রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো হামদর্দ পাবলিক কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবমুখর পরিবেশে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয় কলেজ প্রশাসন। 

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় দুই পর্বে। প্রথম পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের জাতির কান্ডারি হবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে অধ্যক্ষ বলেন, ‘সফলতা অর্জনের জন্য দৃঢ় মনোবল, আত্মবিশ্বাস, কঠোর পরিশ্রম আর সাধনার কোনো বিকল্প নেই।’ 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী গোলাম রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘জানতে হলে প্রশ্ন করতে হবে। জানার ও শেখার কোনো বয়স নেই।’ জ্ঞান অর্জনের জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করেন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আলোকিত মানুষ হওয়ার জন্য দরকার সঠিক শিক্ষা এবং সেই শিক্ষার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজের ও মানুষের সেবা করা।’ 

উপস্থিত বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ইসমাইল খান, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মাহফুজুল ইসলাম, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ জহিরুল আলম ও কলেজের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান হোসেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ্) বাংলাদেশের পরিচালকেরা ও বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনলাইন ভিত্তিক টেন মিনিটস্ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রেষণামূলক বক্তব্য দেন। উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস মাধ্যমিকের তুলনায় কয়েকগুণ বড় কিন্তু এই সিলেবাস শেষ করতে প্রাপ্ত সময় মাধ্যমিকের তুলনায় কম। তাই তিনি কলেজজীবনের শুরু থেকেই কীভাবে পড়াশোনা করতে হবে সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেন। পরে তাঁকে সম্মাননা স্মারক দেন বিশেষ অতিথি মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়া। 

অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম। তাঁকে কৃতি শিক্ষার্থী হিসেবে সংবর্ধনা দেন প্রধান অতিথি কাজী গোলাম রহমান। এ সময় কলেজের, পরিচিতি, ইতিহাস ও অর্জন নিয়ে নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। 

দ্বিতীয় পর্বে ছিল হামদর্দ পাবলিক কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশাত্মবোধক গান দিয়ে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল নাচ, গান, নাটক এবং রম্য বিতর্ক। ‘শৃঙ্খলা নাকি অবাধ স্বাধীনতা’-বিষয়ে আয়োজিত রম্য বিতর্কে কলেজের শৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থীদের আচরণীয় সকল বিষয় অত্যন্ত মজার ও হাস্যরসের সঙ্গে তুলে ধরেন বিতার্কিকেরা। সবশেষে ছিল শিক্ষকদের পরিবেশনায় দলীয় গান। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি লে. জেনারেল (অব.) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ জহিরুল আলম। আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন কলেজের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সুরঞ্জীত দেবনাথ। দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের পুরো সময় অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন দ্বিতীয় বর্ষের দুই শিক্ষার্থী রওজাতুন নুসাইবা ও মঞ্জুর এ এলাহী।