লক্ষ্মীপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ ১৩ জনকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে কয়েকটি ব্ল্যাংক চেক, বিভিন্ন পরীক্ষায় পাসের মূল সনদপত্র ও আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে ভুয়া প্রশ্নপত্রসহ রামগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চিতোষী রোডের একটি বাড়ি থেকে মাহমুদুল হোসাইন ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তারসহ আটজনকে আটক করা হয়। এরপর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও পাঁচজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সুমি আক্তার, মোরশেদা জান্নাত রিভু, সুরাইয়া আক্তার, তানিয়া বাশার, তাছনিম আক্তার, শারমিন আক্তার, পারভেজ হোসেন, জহিরুল ইসলাম, রহমত উল্যাহ, জামাল উদ্দিন সবুজ ও মঞ্জুর হোসেন। আটকদের মধ্যে ১১ জনের বাড়ি রামগঞ্জে এবং দুজনের বাড়ি সদর উপজেলায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সবাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী ছিলেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান।

ড. কামরুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মাহামুদুল হোসাইন, জামাল উদ্দিন সবুজ ও মঞ্জুর হোসেন বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করেন তাঁরা।’

এসব প্রশ্নপত্র জেলাসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের কাছে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিতরণ করছিলেন তারা। এ ছাড়া যাঁরা নগদ টাকা দিতে পারেন না তাঁদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক ও পরীক্ষা পাসের মূল সনদ নিচ্ছিল চক্রটি। এসব চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত রয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে আটকের অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন টিটু বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভুয়া ফাঁসপত্র জালিয়াত চক্রের ১৩ জনকে আটক করা হয়। তবে তাঁদের কাছে পাওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মিল নেই। তাঁরা একটি প্রতারক চক্র। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিমতানুর রহমান, ডিএসবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজিজুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহদাত হোসেন টিটু।