খুলনায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে একই কলেজের ২ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ৩০

খুলনায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে সুজাতা মণ্ডলের (২৩) মরদেহ ও দিবাগত ১২টার পর সীমা খাতুনের (২২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

তাঁরা দুজনই নগরীর শেখপাড়া এলাকার পৃথক দুটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁদের কক্ষ থেকে পাওয়া সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন, মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। 

নিহত সুজাতা মণ্ডলের বাড়ি পাইকগাছা উপজেলার আমিরপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম শ্যামল কান্তি মণ্ডল। তিনি এশিয়ান নার্সিং কলেজে বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। 

অপরদিকে সীমা খাতুন ছিলেন ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বাড়ি তেরখাদা উপজেলায়। 

একই প্রতিষ্ঠানের দুই ছাত্রীর মৃত্যুতে তাঁদের সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে দুটি ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সুজাতা মণ্ডল কলেজের পাশে শেখপাড়া প্রধান সড়কের হাসিবুর রহমানের বাড়ির চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাঁর ঘর থেকে মোবাইল ফোনের আওয়াজ আসছিল। কেউ ফোনটি রিসিভ না করায় পাশের বাসিন্দা কক্ষের ছিদ্র দিয়ে সিলিংয়ে সুজাতার দেহ ঝুলতে দেখে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি সোনাডাঙ্গা থানা–পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এর আগের দিন অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার সুজাতা কলেজে যাননি। 

প্রতিবেশীরা জানান, গত বুধবারের পর থেকে সুজাতাকে ঘরের বাইরে দেখা যায়নি। তিনি একাই ওই ঘরে ভাড়া থাকতেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সুজাতা ছিলেন সবার বড়। 

নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার এএসআই আশিকা রেজা বলেন, ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলতে থাকা মরদেহটি কিছুটা ফুলে গিয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার বিকেলে অথবা রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। দীর্ঘ সময় মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকায় শরীরে বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেঁধেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। 

অন্যদিকে শেখপাড়া হাজি ইসমাঈল ক্রস রোডের আমির মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সীমা খাতুনসহ আরও ৪ ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার সবাই বাড়ি চলে যাওয়ায় সীমা একাই বাড়িতে ছিলেন। প্রতিবেশীদের সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর পুলিশ ঘরে ফ্যান ঝোলানোর হুকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। 

সোনাডাঙ্গা থানার এসআই আবদুল হাই বলেন, ‘মৃতদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। শুনেছি তিন মাস আগে স্বামীর সঙ্গে সীমার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।’ 

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনই সুইসাইড নোটে লিখেছেন, তাঁদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। তবে ২ ছাত্রী একই প্রতিষ্ঠানের। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পৃক্ততা রয়েছে কি-না আমরা তদন্ত করছি। এ ছাড়া একজনের প্রেমের সম্পর্কের কথাও শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবার যদি কোনো মামলা করতে চায়, আমরা মামলা নেব।’ 

এ ঘটনায় এশিয়ান নার্সিং কলেজের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত