চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ঘরে ঢুকে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছৈয়দুরখীল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বৃদ্ধের নাম আমির হোসেন (৬৫)। তিনি ওই এলাকার আব্দুল নবীর সন্তান এবং পেশায় একজন কৃষক। আহতেরা হলেন তাঁর স্ত্রী জুলেখা বেগম (৫৫) ও ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫)। তাঁরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল মোনাফ জানান, রাত ১০টার দিকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে একদল সন্ত্রাসী ছৈয়দুরখীল গ্রামে বৃদ্ধ আমির হোসেনের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আমিরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। তাঁকে বাঁচাতে স্ত্রী ও ছেলে এগিয়ে এলে তাঁদেরও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তাঁদের উদ্ধার করে রাত ১১টার দিকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৩টার দিকে চিকিৎসক আমিরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানান, নিহত বৃদ্ধের আরেক ছেলে সাইফুল আলম একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে এর আগে যুক্ত ছিল। সে উকিল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিল। এই ঘটনায় পুলিশ ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দুই পিস্তল, তিন বন্দুক, তিন এলজি, দুইটি পাইপগান ও ২৭ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছিল। অন্যদিকে নিহত উকিল সন্ত্রাসী তোফায়েল গ্রুপের প্রধান তোফায়েলের বড় ভাই। বড় ভাইকে হত্যার বদলা নিতেই তোফায়েল গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে সাইফুলের পরিবারের ওপর এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে ধারণা তাঁদের।

সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সরফভাটার চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়, একাধিক ডাকাতি এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। প্রশাসনকে বারবার বলার পরও তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এই সন্ত্রাসী গ্রুপকে আইনের আওতায় আনতে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোবারক আলী বলেন, পাহাড়ে অবস্থানরত সন্ত্রাসীরা পূর্ব বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।