরে আসে, সেটি হলো, আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ায় একটা অনীহা রয়েছে। কলেজে এলেও তারা ঠিকমতো ক্লাস করতে চায় না। সেখান থেকেই তাদের ক্যাম্পাসমুখী করার একটা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানে শিক্ষার্থীরা কলেজে ক্লাস করবে, বাসায় যাবে, পরীক্ষায় পাস করে চলে যাবে; এমনটি নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। সেখানে তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অবাধ বিচরণ থাকবে। ক্যাম্পাস হবে শিক্ষাবান্ধব। শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার পাশাপাশি লাইব্রেরিতে বই পড়বে, সবুজ ঘাসে বসে গ্রুপ স্টাডি করবে, ক্যানটিনে বন্ধুদের সঙ্গে শিক্ষণীয় গল্প করে সময় পার করবে। তা ছাড়া, ক্যাম্পাসটিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান শোনে। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন মনীষীদের উক্তি লেখা রয়েছে। এতে তাদের দেশপ্রেম ও মানসিক বিকাশ ঘটে। আমি প্রায় সাত বছর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছি। এই পুরো সময়ে ক্যাম্পাসকে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানোর চেষ্টা করেছি। বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, পৌর মেয়র জুয়েল, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সবাই কলেজটি সুন্দর করতে সহযোগিতা করেছেন। ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে প্রতিষ্ঠানটিকে ডিজিটাল ক্যাম্পাস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পুরো ক্যাম্পাস ফুলে ফুলে ছেয়ে রয়েছে!
আমি ছাত্রজীবন থেকেই একজন ফুলপ্রেমী মানুষ। কলেজ ক্যাম্পাসকে দৃষ্টিনন্দন করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ঘটানো, তাদের শিক্ষার পরিবেশ দেওয়া; এসব চিন্তাধারা থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক ফুলের চারা রোপণের পরিকল্পনা করি। চারাগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করি। কোথায়ও কোনো ফুল ভালো লাগলে তা সংগ্রহ করি। এ ছাড়া সারা দেশে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। তাঁরা উপহার হিসেবে আমাকে ফুলের চারা দিয়ে থাকেন। ক্যাম্পাসে অনেক বিরল প্রজাতির গাছ রয়েছে, যা চাঁদপুরের আর কোথাও দেখা যায় না। মাঝে মাঝে শখ থেকে আমিও পরিচর্যার কাজে নেমে যাই। আমাকে দেখে দায়িত্বে থাকা লোকজন কাজ করতে উৎসাহ পান। তা ছাড়া, বাগানে কাজ করলে মানসিক তৃপ্তি পাওয়ার পাশাপাশি শরীরও ভালো থাকে। ক্যাম্পাসে ফুলগুলো ভালো রাখতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী—সবাই সহযোগিতা করেন।
আপনার প্রতিষ্ঠানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এসেছিলেন…
এরই মধ্যে সারা দেশে এটি একটি আলোচিত কলেজ। এখানে শ্রীলঙ্কার শিক্ষা উপমন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দুজন পরিচালক ড. গোলাম ফারুক ও অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান এবং ভারতীয় হাইকমিশনারের কালচারাল ডিরেক্টর কলেজটি দেখে গেছেন। কয়েক দিন আগে লন্ডনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক কলেজটি ঘুরে গেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রথিতযশা ব্যক্তি কলেজটি দেখতে এসেছেন। শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হওয়ার কারণে গুণীজনেরা কলেজটি পরিদর্শনে আসেন। বিদেশের শিক্ষার পরিবেশের মতো এখানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ক্যাম্পাস নিয়ে কলেজের ভূমিকা কেমন?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিশন ২০৪১ ঘোষণা করেছেন। সেখানে আমাদের যেতেই হবে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি ও ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু কলেজের ১০ জনের একটি দলকে রোবোটিকসের ওপর ট্রেনিং দিয়েছেন। এই দল উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখন তারা জাতীয় পর্যায়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান মেলায় দলটি পঞ্চম হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট ক্যাম্পাস, ২০৪১ সালের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেমন হওয়া উচিত, কী রকম স্মার্ট হবে; তারই একটি মডেল তৈরি করেছে রোবোটিকস দলটি। তাদের দলে আরও কিছু শিক্ষার্থীকে যুক্ত করেছি। কারণ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষার্থীদেরও স্মার্টভাবে তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানকে স্মার্ট হতে হবে। আমরা এই লক্ষ্য পূরণে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছি।
শিক্ষার মানোন্নয়নে কোন ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন?
আমি দীর্ঘদিন কলেজে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত বলে শিক্ষার মান নিয়ে ঘাটতি বা সমস্যাগুলো খুঁজে বের করি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সহকর্মীদের সঙ্গে বসেছি। তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কিছু কৌশল অবলম্বন করেছি। পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, আমাদের কৌশলগুলো কাজে লেগেছে। ৩০ শিক্ষার্থীর দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি একজন শিক্ষককে। তাঁরা শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করে থাকেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া এবং অভিভাবক সমাবেশ করার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নিতে পেরেছি। পড়াশোনার পাশাপাশি কলেজের সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোতে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ‘যুক্তির আলোয়’ নামে বিতর্ক ক্লাব ও ‘মুক্তির আলোয়’ নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে আমাদের। এ ছাড়া রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট, বিএনসিসি—এসব সহশিক্ষা ক্লাবগুলো সক্রিয় আছে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে দায়িত্বে আসার পর কলেজের উল্লেখযোগ্য কী কী পরিবর্তন করেছেন?
আমি প্রায় ৭ বছর কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে আছি। এককভাবে নয়, টিমওয়ার্ক করি আমরা। সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, গভর্নিং বডির সদস্য এবং শিক্ষকেরা মিলেমিশে কলেজের উন্নয়নে কাজ করি। আমার ওপর তাঁদের আস্থা আছে। এই আস্থাটা নিয়েই আমি কাজ করি। একসময় কলেজের তেমন সম্পদ ছিল না। প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে এখন। ক্যাম্পাসে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, বঙ্গমাতা ম্যুরাল ও ৭ মার্চ চত্বর তৈরি করেছি। আইডিজি প্রকল্পের কাজ এবং কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (সিইডিপি) আওতায় ৪ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। আমাদের ৩৬টি ক্লাসে এসি রয়েছে। স্মার্ট বোর্ড ও স্মার্ট ক্লাসরুম রয়েছে। ৩৬টি ল্যাপটপ দিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি, যাতে শিক্ষকেরা স্মার্ট বোর্ডে ক্লাস নিতে পারেন। দুটি কম্পিউটার ল্যাব রয়েছে। ক্যাম্পাসে একটি ক্যানটিন রয়েছে। লাইব্রেরি ও সেমিনারে পর্যাপ্ত বই রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে। সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেম এবং ওয়াই-ফাই রয়েছে। কলেজে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ভবন’ নামে ১০ তলা ভবনের কাজ চলমান। বর্তমানে ৭ তলার প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আশা করি, বাকি ৪০ শতাংশ কাজ আগামী ছয় মাসে হয়ে যাবে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছেন।
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?
শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশে যেতেই হবে, এর বিকল্প নেই। আমরা স্বাধীনতার পর ৫২ বছর পেরিয়ে এসেছি। আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ও দেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। সেখানে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেতে চাই।
রতন কুমার মজুমদার অধ্যক্ষ, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৯ তম সম্মেলনে (কপ ২৯) অংশগ্রহণ করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। বৈশ্বিক তাপমাত্রা
৪ ঘণ্টা আগেখুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি ও বিআর্ক কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
৭ ঘণ্টা আগেইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) ফল-২০২৪-এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। ১৫ নভেম্বর ইউআইইউ খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগেচীনের জিয়াংসু ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেনশি য়াল স্কলারশিপ ২০২৫-২৬-এর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১৬ ঘণ্টা আগে