বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ চার আওয়ামী লীগ নেতাকে জরিমানা করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। বরগুনা-১ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাঈদ আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর প্রতিবেদন পাঠান। 

প্রতিবেদনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমানকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা ও নির্বাচন কমিশনে ডেকে ‘কঠোর সতর্ক’ করারও সুপারিশ করা হয়েছে। 

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দেওয়া শোকজের জবাব দেওয়ার পর বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ ৪ আওয়ামী লীগ নেতাকে জরিমানার সুপারিশ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। 

গত ১০ ডিসেম্বর বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ নয় জন আওয়ামী লীগ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। 

জরিমানার সুপারিশ করা চার জন হলেন-বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান, তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবী উল কবির জোমাদ্দার ও তালতলীর কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারেক মাঝি। 

এর মধ্যে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে পাঁচ হাজার টাকা এবং বাকি চার নেতাকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। 

• এমপি শম্ভুর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুসহ নয়জন আওয়ামী লীগ নেতাকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তিন দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। 

১২ ডিসেম্বর আইনজীবীর মাধ্যমে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে জবাব দেন শম্ভুসহ নয় আওয়ামী লীগ নেতা। 

জবাব পাওয়ার পর একই অভিযোগ থেকে পাঁচজনকে অব্যাহতি দিয়ে বাকি চারজনের বিরুদ্ধে জরিমানার সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।  

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ ডিসেম্বর বরগুনার তালতলী উপজেলার কলবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করা হয়। ওই সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তালতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত দত্তকে উদ্দেশ করে অপমানমূলক বক্তব্য দেন। এ ছাড়া তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি উল কবির জোমাদ্দার প্রার্থী পক্ষে ভোট চান, আমতলী আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান ‘১৮ তারিখের পর খেলা শুরু হবে, ভোট তো দূরে থাক, স্বতন্ত্র প্রার্থী এজেন্ট খুঁজে পাবেনা মর্মে হুমকি দেন।’ কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারেক মাঝি ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মুগুর দিয়ে হাত পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দেন।’

নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি এসব বক্তব্যের ভিডিও স্থিরচিত্র এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাক্ষী প্রমাণ সংগ্রহ করে অভিযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমান বলেন, ‘পোস্টারগুলো অনেক আগে লাগানো হয়েছিল। তফসিল ঘোষণার পরে অপসারণ করেছি। দু-একটি স্থানে ভুলক্রমে ছিল। আমি আচরণবিধি মেনেই চলছি।’ 

এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ওখানে মোটরসাইকেলে আমরা মিছিল দিয়ে যাইনি। আগে পড়ে কোনো মিছিল স্লোগান দিয়ে যাইনি। সেখানে আমরা বক্স মাইক ব্যবহার করেছি। আমরা সচেতন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় এমন কিছু করিনি।’ প্রতিবেদনের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বিধি মোতাবেক জবাব দিয়েছি। এরপরও যদি কিছু দরকার হয় সেটার জন্যও প্রস্তুত।’