চট্টগ্রামের ৩ আসনে জোট-মহাজোটের টেনশন

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ৩৫
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ২৫

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে কারও কপাল পুড়েছে, আবার কারও কপাল খুলেছে। মনোনয়ন পাওয়া না-পাওয়ার ঘটনায় আসনগুলোর কোথাও উল্লাস, কোথাও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মনোনয়ন নিশ্চিত করলেও এর মধ্যে তিন আসনে ‘জোট-মহাজোটের টেনশন’ ভর করেছে। 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি এবারও ১৪ দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য রাখার পর এই তিন আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের তরফে উল্লিখিত বক্তব্য আসে। 

টেনশনের তিন আসন হচ্ছে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারি) ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী)। এর মধ্যে ফটিকছড়ি আসনের সংরক্ষিত এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পাত্তা পায়নি জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বর্তমান সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। বিবেচনায় আসেনি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমেদও। তবে জোট-মহাজোটের ভোটে আওয়ামী লীগ এই আসন ছেড়ে দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। 

এই বিষয়ে ফটিকছড়ি থেকে মনোনয়ন পাওয়া খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। দীর্ঘদিন নৌকাবঞ্চিত ফটিকছড়িতে এবার নৌকার পতাকা ওড়াব ভোটের মাধ্যমে।’ জোট-মহাজোটের হিসাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সেটা সময়ের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান। 

হাটহাজারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম। কিন্তু এখানকার বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টির নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ ছাড়া বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর উত্তম ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের (সাবেক বিএনপি) ভিপি নাজিম উদ্দিনও আওয়ামী লীগের আনুকূল্যে এই আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। জোটবদ্ধ নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এখান থেকেও সরে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

তবে এই বিষয়ে হাটহাজারী থেকে মনোনয়ন পাওয়া আবদুস সালাম বলেন, ‘হাটহাজারী আসনে দীর্ঘ ৪৮ বছর নৌকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এলাকার মানুষ ভোটের মাধ্যমে এবার নৌকাকে জেতাবে।’ এই আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হবে না বলেও জানান তিনি।   

এদিকে বাঁশখালী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত করা বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমানেরও টেনশন জোট নিয়ে। কারণ, এখানে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী প্রার্থী সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ভোটের মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। জোটবদ্ধ ভোট হলে এখান থেকেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোটের মাঠে থামিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
 
এই বিষয়ে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘জোটবদ্ধ নির্বাচনের আলোচনা এখনো চলছে। আমরা জাতীয় পার্টি ৭০টি আসন চেয়েছি। বাঁশখালী থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে ভোটের মাঠে থাকব। যাঁরা ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, দলের সিদ্ধান্ত মানার ক্ষেত্রে তাঁদের কাছ লিখিত নেওয়া হয়েছে।’ জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে ভোটের চিত্র অন্য রকম হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত