শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে পর্নো ভিডিও দেখিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে মো. মাহবুবুর রহমান (২৬) নামের এক যুবককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালত এ রায় দেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান।

জানা যায়, গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাসে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে এসে পৌঁছায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে। তখন বাসের ভেতরে হট্টগোলের আওয়াজ শুনতে পান শেরপুর হাইওয়ে থানার পুলিশের টহলরত দল। এ সময় বাস থামিয়ে চালক ও সুপারভাইজারের কাছে গাড়িতে কোনো ঝামেলা হয়েছে কি না জানতে চান সার্জেন্ট শিবলু মিয়া। 

এ সময় পুলিশকে গাড়ির চালক ও সুপারভাইজার জানান, একজন পুরুষ যাত্রী ও একজন নারী যাত্রীর (শাবি শিক্ষার্থী) মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। গাড়িতে থাকা পুরুষ যাত্রী শেরপুরে নামতে চাইলে নারী যাত্রীটি পুরুষ যাত্রীকে নামতে না দিয়ে তাঁকে সিলেটে নিয়ে যেতে বলছে। এ ছাড়াও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিলেট হুমায়ুন রশিদ চত্বরে অবস্থান করছে বলেও বাসের চালককে জানান ওই শিক্ষার্থী। 

হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার সিলেট রিজিওনের নির্দেশক্রমে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তিনি ঘটনার বিবরণ শুনে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট মামলা (নং-৭১) পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ওই যুবককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন। অনাদায়ে বিনাশ্রমে ১ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরবর্তীতে আসামিকে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। 

এ ব্যাপারে শেরপুর হাইওয়ে থানার (ওসি) মো. নবীর হোসেন জানান, চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের বাসে বি-৪ সিটে বসা ছিলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর মো. মাহবুবুর রহমান। তাঁর পেছনের ই-৪ সিটে বসা ছিলেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তখন ছেলেটি তাঁর হাতে থাকা মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখিয়ে দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ওই শিক্ষার্থীকে বিরক্ত করে ও তাঁর দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন ভাবে খারাপ অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করে। 

হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. শহিদ উল্লাহ্ বলেন, মহাসড়কে সব ধরনের হয়রানিমূলক কাজ বন্ধে হাইওয়ে পুলিশ স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছে। মহাসড়ক নিরাপদ ও মহাসড়কে কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টিকে সামনে রেখে কাজ করা হচ্ছে।