সাভারের আশুলিয়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে দুটি লাইসেন্স করা অস্ত্রসহ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে ডাকাতেরা। আজ বুধবার ভোরেটঙ্গী-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন আনোয়ার জং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। 

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে আশুলিয়া পুলিশ ক্যাম্পের দূরত্ব এক কিলোমিটারের কিছু বেশি। শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ব্যস্ততম এলাকায় এমন দুর্ধর্ষ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ, র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ওবায়দুল ইসলাম তালুকদার আশুলিয়ার তালুকদার ফিলিং স্টেশনের মালিক। সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের চাচাতো ভাই। 

পুলিশ জানায়, বাড়ির পেছনের বারান্দা দিয়ে প্রবেশ করেছে ডাকাতেরা। বাঁশ বেয়ে বারান্দায় উঠেছে ডাকাত দল। খোলা বারান্দা দিয়ে ঢুকে জানালা কেটে ঘরে প্রবেশ করে তারা। পরে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী ওবায়দুল ইসলাম তালুকদার বলেন, তিনতলা বাড়ির দোতলার গ্রিল কেটে সাত থেকে আট সদস্যের অস্ত্রধারী ডাকাত ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে প্রবেশ করেই বাড়ির দুই ও তিনতলায় বসবাসকারী সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর ঘরে থাকা নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি পিস্তল ও একটি শটগানসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। 

এদিকে ঘটনাস্থল পুলিশ ক্যাম্পের পাশে হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও আশুলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা আল কামরান বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। যাতে এমন ঘটনা না ঘটে।’ 

সাভার সচেতন নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন খান নঈম বলেন, ‘পুলিশি তৎপরতা যদি যথাযথ থাকে, তাহলে অপরাধীরা এমন বড় ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস পাওয়ার কথা নয়। যদি ঘটনাটি পুলিশের ক্যাম্পের অদূরে হয়ে থাকে তাহলে—এটা অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক।’ 

আশুলিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি ভোর ৪টা ৩২ মিনিটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি ৪টা ৩৭ মিনিটে। ভুক্তভোগীরা বলেছেন রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তাঁদের ঘরে প্রবেশ করেছে সাত-আটজনের একটি দস্যু দল। দুটি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা মামলা দায়েরের জন্য থানায় গিয়েছেন। আমরা আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করছি। তদন্ত করে দ্রুতই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

পুলিশ ক্যাম্পের অদূরে ডাকাতির ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, ‘ক্যাম্প থেকে পুলিশের একটি টহল টিম ছিল আশুলিয়ার রুস্তমপুর এলাকায় ও থানার টহল টিম ছিল কাঠগড়া এলাকায়। দুটি টিমই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছে। ক্যাম্পের কাছে বলে কথা নয়, আমার ঘটনার পর থেকেই ননস্টপ কাজ করছি।’