ইউরোপের দেশগুলোতে মজুত প্রায় পূর্ণ থাকার পরও আসন্ন শীতে অস্থির থাকবে অঞ্চলটির (ইউরোপীয় ইউনিয়নের-ইইউ) প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার। নরওয়ের অন্যতম বৃহত্তম জ্বালানি কারবারি প্রতিষ্ঠান ইকুইনর এমনটাই সতর্কতা দিয়েছে। ইকুইনর বৃহত্তম গ্যাস উৎপাদনকারী এবং পশ্চিমা ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস সরবরাহকারী। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের মজুত সক্ষমতার প্রায় ৯৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ এখন পূর্ণ। অঞ্চলটি নির্ধারণ করেছিল যে, আগামী ১ নভেম্বরের আগেই সক্ষমতার অন্তত ৯০ শতাংশ মজুত নিশ্চিত করা হবে। তবে ১ নভেম্বর আসার অনেক আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গ্রীষ্মের সময়ে যা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। 

তবে লন্ডনের এনার্জি ইন্টেলিজেন্স ফোরামকে ইকুইনরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ডার্স ওপেডাল বলেন, এলএনজির (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) জন্য এশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা বাড়লে ইউরোপের বাজারেও গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসলে শীতকালে বাজার বেশ অস্থিতিশীল হবে বলে আশঙ্কা করছি। পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তবে ইউরোপ এলএনজি সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।’ 

ইউক্রেন যুদ্ধের জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়া থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করার পর গত বছর বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে এলএনজি আমদানির পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ইইউ গ্যাস ব্যবহার কমানোর করার বিশেষ করে শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে যেন গ্যাসের ব্যবহার কমানো যায় সেও প্রচেষ্টাও করা হয়। 

গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি মেটাতে ইইউ যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার থেকে উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানি করছে এবং নরওয়ে ও আজারবাইজান থেকে পাইপলাইন আমদানি বাড়াচ্ছে। তবে স্টোরেজ প্রায় পূর্ণ থাকার পরও চাহিদা মেটানোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি অপর্যাপ্ত বলে জানিয়েছে ইকুইনর। 
 
চলতি মাসের শুরুতে জার্মান গ্যাস স্টোরেজ অপারেটরদের সংগঠন আইএনইএস সতর্ক করে বলেছে, অতিরিক্ত এলএনজি টার্মিনাল, অতিরিক্ত গ্যাস সংরক্ষণ সক্ষমতা বা পাইপলাইন নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত না হলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে শিল্পোন্নত অর্থনীতির দেশ জার্মানি ব্যাপক গ্যাস ঘাটতির ঝুঁকিতে থাকবে।