অধিক শ্রমেও কৃষিকাজে সমমজুরি পান না নারী শ্রমিকেরা

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ৩০
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ২০: ২৬

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কম মজুরিতে অধিক শ্রম পাওয়ায় বরাবরই চাহিদা রয়েছে নারী শ্রমিকের। বিশেষ করে আমন মৌসুমে নারী শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে যায়। ধানের বীজতলা উত্তোলন করে জমিতে রোপণসহ সব কাজেই রয়েছে নারী শ্রমিকের চাহিদা। শ্রম অনুযায়ী পুরুষদের তুলনায় নারী শ্রমিকেরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বহু বছর ধরে। সমানভাবে পুরুষের সঙ্গে কৃষিকাজ করলেও নামমাত্র মজুরি পান তাঁরা। এমন অবস্থায় বৈষম্য দূর করে সমান মজুরির দাবি জানান নারী শ্রমিকেরা। 

নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা যে সময় যে কাজ পান সে কাজই করেন। অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বিশেষ করে আমন, আউশ ও বোরো মৌসুমে বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণ করেন বেশির ভাগ নারী শ্রমিকেরা। শুধু কৃষিকাজ নয়, কনস্ট্রাকশন কাজসহ সব ধরনের কাজ করেন তাঁরা। তবে পুরুষের তুলনায় এখনো অর্ধেক মজুরি পান। একজন পুরুষ যেখানে দিনে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরি পান সেখানে একজন নারী শ্রমিক ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পান। 

উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে আমন ধানের চারা রোপণ করেছে দিবা ও জয়ন্তী জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাঁরা মজুরি পান ৩০০ টাকা। আর সারা দিন কাজ করলে পান ৪০০ টাকা। একই কাজ পুরুষ শ্রমিকে করলে তাঁদের তুলনায় দ্বিগুণ মজুরি পান। মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে কথা বললে কাজে নেয় না। 

চা-বাগানের নারী শ্রমিকেরা জানান, বাগানের অনেক নারীরা বিভিন্ন এলাকায় এসে দিনমজুরি কাজ করেন। বিশেষ করে কৃষিকাজের মৌসুমে তাঁদের বেশি দেখা যায়। পরিবারের একজন বাগানে কাজ করলেও এই টাকা দিয়ে পরিবারের খরচ চলে না। এ জন্য বাকি সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করেন স্বল্প মজুরিতে। 

পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক বেলা মিয়া বলেন, ‘আমনের চারা রোপণের এই ভরা মৌসুমে পুরুষ শ্রমিক পাওয়া কঠিন। এ জন্য নারী শ্রমিক দিয়ে চারা রোপণ করাচ্ছি। নারীরা এ কাজে অনেক দক্ষ। নারী শ্রমিকের কাজের তুলনায় তাদের মজুরি ঠিক আছে। একজন পুরুষ কাজ বেশি করে এ জন্য তাদের মজুরিও বেশি।’ 

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও কৃষিকাজ করেন। ধানের চারা রোপণের জন্য কৃষকেরা যে যেখান থেকে পারেন শ্রমিক এনে কাজ করাচ্ছেন। 

উপজেলায় এ বছর ১৭ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান, জয়ন্ত কুমার রায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত