কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
ফেসবুক টকশোতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। নানা সমালোচনার পর তাঁর পদত্যাগপত্র জমার মাঝে ওই টকশোর উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদ ওরফে নাহিদ রেইনসকে নিয়েও সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে।
এই নাহিদের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদরে। নিজের ফেসবুক পেইজে লাইভে লাগামহীন ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে তীব্র রোষানলে পড়েন সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতা-কর্মী’ শিরোনামে প্রচারিত অনুষ্ঠানটির আগে ‘লাইভ রোস্টিং’ নামে অনুষ্ঠানটির প্রচার চালান নাহিদ। সেখানে দেওয়া বক্তব্য ও পরে নায়িকা মাহিয়া মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া ২ বছর আগের একটি অডিও ফাঁসের জেরে তুমুল সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ডা. মুরাদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ উঠছে, নাহিদ রেইনস ওই লাইভে প্রতিমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য করার জন্য উসকানিমূলক প্রশ্ন করেছেন। আর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নাহিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি—নাহিদ রেইনস নামে ছেলেটির কাছে বোধ হয় একটি টিভি ক্যামেরা আছে। সে বিভিন্ন সময় মন্ত্রী মহোদয়কে উসকানিমূলক কথা বলেছে। তাঁর বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাহিদ রেইনস ওরফে মহিউদ্দিন হেলাল পটিয়া পৌর সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম রহমান সওদাগরের বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম কর্মকর্তা এ টি এম আবুল কাশেমের ছেলে। তাঁরা দুই ভাই। নাহিদ রেইনসের বাবা এ টি এম আবুল কাশেম দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং চাচা নব্বই দশকের সময় চট্টগ্রামের ছোটপুল এলাকায় এক ছাত্রনেতাকে হত্যার দায় নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। নাহিদ অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানে চুরির দায়ে বহিষ্কার হয়ে পড়াশোনা শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণা ও নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতা-কর্মী’ শিরোনামে নাহিদের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন ডা. মুরাদ হাসান। লাইভের একপর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করার আমন্ত্রণ জানান নাহিদ। ওই সময় তাঁর অঙ্গভঙ্গি ও হাসি নিয়ে এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে নানা ট্রল হচ্ছে। তাঁর শাস্তির দাবিও তুলেছেন অনেকে।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নাহিদ হেলালকে ‘প্রতারক ও অনুপ্রবেশকারী’ দাবি করে বলছেন, এক সময় জামায়াতের পক্ষে অনলাইনে প্রোপাগান্ডা চালানো এই নাহিদ হেলাল মূলত প্রতারণার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতেই আওয়ামী লীগকে ঢাল বানাতে চেয়েছেন। অতি উৎসাহী হয়ে তিনি একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। আবার অন্য অংশের দাবি, নাহিদ হেলাল একাই নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডার জবাব দিয়ে আসছেন অনলাইনে।
নাহিদ হেলাল বলেন, ‘আমার কোন অপরাধ নেই, জামাত-শিবির তো সবসময় প্রোপাগান্ডা করছে। আমি আওয়ামী লীগের লোক আমাকে এখন বানানো হচ্ছে জামাত-শিবির। যে যতোই অপচেষ্টা করুক আমাকে জামাত-শিবির বানাতে পারবেনা।’
এদিকে নাহিদ হেলাল ফেসবুক লাইভে এসে সেদিনের টকশোর ঘটনায় নিজেকে একেবারেই নির্দোষ দাবি করে বলছেন, মুরাদ হাসানের বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগই তাঁর ছিল না। সেসব বক্তব্যে তখনই বিব্রত হয়েছিলেন নাহিদ এবং তিনি তাঁর উপযুক্ত সাজাই পেয়েছেন।
একসময় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী নাহিদ হেলাল চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের হালিশহরে কে-ব্লকের হাউজিং সোসাইটিতে তাঁর বাসা ও স্টুডিও। সেখান থেকেই বিভিন্ন সময় তিনি লাইভ করেন। নাহিদ এখনো তাঁর হালিশহরের বাসায়ই আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আলোচিত এই নাহিদ হেলালের বিরুদ্ধে প্রতারণার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন প্রবাসী মিরাজ নাঈমের কাছ থেকে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশি মুদ্রামানে নগদ ও চেকের মাধ্যমে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অন্যতম। এ ঘটনায় নাহিদ গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।
ওই মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ‘জীবনায়ন’ নামে একটা সিনেমার প্রযোজক বানানোর কথা বলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মিরাজ নাঈমের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন নাহিদ। পরে সেই সিনেমা করা হয়নি, টাকাও ফেরত দিচ্ছিলেন না। সেই ঘটনায় নাহিদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেন মিরাজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার তিন দিন পর জামিনে মুক্ত হন নাহিদ রেইনস।
তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের আরও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে দীর্ঘদিন অনলাইনে প্রচার চালিয়ে আসা চৌধুরী সাদিক জানান, নাহিদ একসময় ‘বাংলাদেশিজম’ নামে একটা মুভমেন্ট চালু করেছিল। শুরুর দিকে সেই বাংলাদেশিজম থেকেই আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালানো হতো। তবে তিনি নিজের টাইমলাইনে চুপচাপই ছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতারিত করার বিস্তর অভিযোগ ছিল। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘একসময় হঠাৎ কিছু নেতার সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে সে দেখলাম আওয়ামী লীগ বনে গেছে। মূলত, প্রতারণার বিষয়গুলো জায়েজ করতেই সে আওয়ামী লীগের ছায়ায় আসার চেষ্টা করেছে।’
এমনকি খোদ আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের সঙ্গেও প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সামিউল বাসির বিন হোসেন গত সোমবার মুরাদ হাসান নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ রেইনসকে ‘প্রফেশনাল প্রতারক’ আখ্যা দেন। ওই পোস্টে নাহিদ সম্পর্কে সামিউল লেখেন, ‘প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের সাথে লাইভে দাঁত ক্যালানো নাহিদ রেইন্স সম্পর্কে আমার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ২০১২ সালে কাওরানবাজারে আমার অফিসে এনে হাত পা বেধে পুলিশে তুলে দিয়েছিলাম এই বাটপারটাকে। ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানানোর নাম করে আমার দুলাভাইয়ের টাকা মেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো দিনের পর দিন। জামিনে বের হয়ে ঢাকা শহরে এরপর পা রাখেনি পরের কয়েক বছর। নিজ দলের আরও অনেক হাই প্রোফাইল নেতার সাথে ইদানীং এই প্রফেশনাল প্রতারক নাহিদ রেইন্সের দাত ক্যালানো ছবি দেখি। বর্তমানে সে অনলাইনেরও অনেক বড় একজন মোটিভেশনাল স্পিকার। দেশ বিদেশে লাখ লাখ ফলোয়ার তার। আমি শুধু অবাক হয়ে একটা কথাই ভাবি, মানুষের রুচিবোধ কত নিচে নেমে গেছে এখন।’
টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিদ চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘আমার কাছে কেউ যদি টাকা পায় তবে সে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। আমি কারও কাছ থেকে কোন প্রলোভনে টাকা পয়সা নিইনি। আমি তো বাসায় আছি গোয়েন্দা সংস্থার লোক আমাকে খুঁজতে আসতেই পারে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টের মধ্য দিয়ে উঠে আসা প্রতারনার অভিযোগসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে নাহিদ হেলালের সঙ্গে অনেক চেষ্টার পরও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। তাঁর বাসায়ও প্রবেশ করতে পারছেন না কেউ।
তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে যেসব নিউজ হচ্ছে এসব কিছু একটি মহল শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য করছে।’ তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন নাহিদ।
ফেসবুক টকশোতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। নানা সমালোচনার পর তাঁর পদত্যাগপত্র জমার মাঝে ওই টকশোর উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদ ওরফে নাহিদ রেইনসকে নিয়েও সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে।
এই নাহিদের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদরে। নিজের ফেসবুক পেইজে লাইভে লাগামহীন ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে তীব্র রোষানলে পড়েন সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতা-কর্মী’ শিরোনামে প্রচারিত অনুষ্ঠানটির আগে ‘লাইভ রোস্টিং’ নামে অনুষ্ঠানটির প্রচার চালান নাহিদ। সেখানে দেওয়া বক্তব্য ও পরে নায়িকা মাহিয়া মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া ২ বছর আগের একটি অডিও ফাঁসের জেরে তুমুল সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ডা. মুরাদ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ উঠছে, নাহিদ রেইনস ওই লাইভে প্রতিমন্ত্রীকে অশালীন মন্তব্য করার জন্য উসকানিমূলক প্রশ্ন করেছেন। আর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নাহিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা যতটুকু জেনেছি—নাহিদ রেইনস নামে ছেলেটির কাছে বোধ হয় একটি টিভি ক্যামেরা আছে। সে বিভিন্ন সময় মন্ত্রী মহোদয়কে উসকানিমূলক কথা বলেছে। তাঁর বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাহিদ রেইনস ওরফে মহিউদ্দিন হেলাল পটিয়া পৌর সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম রহমান সওদাগরের বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম কর্মকর্তা এ টি এম আবুল কাশেমের ছেলে। তাঁরা দুই ভাই। নাহিদ রেইনসের বাবা এ টি এম আবুল কাশেম দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং চাচা নব্বই দশকের সময় চট্টগ্রামের ছোটপুল এলাকায় এক ছাত্রনেতাকে হত্যার দায় নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। নাহিদ অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানে চুরির দায়ে বহিষ্কার হয়ে পড়াশোনা শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণা ও নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতা-কর্মী’ শিরোনামে নাহিদের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন ডা. মুরাদ হাসান। লাইভের একপর্যায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে মন্তব্য করার আমন্ত্রণ জানান নাহিদ। ওই সময় তাঁর অঙ্গভঙ্গি ও হাসি নিয়ে এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে নানা ট্রল হচ্ছে। তাঁর শাস্তির দাবিও তুলেছেন অনেকে।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নাহিদ হেলালকে ‘প্রতারক ও অনুপ্রবেশকারী’ দাবি করে বলছেন, এক সময় জামায়াতের পক্ষে অনলাইনে প্রোপাগান্ডা চালানো এই নাহিদ হেলাল মূলত প্রতারণার অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতেই আওয়ামী লীগকে ঢাল বানাতে চেয়েছেন। অতি উৎসাহী হয়ে তিনি একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। আবার অন্য অংশের দাবি, নাহিদ হেলাল একাই নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডার জবাব দিয়ে আসছেন অনলাইনে।
নাহিদ হেলাল বলেন, ‘আমার কোন অপরাধ নেই, জামাত-শিবির তো সবসময় প্রোপাগান্ডা করছে। আমি আওয়ামী লীগের লোক আমাকে এখন বানানো হচ্ছে জামাত-শিবির। যে যতোই অপচেষ্টা করুক আমাকে জামাত-শিবির বানাতে পারবেনা।’
এদিকে নাহিদ হেলাল ফেসবুক লাইভে এসে সেদিনের টকশোর ঘটনায় নিজেকে একেবারেই নির্দোষ দাবি করে বলছেন, মুরাদ হাসানের বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগই তাঁর ছিল না। সেসব বক্তব্যে তখনই বিব্রত হয়েছিলেন নাহিদ এবং তিনি তাঁর উপযুক্ত সাজাই পেয়েছেন।
একসময় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী নাহিদ হেলাল চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের হালিশহরে কে-ব্লকের হাউজিং সোসাইটিতে তাঁর বাসা ও স্টুডিও। সেখান থেকেই বিভিন্ন সময় তিনি লাইভ করেন। নাহিদ এখনো তাঁর হালিশহরের বাসায়ই আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আলোচিত এই নাহিদ হেলালের বিরুদ্ধে প্রতারণার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন প্রবাসী মিরাজ নাঈমের কাছ থেকে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশি মুদ্রামানে নগদ ও চেকের মাধ্যমে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অন্যতম। এ ঘটনায় নাহিদ গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।
ওই মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ‘জীবনায়ন’ নামে একটা সিনেমার প্রযোজক বানানোর কথা বলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মিরাজ নাঈমের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন নাহিদ। পরে সেই সিনেমা করা হয়নি, টাকাও ফেরত দিচ্ছিলেন না। সেই ঘটনায় নাহিদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেন মিরাজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নাহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার তিন দিন পর জামিনে মুক্ত হন নাহিদ রেইনস।
তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের আরও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে দীর্ঘদিন অনলাইনে প্রচার চালিয়ে আসা চৌধুরী সাদিক জানান, নাহিদ একসময় ‘বাংলাদেশিজম’ নামে একটা মুভমেন্ট চালু করেছিল। শুরুর দিকে সেই বাংলাদেশিজম থেকেই আওয়ামী লীগ বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালানো হতো। তবে তিনি নিজের টাইমলাইনে চুপচাপই ছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতারিত করার বিস্তর অভিযোগ ছিল। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘একসময় হঠাৎ কিছু নেতার সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে সে দেখলাম আওয়ামী লীগ বনে গেছে। মূলত, প্রতারণার বিষয়গুলো জায়েজ করতেই সে আওয়ামী লীগের ছায়ায় আসার চেষ্টা করেছে।’
এমনকি খোদ আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের সঙ্গেও প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সামিউল বাসির বিন হোসেন গত সোমবার মুরাদ হাসান নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যেই ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ রেইনসকে ‘প্রফেশনাল প্রতারক’ আখ্যা দেন। ওই পোস্টে নাহিদ সম্পর্কে সামিউল লেখেন, ‘প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের সাথে লাইভে দাঁত ক্যালানো নাহিদ রেইন্স সম্পর্কে আমার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ২০১২ সালে কাওরানবাজারে আমার অফিসে এনে হাত পা বেধে পুলিশে তুলে দিয়েছিলাম এই বাটপারটাকে। ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানানোর নাম করে আমার দুলাভাইয়ের টাকা মেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো দিনের পর দিন। জামিনে বের হয়ে ঢাকা শহরে এরপর পা রাখেনি পরের কয়েক বছর। নিজ দলের আরও অনেক হাই প্রোফাইল নেতার সাথে ইদানীং এই প্রফেশনাল প্রতারক নাহিদ রেইন্সের দাত ক্যালানো ছবি দেখি। বর্তমানে সে অনলাইনেরও অনেক বড় একজন মোটিভেশনাল স্পিকার। দেশ বিদেশে লাখ লাখ ফলোয়ার তার। আমি শুধু অবাক হয়ে একটা কথাই ভাবি, মানুষের রুচিবোধ কত নিচে নেমে গেছে এখন।’
টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিদ চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘আমার কাছে কেউ যদি টাকা পায় তবে সে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। আমি কারও কাছ থেকে কোন প্রলোভনে টাকা পয়সা নিইনি। আমি তো বাসায় আছি গোয়েন্দা সংস্থার লোক আমাকে খুঁজতে আসতেই পারে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টের মধ্য দিয়ে উঠে আসা প্রতারনার অভিযোগসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে নাহিদ হেলালের সঙ্গে অনেক চেষ্টার পরও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে। তাঁর বাসায়ও প্রবেশ করতে পারছেন না কেউ।
তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে যেসব নিউজ হচ্ছে এসব কিছু একটি মহল শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য করছে।’ তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন নাহিদ।
হাফ শার্ট আর ছাই রঙের প্যান্ট পরে থাকা সাবেক আইজিকে প্রিজন থেকে সরাসরি গারদে নিয়ে যায়। দুই পাশে দুজন পুলিশ সদস্য তার হাত ধরে ছিলেন। তিনি ছিলেন মাথা নিচু করে। আব্দুল্লাহ আল মামুনের পর পরই গারদে রাখার জন্য নেওয়া হয় জিয়াউল আহসানকে। তিনি ফুল হাতা শার্ট ও কালো প্যান্ট আর কেডস পরে ছিলেন...
১৩ মিনিট আগেমানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশের সাবেক আটজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে মধ্যে পুলিশের সাবেক প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকও রয়েছেন...
৪২ মিনিট আগেরংপুরের গঙ্গাচড়ায় গরুর খড় খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের নগরবন্দ এলাকায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। আহতদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার করে গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য...
১ ঘণ্টা আগেবিদ্যুতের অপচয় নিয়ন্ত্রণ এবং ভুতুড়ে বিলের হয়রানি থেকে গ্রাহকদের মুক্তি দিতে ২০০৪ সালে সারা দেশে প্রিপেইড মিটার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই থেকে সিলেট নগরের বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও মার্কেটে প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আওতাধীন...
১ ঘণ্টা আগে