গাজীপুরে বিএনপির শোক সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় এক নারীসহ এজাহারনামীয় মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানের নেতৃত্বে একদল নেতা-কর্মী বিনা অনুমতিতে রাজবাড়ী সড়কে তাঁদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে অবরোধ সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে মহানগর পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নেতা-কর্মীদের সড়ক থেকে অবস্থান সরিয়ে নিতে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করতে অনুরোধ জানান। এ সময় নেতা-কর্মীরা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে সেখানে সমাবেশ করতে থাকেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন এবং হামলা চালান। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে এবং জানমাল রক্ষায় লাঠিপেটা ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। 

ঘটনার পরপরই সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে জিএমপি সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। 

• গাজীপুরে পুলিশ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পুলিশসহ আহত ২০

এ বিষয়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা ইস্যু নিয়ে আন্দোলনে বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মী নিহতের স্মরণে জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে স্মরণসভা ও শোকর‍্যালির আয়োজন করা হয়। বিষয়টি আমরা পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শোকর‍্যালি বের করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। আমাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দেয় এবং লাঠিপেটা শুরু করে। পরে পুলিশ দলীয় অফিস ও নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ালশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে।’ 

মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি-মিডিয়া) আবু সায়েব নয়ন জানান, মহানগর পুলিশের সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। এ মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে। হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এক নারীসহ এজাহারনামীয় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আসামিদের আদালতে হাজির করা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।