রাজধানীর ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে মধ্যরাতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ভাই-বোন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রাইভেট কারের চালককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এই আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো আসামি হচ্ছেন রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের সাইফ বিন নবী।

দুপুরের পর সাইফ বিন নবীকে আদালতে হাজির করে ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামি ও তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে শুনানি গ্রহণ করে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা এক দিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়।

ঈদের দিন গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের চালকসহ আরোহী দুই চাচাতো ভাই-বোন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক শিশুও আহত হয়েছে। ঘটনার পরপরই চালকসহ গাড়িটিকে আটক করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন মোটরসাইকেলের চালক শামীম (৩৫) ও জান্নাত (১৮)। আহত শিশু সাদিয়া (৮) তাদের ভাগনি। তাঁদের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলায়, থাকতেন কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়। জান্নাত কুর্মিটোলা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে প্রাইভেট কারটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে তিনজনই পড়ে গিয়ে আহত হন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ি পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার ভোরে চিকিৎসক জান্নাতকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শামীমেরও মৃত্যু হয়।

নিহত জান্নাতের বাবা বাহাউদ্দিন হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ভাতিজা শামীম মাটিকাটা থেকে তাঁদের কুড়িল বিশ্বরোডের বাসায় বেড়াতে আসেন। পরে শামীম তাঁর ভাগনি সাদিয়া (৮) ও চাচাতো বোন জান্নাতকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে মাটিকাটার বাসায় ফিরছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আরেকটি মোটরসাইকেলে ছিলেন সাদিয়ার মা-বাবা ও দুই ভাই। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে শামীমের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে একটি প্রাইভেট কার সজোরে ধাক্কা দেয়।

এ ঘটনায় নিহত জান্নাতের বাবা মো. বাহাউদ্দিন শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়েছে, প্রাইভেট কারের চালক ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।