আশরাফ-উল-আলম ও আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
কিশোরী ও তরুণীদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করতেন রবিউল ইসলাম ওরফে হৃদয় ওরফে আরাভ খান। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন তাঁর তৎকালীন স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া। আরাভ আলাদা বাসা নিয়ে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের দিয়ে যৌন ব্যবসাও করতেন বলে জবানবন্দিতে বলেছেন তাঁর স্ত্রী।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মো. মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর সুরাইয়া আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য দিয়েছিলেন। দুবাইয়ে পলাতক রবিউল ওরফে আরাভ খানও এই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। নথিতে দেখা যায়, এ মামলায় এখনো কেউ কোনো সাক্ষ্য দেননি।
মামলার নথিতে দেখা যায়, সুরাইয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, ২০১৩ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানার আশুতিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লার ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে দুজনে বিয়ে করেন। তবে রবিউল আলাদা বাসা নিয়ে থাকতেন এবং বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের দিয়ে যৌন ব্যবসা করতেন। একসময় তাঁকেও সহযোগিতা করতে বাধ্য করেন। মেয়েদের কাছে যারা আসত, তাদের আপত্তিকর ছবি তুলতে বাধ্য করতেন রবিউল। এরপর তাদের ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করতেন। পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই কিশোরীকেও এসব কাজে ব্যবহার করতেন রবিউল।
সূত্র বলেছে, রবিউল প্রতারণা করতে আপন, হৃদয়, হৃদি, সাগরসহ বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। আর আশুতিয়া গ্রামের মানুষ তাঁকে চেনেন সোহাগ মোল্লা নামে। বিভিন্ন নামে তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান, রমনা, শেরে বাংলা নগর ও উত্তরখান থানায় মামলা রয়েছে। কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে তিনি আরাভ খান নামে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।সম্প্রতি দুবাইয়ে তাঁর স্বর্ণের দোকান আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ বিভিন্ন তারকাদের জড়ো করে আলোচনায় আসেন তিনি।
জানা যায়, আরাভই পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল। এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি রহমতউল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, রবিউলের বাসায় থাকা দুই কিশোরীকে দিয়ে মামুনকে বনানীতে আসতে বলেন তিনি। রবিউলের পরিকল্পনা ছিল মামুনকে ব্ল্যাকমেল করা। রহমতুল্লাহর সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এই পরিকল্পনা করেন। মামুনের মৃত্যুর পর ব্লেড দিয়ে তাঁর হাত ও পায়ের আঙুল কেটে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছিলেন রবিউল। লাশ গুমের পরিকল্পনাও তাঁর। লাশ গুম করতে বস্তা, সাদা কাপড় ও গাড়ির ব্যবস্থাও করেন রবিউল। হত্যার পরদিন ভোরে রহমতুল্লাহর গাড়ি নিয়ে আসেন রবিউল। রবিউল মোটরসাইকেলে করে খিলক্ষেতে একটি পাম্পে গিয়ে ওই গাড়িতে পেট্রল কিনে দিয়ে ঢাকায় ফেরেন। পরে বনানীর বাসা থেকে দুই কিশোরীকে নিয়ে নিজের সবুজবাগের বাসায় যান।
মামুন ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাতে বনানীর একটি বাসায় খুন হন। পরদিন গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার উলুখোলায় লাশে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। ১০ জুলাই কালীগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম ১০ জুলাই বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ডিবি পুলিশ ২০১৯ সালে রহমত, রবিউল, সুরাইয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এই মামলায় ইউসুফ নামের এক যুবক রবিউল সেজে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। চার মাস পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ২০২১ সালের ৬ মার্চ ইউসুফ মুক্তি পান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা চলছে।
হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে দুই কিশোরীর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় ডিবি। এ মামলা বিচারাধীন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এ।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি আব্দুস সাত্তার দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধার্য তারিখে আসামিদের নিয়মিত আদালতে হাজির করা হয় না। তাই মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষ্য দিতে এলেও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। গ্রেপ্তার আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত সূত্র বলেছে, আরাভ গত বছর মার্চে এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দেশে আসেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়ায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ান। ফেসবুকে লাইভে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া থানায় তখন কয়েকটি পরোয়ানা ছিল। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
জানতে চাইলে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’
আরও খবর পড়ুন:
কিশোরী ও তরুণীদের দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে বাসায় ডেকে এনে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করতেন রবিউল ইসলাম ওরফে হৃদয় ওরফে আরাভ খান। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন তাঁর তৎকালীন স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া। আরাভ আলাদা বাসা নিয়ে বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের দিয়ে যৌন ব্যবসাও করতেন বলে জবানবন্দিতে বলেছেন তাঁর স্ত্রী।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মো. মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর সুরাইয়া আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য দিয়েছিলেন। দুবাইয়ে পলাতক রবিউল ওরফে আরাভ খানও এই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। নথিতে দেখা যায়, এ মামলায় এখনো কেউ কোনো সাক্ষ্য দেননি।
মামলার নথিতে দেখা যায়, সুরাইয়া জবানবন্দিতে বলেছেন, ২০১৩ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানার আশুতিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লার ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে দুজনে বিয়ে করেন। তবে রবিউল আলাদা বাসা নিয়ে থাকতেন এবং বিভিন্ন বয়সী মেয়েদের দিয়ে যৌন ব্যবসা করতেন। একসময় তাঁকেও সহযোগিতা করতে বাধ্য করেন। মেয়েদের কাছে যারা আসত, তাদের আপত্তিকর ছবি তুলতে বাধ্য করতেন রবিউল। এরপর তাদের ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করতেন। পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই কিশোরীকেও এসব কাজে ব্যবহার করতেন রবিউল।
সূত্র বলেছে, রবিউল প্রতারণা করতে আপন, হৃদয়, হৃদি, সাগরসহ বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। আর আশুতিয়া গ্রামের মানুষ তাঁকে চেনেন সোহাগ মোল্লা নামে। বিভিন্ন নামে তাঁর বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান, রমনা, শেরে বাংলা নগর ও উত্তরখান থানায় মামলা রয়েছে। কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে তিনি আরাভ খান নামে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।সম্প্রতি দুবাইয়ে তাঁর স্বর্ণের দোকান আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ বিভিন্ন তারকাদের জড়ো করে আলোচনায় আসেন তিনি।
জানা যায়, আরাভই পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল। এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি রহমতউল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, রবিউলের বাসায় থাকা দুই কিশোরীকে দিয়ে মামুনকে বনানীতে আসতে বলেন তিনি। রবিউলের পরিকল্পনা ছিল মামুনকে ব্ল্যাকমেল করা। রহমতুল্লাহর সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এই পরিকল্পনা করেন। মামুনের মৃত্যুর পর ব্লেড দিয়ে তাঁর হাত ও পায়ের আঙুল কেটে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছিলেন রবিউল। লাশ গুমের পরিকল্পনাও তাঁর। লাশ গুম করতে বস্তা, সাদা কাপড় ও গাড়ির ব্যবস্থাও করেন রবিউল। হত্যার পরদিন ভোরে রহমতুল্লাহর গাড়ি নিয়ে আসেন রবিউল। রবিউল মোটরসাইকেলে করে খিলক্ষেতে একটি পাম্পে গিয়ে ওই গাড়িতে পেট্রল কিনে দিয়ে ঢাকায় ফেরেন। পরে বনানীর বাসা থেকে দুই কিশোরীকে নিয়ে নিজের সবুজবাগের বাসায় যান।
মামুন ২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাতে বনানীর একটি বাসায় খুন হন। পরদিন গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার উলুখোলায় লাশে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। ১০ জুলাই কালীগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম ১০ জুলাই বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ডিবি পুলিশ ২০১৯ সালে রহমত, রবিউল, সুরাইয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এই মামলায় ইউসুফ নামের এক যুবক রবিউল সেজে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। চার মাস পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ২০২১ সালের ৬ মার্চ ইউসুফ মুক্তি পান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা চলছে।
হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে দুই কিশোরীর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় ডিবি। এ মামলা বিচারাধীন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এ।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি আব্দুস সাত্তার দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধার্য তারিখে আসামিদের নিয়মিত আদালতে হাজির করা হয় না। তাই মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষ্য দিতে এলেও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। গ্রেপ্তার আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত সূত্র বলেছে, আরাভ গত বছর মার্চে এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দেশে আসেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়ায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ান। ফেসবুকে লাইভে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া থানায় তখন কয়েকটি পরোয়ানা ছিল। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
জানতে চাইলে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’
আরও খবর পড়ুন:
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৮ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৮ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৯ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১৩ দিন আগে