ধুঁকছে মধুটিলা ইকো পার্ক: আগ্রহ হারাচ্ছেন দর্শনার্থীরা

অভিজিৎ সাহা, নালিতাবাড়ী (শেরপুর)
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ১০: ২০
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪, ১১: ৪০

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা ইকো পার্কে দীর্ঘদিন ধরে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না। পাশাপাশি জনবলের সংকট এবং অব্যবস্থাপনার কারণে পার্ক অপরিষ্কার ও স্থাপনাগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দর্শনার্থীরা দিনে দিনে আগ্রহ হারাচ্ছে। তাদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থাপনা ইজারা নেওয়া ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে বন বিভাগের আওতায় ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৯০ একর বনভূমিতে পার্ক নির্মাণ শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কিছু কাজ করা হয়। তৃতীয় পর্যায়ে আরও কাজ করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে পার্কটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়ার কথা ছিল; কিন্তু ওই কাজ আর হয়নি।

সম্প্রতি পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ অংশে সীমানাপ্রাচীর নেই। লেকে খননকাজ না হওয়ায় পানি অপরিষ্কার হয়ে পড়েছে। নামে একটি শিশু পার্ক থাকলেও ভেতরে কোনো রাইড নেই। ১০টি পিকনিক স্পটের মধ্যে চারটি অচল হয়ে আছে। এগুলো সংস্কার না করায় ভাড়া দেওয়া যায় না। পুরো পার্কে মাত্র দুটি শৌচাগার আছে। তবে দর্শনার্থীদের জন্য নেই পানির ব্যবস্থা। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পাহাড়ে ওঠার সিঁড়িগুলো অপরিষ্কার। যাতায়াতের সরু রাস্তাগুলো বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে।

টাঙ্গাইল থেকে বেড়াতে আসা আবির আহমেদ বলেন, পার্কটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর, কিন্তু শিশুদের বিনোদনের কিছু নেই। পার্কটি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে এটি দৃষ্টিনন্দন হবে।

পার্কে আচার বিক্রি করা হামিদুল ইসলাম জানান, পার্ক হওয়ার পর থেকে এখানে ব্যবসা করেন। এখন লোকজন খুব কম আসে। তিন-চার বছর আগেও দিনে ৭-৮ হাজার টাকার আচার বিক্রি করতেন। এখন সারা দিনে ২-৩ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না।

পার্কের ক্যানটিন, ওয়াচ টাওয়ার, লেক ও শিশু পার্ক ইজারা নেওয়া মো. আলামিন দাবি করেন, এখানে নতুন কোনো রাইড নেই। তাই পর্যটকেরা এখানে না এসে আশপাশের বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় করছে।

এ নিয়ে কথা হলে মধুটিলা ইকো পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, পার্ক পরিষ্কারের কাজটি মূলত ইজারাদারের। এখানে জনবলের সংকট রয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থাপনার সংস্কারকাজ করা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ ও লেক খননের পরিকল্পনা রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আ ন ম আবদুর ওয়াদুদ বলেন, সুফল প্রকল্পের মাধ্যমে লেক খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নিচে পাথর থাকায় এবং খনন অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় তা এই প্রকল্পের মাধ্যমে করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া তিনটি পাহাড়ের মাঝে ঝুলন্ত সেতু করার পরিকল্পনা রয়েছে। একজন পরামর্শকসহ দুজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা পার্কে গিয়ে কী কী করা যায়, সেসব পরিকল্পনা করবেন। বিষয়টি পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এ ছাড়া তথ্যকেন্দ্রসহ ছোটখাটো সংস্কারকাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

৮ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ‘জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড’

শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জাবিতে এক দিনের শোক, উপ-রেজিস্ট্রারসহ ৪ জন বরখাস্ত

এস আলম সংশ্লিষ্টতা: ৪৫৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল ইউনিয়ন ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক

ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বাজারে বাংলাদেশ-চীনের জায়গা দখলের আশা ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত