বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা-জামথল ঘাটে সি-ট্রাক চলাচল  ৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এর আগে ১২ আগস্ট থেকে ওই ঘাটে প্রতিদিন একবার করে 'শহীদ আবদুর রউফ সেরনিয়াবাত' নামে সি-ট্রাক চলাচল শুরু হয়। কিন্তু গত রোববার সেই সি-ট্রাকের ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার পর থেকেই যাত্রী পারাপার বন্ধ আছে।   

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর 'শহীদ আবদুর রউফ সেরনিয়াবাত' নামে সি-ট্রাক কালিতলা-জামথল নৌপথে চলাচল শুরু করে। এ সি-ট্রাক গত ১২ আগস্ট সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল ঘাটে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী উদ্বোধন করেন। এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও জামালপুর-৩ আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বগুড়া-১ আসনের সাংসদ সাহাদারা মান্নান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পরপরই যাত্রী নিয়ে শহীদ সি-ট্রাকটি যাত্রী পারাপার শুরু করে। বর্তমানে সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষ আশাহত হয়েছেন। 

সি-ট্রাকটি চালু হওয়ার পর থেকে বগুড়া এবং জামালপুরের আশপাশের জেলাগুলো থেকে দলে দলে লোকজন একনজর দেখার জন্য প্রতিনিয়ত আসছেন। তাঁরা বিকল সি-ট্রাকে উঠে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। তাঁদের মাঝে একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এবং আমার ৬ জন সহপাঠী রংপুর থেকে সি-ট্রাকে ভ্রমণ করতে এখানে এসেছিলাম। এসে জানতে পারি কয়েক দিন ধরে সি-ট্রাক বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় ওই নৌরুটে খেয়া নৌকা, ভাড়া নৌকা এবং রিজার্ভ নৌকাগুলোতে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ বেড়ে গেছে। খেয়া নৌকাতে ১০০ এর বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। মোটরসাইকেলে পরিপূর্ণ ছিল নৌকাগুলো। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় প্রতিনিয়ত নৌকাডুবির আশঙ্কা রয়েছে। 

ফেরির ইজারাদার জাহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন,   গত ১২ আগস্ট জামথল ও কালিতলা ঘাটের মধ্যে সি-ট্রাকে প্রতিদিন একবার করে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। গত রোববার যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়ার পর যমুনার মাঝ নদীতে সি-ট্রাকের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। পরে উদ্ধারকারী ফেরি ডেকে সি-ট্রাকটি ঘাটে আনা হয়। ইঞ্জিন মেরামত করতে বিআইডব্লিউটিসি এর নারায়ণগঞ্জ-ডকইয়ার্ড থেকে মেকানিক পাঠিয়েছে। মেরামত করতে আরও দুদিন সময় লাগবে।    

ঘাট পারাপারকারী সংগ্রাম নামে একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চাকরি করি। আমার বাড়ি সারিয়াকান্দির পারতিত পরল গ্রামে। সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ থাকায় আমার চলাচলের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। 

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন,  যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সি-ট্রাক বিকল হওয়ায় যাত্রী পারাপারে সমস্যা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি ত্রুটি মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আশা করি অতি দ্রুতই ঘাট পারাপার স্বাভাবিক হবে।