সহিংসতার অভিযোগে চট্টগ্রামে আরও ২ মামলা, গ্রেপ্তার সাত শতাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৮: ৫০

কোটা নিয়ে সংঘর্ষের অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর দুই থানায় আরও দুটি মামলা হয়েছে। এই নিয়ে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলা মিলে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।

১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর ও ১৮ জুলাই নগরের বহদ্দারহাটে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একই সময়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। চট্টগ্রাম নগরে সহিংসতার পৃথক ঘটনায় তাৎক্ষণিক পাঁচজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।

এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও বাকলিয়া থানায় ১৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩০ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানায় দুটি মামলা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানায় সর্বশেষ হওয়া মামলার বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে ভাঙচুর, বোমা বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন নাশকতার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ৭০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।

অন্যদিকে পাঁচলাইশ থানার মামলাটির বিষয়ে থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, গতকাল মারামারির অভিযোগে এজাহারভুক্ত ২৮ জনসহ বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দেখিয়ে একজন ছাত্রলীগ কর্মী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার বাদী ওই ঘটনায় আহত হয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, আজ পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে ৩৭৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৬ জনকে। চট্টগ্রাম নগরীতে দায়ের হওয়া ১৬টি মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

এদিকে কোটা আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম নগরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলাগুলোতেও বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড, মিরসরাইসহ বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা করা হয়। 

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ বলেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলার ১০টি থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আজ পর্যন্ত ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় হওয়া এসব মামলায় বেশির ভাগই অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে। যাঁরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত, শিবিরসহ বাম সংগঠনের নেতা-কর্মী। অবশ্য পুলিশ দাবি করছে, ঘটনার সময় সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়াসহ বিভিন্ন তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ১৬ জুলাই থেকে বিএনপি, যুবদল, কৃষক দলসহ তাঁদের ৩১০ জন নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনটি ছাত্রদের ছিল। ওই আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি কোনোভাবেই যুক্ত ছিল না। এরপরও হয়রানির উদ্দেশ্যে আমাদের বিভিন্ন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করছে।’ গ্রেপ্তারের ভয়ে নেতা-কর্মীরা এখন ঘরছাড়া বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের ভিন্ন বক্তব্যের পরও সালমা হত্যায় নিজ ভাষ্য়ে অনড় র‍্যাব

ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে: সারজিস আলম

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য ডাক্তারের তদবিরের ঘোষণা

এই সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ কি আছে, অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশ্ন

বাংলাদেশ সিরিজের আগে ধাক্কা খেয়েই চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত