পুলিশ কনস্টেবলের হাত কামড়ে দেওয়ায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৮: ৫৭

এক নারী কনস্টেবলের হাত কামড়ে দেওয়া এবং অপর এক নারী কনস্টেবলকে মারধরের অভিযোগে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে মোহনপুর থানা-পুলিশ। এরপর তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে দুপুরে সান্ত্বনা মহান্ত (২৪) নামের ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবল বাদী হয়ে হাবিবার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। গত সোমবার রাতে মোহনপুর উপজেলা সদরে হাবিবা তাঁর হাতে কামড় দেন বলে অভিযোগ। আর সাথী রানী শীল (২৫) নামের আরেক কনস্টেবলের চুল ধরে টানাটানি করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ ঘটনার পর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন সান্ত্বনা। আর প্রাথমিক চিকিৎসা নেন সাথী রানী শীল। এ দুই কনস্টেবল মোহনপুর থানায় কর্মরত।

রাজশাহী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম এরশাদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুপুরে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। এরপর বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

সান্ত্বনা মহান্ত বলেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি চিকিৎসা শেষে অসুস্থ কনস্টেবল সাথী রানী শীলকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় মোহনপুর বাজারে ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবার সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। ইনজেকশন দেওয়ার কারণে সাথী রানীর হাতে ক্যানোলা ছিল। হাবিবা জিজ্ঞাসা করেন, সাথী রানীর হাতে কী হয়েছে। তাঁরা দু-একটি কথা বলে সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে হাবিবা অশ্লীল ভাষায় গালাগাল শুরু করেন।

এ সময় হাবিবা বলেন, মোহনপুর থানায় চাকরি করতে হলে তাঁর কথামতো চলতে হবে। তিনি দুই পুলিশ কনস্টেবলকে তুই বলে সম্বোধন করেন। পুলিশ সদস্যরা এর প্রতিবাদ করলে ভাইস চেয়ারম্যান অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে হাবিবা তাঁদের দুজনকে লাথি মারেন। চুল ধরে টানাটানি করেন। তাঁর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সান্ত্বনার কবজিতে কামড় দেন হাবিবা। এরপর তিনি মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নেন। হামলার ঘটনায় কনস্টেবল সাথীও আহত হন।

এর আগে সোলায়মান নামের এক এসআইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবা। এ ছাড়া হাবিবার বিরুদ্ধে দোলা রানী নামের এক কনস্টেবলের ওপরও হামলার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তিনি বাকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য খালেদা খাতুন এবং মোখলেসুর রহমানকে জনসমক্ষে লাঞ্ছিত করেন। হাবিবার বিরুদ্ধে আগে থেকেই চারটি মামলা ছিল।

হাবিবা রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের অনুসারী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তিনি। তখন তিনি নির্যাতনের শিকার হন। ওই সময় প্রতারণার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাভোগ করেন এই নারী।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত