জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
‘আই অ্যাম নাম্বার ওয়ান জাহাঙ্গীর চৌধুরী। হাসপাতালের মা-বাপ আমি। আমার বিরুদ্ধে কারা বলছে, সামনাসামনি বলতে বলেন।’ এই উক্তি চট্টগ্রামের দাতব্য প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, স্বজনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এভাবে মন্তব্য করেন তিনি।
জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়ার পর গত ২১ জুলাই তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। দুই মাস পর ১৯ সেপ্টেম্বর অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। কিন্তু কবে, কখন অভিযান চালানো হবে, এমনকি কোন কোন বিষয়ে তদন্ত হবে তা ছয় দিন আগেই চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। যথারীতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অভিযানের দিন কমিটির সদস্যদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করে। অভিযোগ আছে, একজন ছাড়া কমিটির বাকি সদস্যদের খাইয়ে নয়ছয় বুঝিয়ে দিয়েছেন জাহাঙ্গীরসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
জেলা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সমাজসেবা অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন ও মো. সোহানুর মোস্তফা শাহরিয়ার।
কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগ আসার পর হাসপাতালের সভাপতি ও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে কমিটি। ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিবেদন রেডি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম শহরের খুলশী এলাকায় গরিব রোগী যেন বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়, সেই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল। এই হাসপাতাল নিয়ে এখন অভিযোগ, গত ১০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে বেসরকারি হাসপাতালের মতোই চলছে বাণিজ্য। প্রতিবছর সরকার থেকে ২ কোটি টাকা ছাড়াও জাকাত ও দান বাবদ পাওয়া বিপুল অর্থ নয়ছয় হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ পদে স্বজন
সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরীসহ পরিচালনা পর্ষদের ৭ সদস্য ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ আছে সমাজসেবা অধিদপ্তরে জমা পড়া অভিযোগে। এতে বলা হয়, অনিয়মের বিস্তৃতি ঘটানো এবং তা আড়ালে রাখার উদ্দেশ্যে নিজেদের ৪৬ জন আত্মীয়কে এই প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। নিয়োগ দেওয়া ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর ভাতিজা চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমান, ভাগনি সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ফারিয়া বিনতে আলী (গাইনি)। এ ছাড়া অডিট অফিসার মো. ইয়াছিন, অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. আনোয়ার, মো. নাসিমুল গণি, মো. মোজাম্মেল, মো. রবিউল ও আইটি অফিসার মো. নোমানকে হাসপাতালে সবাই জাহাঙ্গীরের আত্মীয় হিসেবে জানেন। তবে নিজেরা তা স্বীকার করেননি।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, হাসপাতালের সনোলজিস্ট ডা. শেহরীন সামিহা ইসলাম হলেন পর্ষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট শওকতের শ্যালিকা, ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. রিজওয়ানা জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহনেওয়াজের মেয়ে, ইনডোর সুপারভাইজার মো. মাজহার ইসলাম এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য শহীদুল্লাহর আত্মীয়।
হাসপাতালে গিয়ে চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি দ্রুত নিচে নেমে যান। দায়িত্বরত কর্মচারীকে বলে যান, ‘সাংবাদিক এলে বলবা আমি নেই।’ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর নিচ থেকে ওপরে উঠে অফিসে ঢোকেন তিনি। পরে একপ্রকার বাধ্য হয়ে কথা বলতে রাজি হন। আত্মীয়দের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আমান উল্লাহ বলেন, তাঁরা দূরসম্পর্কের আত্মীয়। ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় সভাপতির জেল খাটার বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেন। তবে বেসরকারি হাসপাতালের মতো রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার অভিযোগ সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার নেই
জানা যায়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সমিতির যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করার কথা কোষাধ্যক্ষের। কিন্তু আয়-ব্যয়ের কোনো রেজিস্টারই নেই। সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে যেকোনো একজন এবং কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয় না। কোনো রকমের যাচাই-বাছাই ছাড়া ‘ব্ল্যাংক চেকে’ কোষাধ্যক্ষের বাসায় গিয়ে সই নিয়ে আসেন পাবলিক রিলেশনস অফিসার।
প্রতিষ্ঠানের হিসাবপত্র সভাপতি নিজে দেখেন বলে জানান চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমান।
হাসপাতালের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিনের কাছে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরে চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। হাসপাতালে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আরেক হিসাব কর্মকর্তা মো. আনোয়ার অফিসে থেকেও কথা বলতে রাজি হননি।
নামী চিকিৎসকদের নামে বাণিজ্য
নামকরা চিকিৎসকদের নেমপ্লেট হাসপাতালে লাগিয়ে বাণিজ্য করার অভিযোগ আছে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের আইসিইউয়ে নেমপ্লেট লাগানো অধ্যাপক ডা. এ এ এম রাইহান উদ্দিন চৌধুরীর। তিনি সিসিইউর ক্রিটিক্যাল ইউনিট দেখাশোনা করেন—এমন প্রচার চালিয়ে রোগী টানছে হাসপাতালটি। অথচ অধ্যাপক ডা. এ এ এম রাইহান উদ্দিন চৌধুরী ওই হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন না। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডা. রাইহান উদ্দিন।
মুখ খুললেই চাকরিচ্যুতি
জানা যায়, ২০০১ সালে সমিতির সাধারণ সম্পাদককে ষড়যন্ত্র করে হটিয়ে দায়িত্ব নেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী। সেই থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরাই কথা বলেছেন তাঁদের চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে। জাহাঙ্গীরের কারণে এ পর্যন্ত ২০-৩০ জন কর্মকর্তা ও চিকিৎসক চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
অভিজ্ঞ চিকিৎসক মো. ইসতিয়াক বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের অনিয়ম ও ব্যবহারে একপ্রকার অতিষ্ঠ হয়ে চাকরি ছেড়ে আমি চলে আসি। জালিয়াতি করে তিনি নির্বাচনে জয়ী হতেন।’ আরেক চিকিৎসক ডা. মো. নওশেদ আহমেদ খান বলেন, ‘ভালো চিকিৎসকদের আত্মসম্মানবোধ আছে। সেই সম্মানটুকু পাইনি, তাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম।’ তাঁদের মতো ডা. নার্গিস রোজেলা, জামান, ইমরানসহ আরও অনেকে চাকরি ছেড়েছেন।
জাহাঙ্গীর চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, যাঁরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁরা চুরি করতেন। সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে সাবেক কয়েকজন সহকর্মী ষড়যন্ত্র করছেন। তাঁরাই এসব করে বেড়াচ্ছেন।
‘আই অ্যাম নাম্বার ওয়ান জাহাঙ্গীর চৌধুরী। হাসপাতালের মা-বাপ আমি। আমার বিরুদ্ধে কারা বলছে, সামনাসামনি বলতে বলেন।’ এই উক্তি চট্টগ্রামের দাতব্য প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, স্বজনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এভাবে মন্তব্য করেন তিনি।
জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়ার পর গত ২১ জুলাই তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। দুই মাস পর ১৯ সেপ্টেম্বর অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। কিন্তু কবে, কখন অভিযান চালানো হবে, এমনকি কোন কোন বিষয়ে তদন্ত হবে তা ছয় দিন আগেই চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। যথারীতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অভিযানের দিন কমিটির সদস্যদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করে। অভিযোগ আছে, একজন ছাড়া কমিটির বাকি সদস্যদের খাইয়ে নয়ছয় বুঝিয়ে দিয়েছেন জাহাঙ্গীরসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
জেলা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সমাজসেবা অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন ও মো. সোহানুর মোস্তফা শাহরিয়ার।
কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগ আসার পর হাসপাতালের সভাপতি ও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে কমিটি। ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিবেদন রেডি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম শহরের খুলশী এলাকায় গরিব রোগী যেন বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়, সেই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল। এই হাসপাতাল নিয়ে এখন অভিযোগ, গত ১০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে বেসরকারি হাসপাতালের মতোই চলছে বাণিজ্য। প্রতিবছর সরকার থেকে ২ কোটি টাকা ছাড়াও জাকাত ও দান বাবদ পাওয়া বিপুল অর্থ নয়ছয় হচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ পদে স্বজন
সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরীসহ পরিচালনা পর্ষদের ৭ সদস্য ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ আছে সমাজসেবা অধিদপ্তরে জমা পড়া অভিযোগে। এতে বলা হয়, অনিয়মের বিস্তৃতি ঘটানো এবং তা আড়ালে রাখার উদ্দেশ্যে নিজেদের ৪৬ জন আত্মীয়কে এই প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। নিয়োগ দেওয়া ওই কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর ভাতিজা চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমান, ভাগনি সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ফারিয়া বিনতে আলী (গাইনি)। এ ছাড়া অডিট অফিসার মো. ইয়াছিন, অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. আনোয়ার, মো. নাসিমুল গণি, মো. মোজাম্মেল, মো. রবিউল ও আইটি অফিসার মো. নোমানকে হাসপাতালে সবাই জাহাঙ্গীরের আত্মীয় হিসেবে জানেন। তবে নিজেরা তা স্বীকার করেননি।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, হাসপাতালের সনোলজিস্ট ডা. শেহরীন সামিহা ইসলাম হলেন পর্ষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট শওকতের শ্যালিকা, ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. রিজওয়ানা জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহনেওয়াজের মেয়ে, ইনডোর সুপারভাইজার মো. মাজহার ইসলাম এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য শহীদুল্লাহর আত্মীয়।
হাসপাতালে গিয়ে চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি দ্রুত নিচে নেমে যান। দায়িত্বরত কর্মচারীকে বলে যান, ‘সাংবাদিক এলে বলবা আমি নেই।’ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর নিচ থেকে ওপরে উঠে অফিসে ঢোকেন তিনি। পরে একপ্রকার বাধ্য হয়ে কথা বলতে রাজি হন। আত্মীয়দের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আমান উল্লাহ বলেন, তাঁরা দূরসম্পর্কের আত্মীয়। ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় সভাপতির জেল খাটার বিষয়টি অবশ্য স্বীকার করেন। তবে বেসরকারি হাসপাতালের মতো রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার অভিযোগ সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
আয়-ব্যয়ের রেজিস্টার নেই
জানা যায়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সমিতির যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করার কথা কোষাধ্যক্ষের। কিন্তু আয়-ব্যয়ের কোনো রেজিস্টারই নেই। সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে যেকোনো একজন এবং কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয় না। কোনো রকমের যাচাই-বাছাই ছাড়া ‘ব্ল্যাংক চেকে’ কোষাধ্যক্ষের বাসায় গিয়ে সই নিয়ে আসেন পাবলিক রিলেশনস অফিসার।
প্রতিষ্ঠানের হিসাবপত্র সভাপতি নিজে দেখেন বলে জানান চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. আমান উল্লাহ আমান।
হাসপাতালের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিনের কাছে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরে চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। হাসপাতালে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আরেক হিসাব কর্মকর্তা মো. আনোয়ার অফিসে থেকেও কথা বলতে রাজি হননি।
নামী চিকিৎসকদের নামে বাণিজ্য
নামকরা চিকিৎসকদের নেমপ্লেট হাসপাতালে লাগিয়ে বাণিজ্য করার অভিযোগ আছে। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের আইসিইউয়ে নেমপ্লেট লাগানো অধ্যাপক ডা. এ এ এম রাইহান উদ্দিন চৌধুরীর। তিনি সিসিইউর ক্রিটিক্যাল ইউনিট দেখাশোনা করেন—এমন প্রচার চালিয়ে রোগী টানছে হাসপাতালটি। অথচ অধ্যাপক ডা. এ এ এম রাইহান উদ্দিন চৌধুরী ওই হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন না। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডা. রাইহান উদ্দিন।
মুখ খুললেই চাকরিচ্যুতি
জানা যায়, ২০০১ সালে সমিতির সাধারণ সম্পাদককে ষড়যন্ত্র করে হটিয়ে দায়িত্ব নেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী। সেই থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরাই কথা বলেছেন তাঁদের চাকরিচ্যুত হতে হয়েছে। জাহাঙ্গীরের কারণে এ পর্যন্ত ২০-৩০ জন কর্মকর্তা ও চিকিৎসক চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
অভিজ্ঞ চিকিৎসক মো. ইসতিয়াক বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের অনিয়ম ও ব্যবহারে একপ্রকার অতিষ্ঠ হয়ে চাকরি ছেড়ে আমি চলে আসি। জালিয়াতি করে তিনি নির্বাচনে জয়ী হতেন।’ আরেক চিকিৎসক ডা. মো. নওশেদ আহমেদ খান বলেন, ‘ভালো চিকিৎসকদের আত্মসম্মানবোধ আছে। সেই সম্মানটুকু পাইনি, তাই চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম।’ তাঁদের মতো ডা. নার্গিস রোজেলা, জামান, ইমরানসহ আরও অনেকে চাকরি ছেড়েছেন।
জাহাঙ্গীর চৌধুরী অবশ্য দাবি করেন, যাঁরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁরা চুরি করতেন। সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে সাবেক কয়েকজন সহকর্মী ষড়যন্ত্র করছেন। তাঁরাই এসব করে বেড়াচ্ছেন।
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
১০ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
১০ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
১০ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৪ দিন আগে