২৮ বছর পর নেত্রকোনার কিশোরী হেলেনা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুর রাজ্জাক ওরফে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। গতকাল শনিবার রাতে গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার হাপুনিয়া কলমাকান্দার রুস্তম আলীর কিশোরী মেয়ে হেলেনাকে ১৯৯৫ সালের ১৩ এপ্রিল এক রাতে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি অপরাধী চক্র। রাজ্জাক রুস্তম আলীর প্রতিবেশী। একই এলাকায় তাঁদের বাড়ি। অপহরণ চক্রে আ. আজিজের সঙ্গে ছিল আলাল, আব্দুর রব, শাহিদ মিয়া, রহমান, হান্নানসহ বেশ কয়েকজন। অপহরণ করে হেলেনাকে হাওর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ গুম করা হয়।

এই ঘটনায় হেলেনার বাবা রুস্তম আলী একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্তে রাজ্জাকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

২০০২ সালে আদালত হেলেনা ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধে আ. রাজ্জাকসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডে এবং অপর সাতজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ১২ জনের মধ্যে দুজন কারাগারে মারা গেছেন, আটজন কারাগারে এবং একজন পলাতক রয়েছেন।

র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, হেলেনাকে হত্যার পর আসামিরা সবাই গা ঢাকা দেন। এর মধ্যে পুলিশ তদন্ত করে অভিযোগপত্রও দেয় আদালতে। বিচার শেষ হলেও আসামি আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন পলাতক। দীর্ঘদিন তিনি এলাকায় যোগাযোগ করেননি। 

রাজ্জাক কিছুদিন সাভারে ছিলেন। এ সময় তিনি রিকশা চালাতেন। এরপর উত্তরায় আসেন। সেখানে ছয় বছর থাকার পর গাজীপুরের গাছা এলাকায় যান। সেখানে নাম পরিবর্তন করে তিনি হয়ে যান জাকির হোসন। এই নামে তিনি এনআইডি কার্ডও নেন। রেখেছেন দাঁড়ি; চুলও বড় করেছেন। দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক হন এই সময়ে। এভাবে তিনি ২৮ বছর পলাতক ছিলেন।