নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও পয়োনিষ্কাশনের সংকটে ভুগছেন বানভাসি মানুষেরা। সুরমা নদীর পানি আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও কানাইঘাট পয়েন্টে এখনো শূন্য দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি একেবারে ধীর গতিতে কমছে।
এখনো অমলসীদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও বালাগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উন্নতি হয়েছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সিলেট সদর, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ছাড়া বাকি সব কটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবদিকেই নদ-নদীর পানি কমছে। কুশিয়ারার পানি একেবারেই ধীর গতিতে কমছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, তেমন উন্নতি বলা যাচ্ছে না। আর সুনামগঞ্জে পানি বেশি থাকায় সিলেট থেকে পানি নামতে সময় লাগছে। তবে আশা করা যাচ্ছে সপ্তাহখানেকের মধ্যে পানি নেমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আপাতত কোরবানির ঈদের আগে আর পানি বাড়ার সম্ভাবনা নাই। ঈদের ঢলের পানি নামতে পারে। তবে এতটা না।’
১৫ জুন থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় সিলেট নগরীর অধিকাংশ, সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ ও সিলেটের ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়।
এদিকে, সোমবার দুপুরে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মূল সড়কগুলো থেকে পানি নেমে গেলেও পাড়া-মহল্লার ভেতরে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। এসব পানিতে ময়লা জমে কালো রং ধারণ করেছে। বাসিন্দারা এসব পানি মাড়িয়েই চলাফেরা করছে। এ ছাড়া নগরীর ছড়া, খালগুলো ময়লা-আবর্জনা পড়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার তৈরি হয়েছে। নগরীর প্রায় সবগুলো ছড়া-খালে পানির ওপর ময়লা-আবর্জনা ভেসে থাকতে দেখা যায়। একই অবস্থা সুনামগঞ্জ শহর ও সিলেটের সব’কটি উপজেলা শহরেরও। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফেরা নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। কাচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে আসবাবপত্রও। এ ছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাগলা বাজার থেকে হাসন রাজার তোরণ পর্যন্ত রাস্তা দু’পাশে ত্রিপল দিয়ে ছাউনি দিয়ে গবাদিপশুর সঙ্গে বসবাস করছেন শত শত বন্যার্ত পরিবার।
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াগাঁও (কাকিয়ারপাড়) গ্রামের শামছুন নুর জানান, ‘বন্যার পনিতে ডুবে এক শ মণ ধান শেষ হয়ে গেছে। গত ১০ দিন ধরে রাস্তায় থাকছি। এখনো ঘরের ভেতরে পানি। মানুষের দেওয়া ত্রাণ দিয়ে কোনোক্রমে চলছে দিন। অনেকেই পাতলা পায়খানা, চুলকানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চারদিকে শুধু পচা গন্ধ। সবাই অসুস্থ হবে। সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পাইনি। আমাদের গ্রামের সবারই এক অবস্থা। এ সময় একই গ্রামের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।’
সিলেট সদর নীলগাঁওয়ের ফুল বিবি জানান, ‘৬ জনের পরিবার। একমাত্র ছেলে দুলাল মিয়া সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। বছরের শুরুতে এফআইভিডিবি থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন। সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। বন্যায় ঘর ভেঙে গেছে। সকল জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঘর ঠিক করব না কিস্তি চালাইব? আর খেয়ে বাচঁবোই কীভাবে।’
কানাইঘাটের গাছবাড়ি আমরপুর গ্রামের বাসিন্দা মানোয়ারা বেগম বলেন, ‘সবে আইয়া রাস্তার খান্দার মানশরে ত্রাণ দিয়া যায় গিয়া। আমরা হউ বন্দর মাঝে বাড়ি, কুনতা ফাইনা। ফানিয়ে ঘর-দোয়ার ভাঙ্গিলিছে। ওখন খাইমু কিলা আর ঘর ঠিক করতাম কিলা। আমার তো খামাইয়ারাও (রোজগার) নাই।’
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পাছালী গ্রামের নুরুজ্জামান বলেন, ‘পানি এক জায়াগায় আটকে আছে। বাড়ছেও না, কমছেও না। এক সপ্তাহের বেশি সময় ঘরের ভেতর পানি। এভাবে আর কত দিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা যায়? সহ্য-ধৈর্য শেষ।’
ফেঞ্চুগঞ্জের উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রুমেল আহসান জানান, ‘কুশিয়ারার পানি বাড়ায় পুরো এলাকা বন্যায় প্লাবিত। পানি সহজে কমছে না। বিশুদ্ধ পানি, খাবার মিলছে না। জীবন অসহায় হয়ে পড়েছে।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘পানি ধীর গতিতে কমছে। দ্রুত না কমায় বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। পুরোপুরি পানি না নামায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনেও উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।’
বালাগঞ্জের সুলতানপুরের বাসিন্দা শামীম হাসান বলেন, ‘বাজারে পানি ঢুকে অনেক দোকান তলিয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।’
ত্রাণ তৎপরতায় সমন্বয়হীনতা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জের বানভাসিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সারা দেশের মানুষ। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম চলছে বন্যাকবলিত এই জনপদে। মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সরকারের বিভিন্ন বাহিনী। বিপুল ত্রাণ কার্যক্রম সত্ত্বেও মানুষের হাহাকার কমছে না। বানভাসি মানুষের অভিযোগ, নগরীর কাছের ও যেসব উপজেলায় ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে সেসব স্থানে ত্রাণ বেশি যাচ্ছে। কিন্তু দুর্গম এলাকায় ওইভাবে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
সিলেটের গোয়াইঘাটের রুস্তুমপুর ইউনিয়নের দমদমা হাওর গ্রামের আক্কাস আলী জানান, ‘১৩ দিন ধরে পানিবন্দি। তিনি মাত্র একদিন কিছু শুকনা খাবার পেয়েছেন। আর কোনো কিছু পাননি। খাবারের চরম সংকটে আছেন।’ একইভাবে বলেছেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের সম্পদপুর গ্রামের তেরাব আলী। তিনি বলেন, ‘১০ দিন ধরে ঘরে পানি। গত বুধবারে সামান্য চাল, ডালের একটি প্যাকেট পেয়েছি। আর কিছুই মিলেনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারের দেখাও মিলছে না।’
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ বিতরণের সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করেছেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা আলাদা সমন্বয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই কমিটি করার জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন এসব কমিটির কাজ তদারকি করবে।’
দেবজিৎ সিংহ জানান, ‘প্রতিটি উপজেলার প্রবেশমুখে একটি করে কন্ট্রোল রুম চালু করবে এই সমন্বয় কমিটি। তারা উপজেলায় প্রবেশ করা সব কটি ত্রাণবাহী গাড়ি আটকে বিতরণের জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করে দেবে। প্রয়োজনে জলযান ও স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে ত্রাণ বিতরণকারীদের সহায়তা করবে এ কমিটি।’
সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও পয়োনিষ্কাশনের সংকটে ভুগছেন বানভাসি মানুষেরা। সুরমা নদীর পানি আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও কানাইঘাট পয়েন্টে এখনো শূন্য দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীর পানি একেবারে ধীর গতিতে কমছে।
এখনো অমলসীদ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও বালাগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উন্নতি হয়েছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সিলেট সদর, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ছাড়া বাকি সব কটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবদিকেই নদ-নদীর পানি কমছে। কুশিয়ারার পানি একেবারেই ধীর গতিতে কমছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, তেমন উন্নতি বলা যাচ্ছে না। আর সুনামগঞ্জে পানি বেশি থাকায় সিলেট থেকে পানি নামতে সময় লাগছে। তবে আশা করা যাচ্ছে সপ্তাহখানেকের মধ্যে পানি নেমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আপাতত কোরবানির ঈদের আগে আর পানি বাড়ার সম্ভাবনা নাই। ঈদের ঢলের পানি নামতে পারে। তবে এতটা না।’
১৫ জুন থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় সিলেট নগরীর অধিকাংশ, সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ ও সিলেটের ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়।
এদিকে, সোমবার দুপুরে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মূল সড়কগুলো থেকে পানি নেমে গেলেও পাড়া-মহল্লার ভেতরে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। এসব পানিতে ময়লা জমে কালো রং ধারণ করেছে। বাসিন্দারা এসব পানি মাড়িয়েই চলাফেরা করছে। এ ছাড়া নগরীর ছড়া, খালগুলো ময়লা-আবর্জনা পড়ে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার তৈরি হয়েছে। নগরীর প্রায় সবগুলো ছড়া-খালে পানির ওপর ময়লা-আবর্জনা ভেসে থাকতে দেখা যায়। একই অবস্থা সুনামগঞ্জ শহর ও সিলেটের সব’কটি উপজেলা শহরেরও। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফেরা নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। কাচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে আসবাবপত্রও। এ ছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাগলা বাজার থেকে হাসন রাজার তোরণ পর্যন্ত রাস্তা দু’পাশে ত্রিপল দিয়ে ছাউনি দিয়ে গবাদিপশুর সঙ্গে বসবাস করছেন শত শত বন্যার্ত পরিবার।
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াগাঁও (কাকিয়ারপাড়) গ্রামের শামছুন নুর জানান, ‘বন্যার পনিতে ডুবে এক শ মণ ধান শেষ হয়ে গেছে। গত ১০ দিন ধরে রাস্তায় থাকছি। এখনো ঘরের ভেতরে পানি। মানুষের দেওয়া ত্রাণ দিয়ে কোনোক্রমে চলছে দিন। অনেকেই পাতলা পায়খানা, চুলকানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চারদিকে শুধু পচা গন্ধ। সবাই অসুস্থ হবে। সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পাইনি। আমাদের গ্রামের সবারই এক অবস্থা। এ সময় একই গ্রামের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।’
সিলেট সদর নীলগাঁওয়ের ফুল বিবি জানান, ‘৬ জনের পরিবার। একমাত্র ছেলে দুলাল মিয়া সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালায়। বছরের শুরুতে এফআইভিডিবি থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন। সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। বন্যায় ঘর ভেঙে গেছে। সকল জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঘর ঠিক করব না কিস্তি চালাইব? আর খেয়ে বাচঁবোই কীভাবে।’
কানাইঘাটের গাছবাড়ি আমরপুর গ্রামের বাসিন্দা মানোয়ারা বেগম বলেন, ‘সবে আইয়া রাস্তার খান্দার মানশরে ত্রাণ দিয়া যায় গিয়া। আমরা হউ বন্দর মাঝে বাড়ি, কুনতা ফাইনা। ফানিয়ে ঘর-দোয়ার ভাঙ্গিলিছে। ওখন খাইমু কিলা আর ঘর ঠিক করতাম কিলা। আমার তো খামাইয়ারাও (রোজগার) নাই।’
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পাছালী গ্রামের নুরুজ্জামান বলেন, ‘পানি এক জায়াগায় আটকে আছে। বাড়ছেও না, কমছেও না। এক সপ্তাহের বেশি সময় ঘরের ভেতর পানি। এভাবে আর কত দিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা যায়? সহ্য-ধৈর্য শেষ।’
ফেঞ্চুগঞ্জের উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রুমেল আহসান জানান, ‘কুশিয়ারার পানি বাড়ায় পুরো এলাকা বন্যায় প্লাবিত। পানি সহজে কমছে না। বিশুদ্ধ পানি, খাবার মিলছে না। জীবন অসহায় হয়ে পড়েছে।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘পানি ধীর গতিতে কমছে। দ্রুত না কমায় বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। পুরোপুরি পানি না নামায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনেও উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।’
বালাগঞ্জের সুলতানপুরের বাসিন্দা শামীম হাসান বলেন, ‘বাজারে পানি ঢুকে অনেক দোকান তলিয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।’
ত্রাণ তৎপরতায় সমন্বয়হীনতা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জের বানভাসিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সারা দেশের মানুষ। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম চলছে বন্যাকবলিত এই জনপদে। মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সরকারের বিভিন্ন বাহিনী। বিপুল ত্রাণ কার্যক্রম সত্ত্বেও মানুষের হাহাকার কমছে না। বানভাসি মানুষের অভিযোগ, নগরীর কাছের ও যেসব উপজেলায় ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে সেসব স্থানে ত্রাণ বেশি যাচ্ছে। কিন্তু দুর্গম এলাকায় ওইভাবে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
সিলেটের গোয়াইঘাটের রুস্তুমপুর ইউনিয়নের দমদমা হাওর গ্রামের আক্কাস আলী জানান, ‘১৩ দিন ধরে পানিবন্দি। তিনি মাত্র একদিন কিছু শুকনা খাবার পেয়েছেন। আর কোনো কিছু পাননি। খাবারের চরম সংকটে আছেন।’ একইভাবে বলেছেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের সম্পদপুর গ্রামের তেরাব আলী। তিনি বলেন, ‘১০ দিন ধরে ঘরে পানি। গত বুধবারে সামান্য চাল, ডালের একটি প্যাকেট পেয়েছি। আর কিছুই মিলেনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারের দেখাও মিলছে না।’
সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ বিতরণের সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করেছেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা আলাদা সমন্বয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই কমিটি করার জন্য সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন এসব কমিটির কাজ তদারকি করবে।’
দেবজিৎ সিংহ জানান, ‘প্রতিটি উপজেলার প্রবেশমুখে একটি করে কন্ট্রোল রুম চালু করবে এই সমন্বয় কমিটি। তারা উপজেলায় প্রবেশ করা সব কটি ত্রাণবাহী গাড়ি আটকে বিতরণের জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করে দেবে। প্রয়োজনে জলযান ও স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে ত্রাণ বিতরণকারীদের সহায়তা করবে এ কমিটি।’
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুজিত দাস (৩০) নামের এক অটোরিকশাচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগঞ্জ সেতু থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
১৬ মিনিট আগেরাজধানীর পল্টনে বাস ও ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা মাঝখানে চাপা পড়লে এর আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম জাকির হোসেন ভুইয়া (৫৪)। আজ রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পল্টন মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় জাকির হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সকাল ৭টার দ
২১ মিনিট আগেঢাকার ধামরাইয়ে থেমে থাকা একটি ট্রাককে পেছনে থেকে একটি পিকআপ ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপের চালক ও সহকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগতির একটি বাসের চাপায় এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার মাদখলা গ্রামের তুলা গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১ ঘণ্টা আগে