হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোস্তাক আহমেদ নামের এক যুবক গুলিতে নিহত ও কয়েকজনকে আহত হওয়ার ঘটনায় হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবু জাহিরকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলায় ১১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এসএম মামুন মিয়া বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে আন্দোলন চলাকালে রিপন শীল নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হওয়ায় তাঁর মা রুবী শীল বাদী হয়ে সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
হবিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, মামলায় ১১১ নামীয় ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ওসি জানান, সাবেক এমপি আবু জাহির, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, আওয়ামী লীগের কর্মী শাহ নেওয়াজ, আবু জাহির এমপির পুত্র ইফাত জামিল, বানিয়াচঙ্গ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আহাদ মিয়া, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন আহমদ চৌধুরী সুমনের বিরুদ্ধে মোস্তাককে হত্যা ও ছাত্র জনতাকে আহত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খান।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, গত ২ আগস্ট বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতা শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরীর প্ররোচনা ও উসকানিতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ লাঠি সোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জড়ো হলে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের গুলিতে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় হবিগঞ্জ পিডিবির অস্থায়ী লাইনম্যান ও সিলেটের টুকেরবাজার এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে মোস্তাক আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে মোশাহিদ মিয়া, মজিদ মিয়া, সোহাগ মিয়াসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন।