সুন্দরবনের খালে গোসল করতে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে গেল অনার্স পড়ুয়া এক যুবক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবনের ঢাংমারী খালে গোসল করতে নামলে একটি কুমির আক্রমণ করে ওই যুবককে। এরপর ধস্তাধস্তি ও কুমিরের চোখে আঙুল দিয়ে দুর্বল করতে পেরে প্রাণে বেঁচে এসেছে ওই যুবক। 

ওই যুবকের নাম রাজু হাওলাদার (২৪)। তিনি উপজেলার পূর্ব ঢাংমারী এলাকার খ্রিষ্টান পাড়ার বাসিন্দা নজির হাওলাদারের ছেলে। 

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইফুল বারী জানান, সুন্দরবনের ঢাংমারী খালে মঙ্গলবার দুপুরে গোসল করতে নামেন রাজু। বনের খালে গোসল করতে নামতেই একটি কুমির তাঁর ওপর আক্রমণ করে। এ সময় কুমিরটি রাজুর ডান পায়ের হাঁটুর ওপরের দিকে কামড়ে ধরে। তখন রাজু কুমিরটির সঙ্গে ধস্তাধস্তি করার একপর্যায়ে কুমিরের চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। কুমিরের চোখে আঘাত করলে কুমিরটি রাজুর পায়ের কামড় ছেড়ে দেয়। তখন রাজু দ্রুত উপড়ে উঠে আসে। আর কুমিরটি খালে ডুব দিয়ে চলে যায়। 

স্টেশন কর্মকর্তা আরও বলেন, কুমিরের কামড়ে রাজুর পায়ের ক্ষত জায়গায় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ ও বাড়িতে আছেন। ঘটনার সময় খালে ভাটা থাকায় পানি কম ছিল। ভরা জোয়ার থাকলে কুমির কামড়ে ধরে পানির গভীরে নিয়ে গেলে রাজুর বাঁচার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকত না। 

এই কর্মকর্তা আরও জানান, পূর্ব সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা ইউনিয়নের পূর্ব ঢাংমারী এলাকার খ্রিষ্টানপাড়ার বাসিন্দা নজির হাওলাদারের ছেলে রাজু হাওলাদার খুলনার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনার্স পড়েন। তাঁদের বাড়ি পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী খালের পাশেই। বাড়িতে আসার পর রাজুকে খালে নেমে গোসল করতে নিষেধ করেন তার পরিবার। তারপরও সেই নিষেধ না মেনে খালে গোসল করতে নামলে এ ঘটনা ঘটে। 

বন কর্মকর্তা মো. সাইফুল বারী বলেন, ঢাংমারী খালে প্রায় সব সময়ই বড় আকারের দুইটি কুমির দেখা যায়। তাই বন বিভাগের পক্ষ থেকে খালের পাড়ের আশপাশের মানুষদের খালে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে প্রতিনিয়তই। তারপরও তারা তা না শুনে খালে গোসল ও মাছ ধরতে নামেন। যার ফলে মাঝে মধ্যেই এমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এখানকার মানুষেরা।