আরিফ ইশতিয়াক রাহুল
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। আমার সারা জীবনের প্রাপ্তির খাতায় সবচেয়ে বড় সবেধন নীলমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে আরো একটি বছর অতিক্রম করলো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি।
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র তিনটি অনুষদ ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী ও তিনটি আবাসিক হল নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল দেশের সবচেয়ে পুরোনো এই বিশ্ববিদ্যালয়। শতবর্ষের পথপরিক্রমায় একদিকে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার, অন্যদিকে জন্ম দিয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকেই জন্ম হয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধারণার। ঢাবি থেকেই সংগঠিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন, শাসনতন্ত্র আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাষ্ট্রের এতগুলো বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছে বলে আমার জানা নেই। সেদিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, একটি জাতিরাষ্ট্রের কারিগর, জন্মযুদ্ধের অংশীদার এবং ইতিহাসের একটি পরিপূর্ণ অধ্যায়ও বটে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের আলোচনায় এই প্রসঙ্গগুলো যেমন আসে, তেমনি কিছু সংকট দূরীকরণ সম্ভব হলে আর পূর্ণতা পেত এই প্রাঙ্গণ। এই যেমন শতবর্ষ পেরোলেও শিক্ষার্থীদের জন্য পরিপূর্ণ আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত সম্ভব হয়নি, তেমনি পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত সিট, ক্যান্টিনে মানসম্পন্ন খাবার, এমনকি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তারও সংকট রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি কথা প্রচলিত আছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেসব কাজ সবচেয়ে কম জনপ্রিয়, তার মধ্যে একটি হলো গবেষণা। দেখা গেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে যতটা আগ্রহী থাকেন, গবেষণায় ঠিক ততটাই অনাগ্রহী। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে তাদের মোট বাজেটের যথাক্রমে ২৬, ২৭ ও ৩১ শতাংশ গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ দেয় তার বাজেটের মাত্র ২ শতাংশ। যদিও এই ২ শতাংশ বরাদ্দও মাঝে মাঝে গবেষণার কাজে শেষ করতে পারেন না গবেষকেরা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় সাফল্যের জন্য যতটা না পত্রিকার শিরোনাম হয়, তার চেয়ে বেশি শিরোনাম হয় গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির কারণে। এ কারণে প্রতিষ্ঠার ১০৪তম বছরে এসেও আমাদের প্রধান গৌরব হলো কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৪তম স্থান অর্জন। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে ৫০০-এর মধ্যে অবস্থান করছে। হয়তো বা এ কারণেই এত পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়তে আসেন না।
এত না থাকা, না পাওয়া ও হতাশার মধ্যেও যে কথাটি সবচেয়ে বেশি সত্য, তা হলো এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন যেমন আমাদের অর্জন, তেমনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতাগুলোও আমাদের সীমাবদ্ধতা। বিগত ১০৩ বছরের পথপরিক্রমায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে পথ পাড়ি দিয়েছে, আগামী ১০০ বছর হোক তার চেয়ে আরও বেশি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শিক্ষার্থীবান্ধব। রাজনৈতিক গৌরবের ভারে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার জৌলুস ফিরে পাক গৌরব পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিকারের প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হয়ে উঠুক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক।
আরিফ ইশতিয়াক রাহুল
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। আমার সারা জীবনের প্রাপ্তির খাতায় সবচেয়ে বড় সবেধন নীলমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে আরো একটি বছর অতিক্রম করলো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি।
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র তিনটি অনুষদ ১২টি বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী ও তিনটি আবাসিক হল নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল দেশের সবচেয়ে পুরোনো এই বিশ্ববিদ্যালয়। শতবর্ষের পথপরিক্রমায় একদিকে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার, অন্যদিকে জন্ম দিয়েছে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকেই জন্ম হয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ধারণার। ঢাবি থেকেই সংগঠিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন, শাসনতন্ত্র আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ। পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাষ্ট্রের এতগুলো বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছে বলে আমার জানা নেই। সেদিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, একটি জাতিরাষ্ট্রের কারিগর, জন্মযুদ্ধের অংশীদার এবং ইতিহাসের একটি পরিপূর্ণ অধ্যায়ও বটে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবের আলোচনায় এই প্রসঙ্গগুলো যেমন আসে, তেমনি কিছু সংকট দূরীকরণ সম্ভব হলে আর পূর্ণতা পেত এই প্রাঙ্গণ। এই যেমন শতবর্ষ পেরোলেও শিক্ষার্থীদের জন্য পরিপূর্ণ আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত সম্ভব হয়নি, তেমনি পর্যাপ্ত ক্লাসরুম, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত সিট, ক্যান্টিনে মানসম্পন্ন খাবার, এমনকি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তারও সংকট রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি কথা প্রচলিত আছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেসব কাজ সবচেয়ে কম জনপ্রিয়, তার মধ্যে একটি হলো গবেষণা। দেখা গেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে যতটা আগ্রহী থাকেন, গবেষণায় ঠিক ততটাই অনাগ্রহী। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে তাদের মোট বাজেটের যথাক্রমে ২৬, ২৭ ও ৩১ শতাংশ গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ দেয় তার বাজেটের মাত্র ২ শতাংশ। যদিও এই ২ শতাংশ বরাদ্দও মাঝে মাঝে গবেষণার কাজে শেষ করতে পারেন না গবেষকেরা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় সাফল্যের জন্য যতটা না পত্রিকার শিরোনাম হয়, তার চেয়ে বেশি শিরোনাম হয় গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির কারণে। এ কারণে প্রতিষ্ঠার ১০৪তম বছরে এসেও আমাদের প্রধান গৌরব হলো কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৪তম স্থান অর্জন। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে ৫০০-এর মধ্যে অবস্থান করছে। হয়তো বা এ কারণেই এত পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়তে আসেন না।
এত না থাকা, না পাওয়া ও হতাশার মধ্যেও যে কথাটি সবচেয়ে বেশি সত্য, তা হলো এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন যেমন আমাদের অর্জন, তেমনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতাগুলোও আমাদের সীমাবদ্ধতা। বিগত ১০৩ বছরের পথপরিক্রমায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে পথ পাড়ি দিয়েছে, আগামী ১০০ বছর হোক তার চেয়ে আরও বেশি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শিক্ষার্থীবান্ধব। রাজনৈতিক গৌরবের ভারে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার জৌলুস ফিরে পাক গৌরব পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিকারের প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হয়ে উঠুক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক।
আরিফ ইশতিয়াক রাহুল
শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের ২৯ তম সম্মেলনে (কপ ২৯) অংশগ্রহণ করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। বৈশ্বিক তাপমাত্রা
৮ ঘণ্টা আগেখুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং, বিইউআরপি ও বিআর্ক কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
১১ ঘণ্টা আগেইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) ফল-২০২৪-এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। ১৫ নভেম্বর ইউআইইউ খেলার মাঠে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগেচীনের জিয়াংসু ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেনশি য়াল স্কলারশিপ ২০২৫-২৬-এর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
২০ ঘণ্টা আগে