ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ ৮ শ্রমিকের একজনের মরদেহ উদ্ধার

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ২০: ৪৭

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সাগরে ড্রেজারসহ ডুবে নিখোঁজ ৮ শ্রমিকের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাহিদ (২৯) নামে এক শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান।

ইউএনও আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এইমাত্র একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম জাহিদ। তাঁর মামাতো ভাই মরদেহ শনাক্ত করেছেন। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

নিখোঁজ সবাইকে মৃত বলে ধরে নেওয়া যায় কি না এ প্রশ্নে ইউএনও বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। ড্রেজারের ভেতরে আটকা পড়ে থাকলে তো বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই। আমরা নিখোঁজদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। ড্রেজার ডুবে নিখোঁজের তালিকায় ওই ব্যক্তিও ছিলেন। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

ওই শ্রমিকেরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বসুন্ধরা পয়েন্টে বালু তোলার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে সকালের দিকে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয় বলে জানান কর্মকর্তারা।

গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে এই আট শ্রমিক নিখোঁজ হন। নিখোঁজ ৮ শ্রমিক হলেন—   সদর উপজেলার চর জৈনকাঠি গ্রামের মোল্লা বাড়ির আব্দুর রহমানের ছেলে মো. তারেক মোল্লা, আনিচ মোল্লার দুই ছেলে ছেলে শাহীন মোল্লা ও ইমাম মোল্লা এবং আব্দুল হক মোল্লার ছেলে মাহমুদ মোল্লা। এ ছাড়া ওই গ্রামের হাওলাদার বাড়ির ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে মো. বসার হাওলাদার, নুরু সর্দারের ছেলে মো. আলম সর্দার, সেকান্দার রারির ছেলে মো. জাহিদ রারি এবং ফকির বাড়ির রহমান ফকিরের ছেলে মো. আল-আমিন ফকির।

উপজেলার ১৬ নং সাহেরখালি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ৩ নং বসুন্ধরা এলাকায় বেড়িবাঁধ থেকে ১ হাজার ফুট গভীরে সাগরের মাঝে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজের বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন রাখা ছিল। রাতের ঝড়ে কবলে সেখান থেকে আট শ্রমিক নিখোঁজ হন।

বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ড্রেজারে আমিসহ নয়জন শ্রমিক ছিলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। বাকিরা ড্রেজারেই অবস্থান করছিলেন।’

ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম জানান, ঘটনাস্থলে আরও ছয়টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে অন্য শ্রমিকেরা নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও দুর্ঘটনায় পতিত ড্রেজারের আট শ্রমিক সেখানেই থেকে গেছেন। 

ড্রেজার ম্যানেজার আরও জানান, ড্রেজারের বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকেরা দিন-রাত ড্রেজারেই থাকেন। সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমেরও ব্যবস্থা রয়েছে। 

সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজিত একটি ড্রেজার আট শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনেছি। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এরপরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেল না বুঝতে পারছি না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত