চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
করোনা না এলে তারা হয়তো আজ স্কুলে ফিরত হইহই করে। হয়তো কাগজে কাটাকুটি খেলায় বন্ধুকে হারিয়ে দিত। আর অবধারিতভাবেই প্রমোশন পেয়ে ঢুকে পড়ত চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসরুমে। কিন্তু করোনা এসেছিল এবং এখনো আছে। আর তাই শাওন ও সুব্রতর জীবন দিক বদলেছে অপ্রত্যাশিত দিকে। নয় বছর বয়সী মো. শাওনের ছোট্ট দু-পা-ই এখন ঘুরিয়ে চলেছে বাবা মন্টু মিয়ার রিকশা ভ্যানের চাকা। আর সুব্রত? তার জীবন আটকে গেছে লেদ মেশিনে।
মো. শাওন (৯)। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মেরামতপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। করোনার শুরুতে পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। কিন্তু করোনার মধ্যে ভ্যানচালক বাবা মন্টু মিয়া (৫০) অসুস্থ হলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায়। এর পর পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে বাবার ভ্যান চালাতে শুরু করে শাওন। এখন স্কুল খুললেও তার আর স্কুলে ফেরা হয়নি।
সম্প্রতি উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের চকগোচর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি স্টিলের আসবাবপত্র তৈরির কারখানায় ৩-৪ জন শিশু কাজ করছে। তাদের সবাই করোনার প্রকোপ শুরুর আগে স্কুল অথবা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করত। কিন্তু দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও তারা আর স্কুলে ফিরতে পারেনি।
এদের মধ্যে লেদের কারখানায় কাজ করছে নয় বছরের শিশু সুব্রত। তার বাবা কাঞ্চন প্রামাণিক একজন কৃষক। সুব্রত ওই এলাকার চকগোচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সে গত এক বছর ধরে ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করছে।
করোনাকালে দীর্ঘ দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলে ফের পাঠদান শুরু হলেও শাওনের মতো চারঘাটের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীরই ক্লাসে ফেরা হয়নি। গত দেড় বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দারিদ্র্য ও বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে ঝরে গেছে এসব শিক্ষার্থী। তাদের আর ফেরানো যাবে কি-না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্লাসে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসও স্বীকার করেছে।
এ তালিকায় রয়েছে সোহাগও। নবম শ্রেণির এই ছাত্র এখন স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ রেখে রাজমিস্ত্রির কাজ করছে। ডাকরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ত সে। তার পরিবারে সে ছাড়া আয় করার মতো অন্য কেউ নেই। বাধ্য হয়ে করোনার মধ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে সোহাগ। স্কুলে আর হয়তো তার ফেরা হবে না।
চারঘাটে বাল্যবিবাহ, প্রজনন স্বাস্থ্য ও নেতৃত্ব বিকাশ নিয়ে কাজ করছে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট। হাঙ্গার প্রজেক্টের উপজেলা সমন্বয়কারী আশরাফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় এ এলাকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র কারখানা ও ওয়ার্কশপে কাজ করছে শিশুরা। এখন তারা কাজ শিখে গেছে, তাতে আয়ও হচ্ছে। আর সে কারণেই অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের আর স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছে না। অনেক কন্যাশিশুর বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে শিক্ষার্থীদের ৩০ শতাংশ ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ এখনো স্কুলে ফেরেনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইমদাদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল থেকে দূরে সরে গেছে। উপজেলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত। বাল্যবিবাহ এর অন্যতম কারণ। আমার নিজের প্রতিষ্ঠানেই এসএসসি পরীক্ষার্থী ২৩ ছাত্রীর ১৭ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। এ ছাড়া দারিদ্র্যের কারণে অনেকে ঝরে পড়ছে।
তবে ঠিক কী পরিমাণ শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানালেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কী পরিমাণ শিক্ষার্থী স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে সেটা আরও পরে জানা যাবে। তবে গত কয়েক দিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে গিয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত পেয়েছি। যদিও স্কুলগুলোর দেওয়া তথ্যমতে উপস্থিতির হার ৮১ শতাংশ।
করোনা না এলে তারা হয়তো আজ স্কুলে ফিরত হইহই করে। হয়তো কাগজে কাটাকুটি খেলায় বন্ধুকে হারিয়ে দিত। আর অবধারিতভাবেই প্রমোশন পেয়ে ঢুকে পড়ত চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসরুমে। কিন্তু করোনা এসেছিল এবং এখনো আছে। আর তাই শাওন ও সুব্রতর জীবন দিক বদলেছে অপ্রত্যাশিত দিকে। নয় বছর বয়সী মো. শাওনের ছোট্ট দু-পা-ই এখন ঘুরিয়ে চলেছে বাবা মন্টু মিয়ার রিকশা ভ্যানের চাকা। আর সুব্রত? তার জীবন আটকে গেছে লেদ মেশিনে।
মো. শাওন (৯)। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মেরামতপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। করোনার শুরুতে পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। কিন্তু করোনার মধ্যে ভ্যানচালক বাবা মন্টু মিয়া (৫০) অসুস্থ হলে পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে যায়। এর পর পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে বাবার ভ্যান চালাতে শুরু করে শাওন। এখন স্কুল খুললেও তার আর স্কুলে ফেরা হয়নি।
সম্প্রতি উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের চকগোচর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি স্টিলের আসবাবপত্র তৈরির কারখানায় ৩-৪ জন শিশু কাজ করছে। তাদের সবাই করোনার প্রকোপ শুরুর আগে স্কুল অথবা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করত। কিন্তু দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও তারা আর স্কুলে ফিরতে পারেনি।
এদের মধ্যে লেদের কারখানায় কাজ করছে নয় বছরের শিশু সুব্রত। তার বাবা কাঞ্চন প্রামাণিক একজন কৃষক। সুব্রত ওই এলাকার চকগোচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সে গত এক বছর ধরে ৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করছে।
করোনাকালে দীর্ঘ দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুলে ফের পাঠদান শুরু হলেও শাওনের মতো চারঘাটের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীরই ক্লাসে ফেরা হয়নি। গত দেড় বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দারিদ্র্য ও বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে ঝরে গেছে এসব শিক্ষার্থী। তাদের আর ফেরানো যাবে কি-না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্লাসে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসও স্বীকার করেছে।
এ তালিকায় রয়েছে সোহাগও। নবম শ্রেণির এই ছাত্র এখন স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ রেখে রাজমিস্ত্রির কাজ করছে। ডাকরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ত সে। তার পরিবারে সে ছাড়া আয় করার মতো অন্য কেউ নেই। বাধ্য হয়ে করোনার মধ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে সোহাগ। স্কুলে আর হয়তো তার ফেরা হবে না।
চারঘাটে বাল্যবিবাহ, প্রজনন স্বাস্থ্য ও নেতৃত্ব বিকাশ নিয়ে কাজ করছে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট। হাঙ্গার প্রজেক্টের উপজেলা সমন্বয়কারী আশরাফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় এ এলাকার বিভিন্ন ক্ষুদ্র কারখানা ও ওয়ার্কশপে কাজ করছে শিশুরা। এখন তারা কাজ শিখে গেছে, তাতে আয়ও হচ্ছে। আর সে কারণেই অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের আর স্কুলে পাঠাতে চাচ্ছে না। অনেক কন্যাশিশুর বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে শিক্ষার্থীদের ৩০ শতাংশ ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ এখনো স্কুলে ফেরেনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইমদাদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল থেকে দূরে সরে গেছে। উপজেলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত। বাল্যবিবাহ এর অন্যতম কারণ। আমার নিজের প্রতিষ্ঠানেই এসএসসি পরীক্ষার্থী ২৩ ছাত্রীর ১৭ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। এ ছাড়া দারিদ্র্যের কারণে অনেকে ঝরে পড়ছে।
তবে ঠিক কী পরিমাণ শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানালেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কী পরিমাণ শিক্ষার্থী স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে সেটা আরও পরে জানা যাবে। তবে গত কয়েক দিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে গিয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত পেয়েছি। যদিও স্কুলগুলোর দেওয়া তথ্যমতে উপস্থিতির হার ৮১ শতাংশ।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সুজিত দাস (৩০) নামের এক অটোরিকশাচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগঞ্জ সেতু থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
২ মিনিট আগেরাজধানীর পল্টনে বাস ও ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা মাঝখানে চাপা পড়লে এর আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম জাকির হোসেন ভুইয়া (৫৪)। আজ রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পল্টন মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় জাকির হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সকাল ৭টার দ
৭ মিনিট আগেঢাকার ধামরাইয়ে থেমে থাকা একটি ট্রাককে পেছনে থেকে একটি পিকআপ ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপের চালক ও সহকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
৩৫ মিনিট আগেগাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগতির একটি বাসের চাপায় এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার মাদখলা গ্রামের তুলা গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১ ঘণ্টা আগে