আমতলীতে চোর সন্দেহে অমানুষিক নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫: ১৩
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫: ২৬

বরগুনার আমতলী উপজেলার মধ্যচন্দ্রা গ্রামের নির্মাণশ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বরকে চোর সন্দেহে আটকে রেখে কবির হাওলাদারসহ তাঁর সহযোগীরা অমানুষিক নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

জানা গেছে, উপজেলার মধ্যচন্দ্রা গ্রামের শানু মাতুব্বরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর (২০) মাসিক চুক্তিতে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমানের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন। বুধবার দুপুরে রাজ্জাক পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় ড্রেন নির্মাণের কাজ করছিলেন। এ সময় ওই এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী কবির হাওলাদার (৩৮), আল ফাহাদ (৪০), মনিরুল ইসলাম (৪০) ও শহীদ গাজী (৪৫) চোর সন্দেহে রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যান। পরে প্রয়াত অমল পালের চালের গোডাউনে আটকে রেখে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালান তাঁরা। পরে চালের গোডাউন থেকে কবির হাওলাদার ও তাঁর সহযোগীরা স্থানীয় হাবিব হোটেলে নিয়ে পুনরায় মারধর করেন—এমন অভিযোগ আব্দুর রাজ্জাকের।

খবর পেয়ে রাজ্জাকের ভাই মো. সামসুল আলম মাতুব্বর ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও তাঁরা মারধর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ওই দিন রাতে স্বজনেরা তাঁকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে আমতলী থানায় কবির হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে আব্দুর রাজ্জাকের ভাই মো. সামসুল আলম মাতুব্বর চারজনের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে ওই দিন রাত ১০টার দিকে চোর সন্দেহে আব্দুর রাজ্জাককে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে সচেতন মহল। অভিযোগ রয়েছে, কবির হাওলাদার আমতলী থানার কিছু পুলিশ সদস্যের ছত্রচ্ছায়ায় মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভির সাহারিয়ার বলেন, ‘রাজ্জাকের দুই পায়েই ফোলা জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে এক্স-রে করতে বলা হয়েছে। এক্স-রে প্রতিবেদন পেলে বলা যাবে।’

আমতলী পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘রাজ্জাক পৌরসভার অস্থায়ী নির্মাণশ্রমিক। তাঁকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

এদিকে ঘটনায় জড়িত কবির হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত