ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের দুই ছাত্রকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাঁরা নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ ও জীবনের নিরাপত্তা এবং হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর শাখা ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির সামনে ‘সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন বক্তব্য রাখেন—রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী ভূগোল তৃতীয় বর্ষের সারেউন রহমান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাজিবা খাতুন, অর্থনীতি চতুর্থ বর্ষের আবু হুরাইরা, সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ফারদিন রাফি, দর্শন তৃতীয় বর্ষের মেহেরাব হোসেন, ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের মো. রানা হামিদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘আমরা পড়াশোনা করতে এসেছি, মরতে আসিনি। আমাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। যারা কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করেছে, তারা সন্ত্রাসী। তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা ফরিদপুরে নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ চাই, জীবনের নিরাপত্তা চাই।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম কুমার সাহা ঘটনাস্থলে এসে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, ‘এ দুই শিক্ষার্থী সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জানাই। শিক্ষার পরিবেশ কলুষিত করছে যে সব সন্ত্রাসী, তাঁদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকবে এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। এ জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সব মহলকে সোচ্চার হওয়ার দাবি জানাই।’
গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ফরিদপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান। পরে সার্কিট হাউসে অবস্থান নেন। এ সময় সার্কিট হাউস চত্বরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইতিহাস বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জামিম হোসেন (২০) ও একই কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে (২২) কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটে।
আহত জামিম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কলেজের হোস্টেলে থাকি। ওই দিন ফরিদপুরে মন্ত্রী আব্দুর রহমান এসেছিলেন। ছাত্রলীগের সঙ্গে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আমাদের ক্ষুধা লাগায় আগেভাগে চলে আসছিলাম। এ সময় অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের তন্ময়, শান্ত ও রানাসহ ১০-১৫ জন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমাকে ধারণা দেওয়া হয়েছিল, নেতারা নিজেরা বসে সমস্যাটি মিটিয়ে ফেলবেন। আমি থানার বাইরে। অভিযোগ কার কাছে দিয়ে গেছে তা আমার জানা নেই। আমি থানায় গিয়ে খবর নেব। অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই মামলা হবে।’