মিনহাজ তুহিন, চবি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দুটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার অভিযোগ উঠেছে। বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও দুই বিভাগে ৯ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এবার নির্বাচনী বোর্ড আহ্বান করা হয়েছে। বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন বলছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভাগে শিক্ষক লাগবে কি না তা নির্ধারণ করবে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি। সেখানে আগবাড়িয়ে অন্য কারও বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। আমরা উপাচার্যকে বারবার বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে যেন সমুন্নত রাখেন। কিন্তু তিনি বারবার আইন লঙ্ঘন করেই যাচ্ছেন। আমরা বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করব।’
বিভাগ দুটি হলো আইন ও বাংলা বিভাগ। এর মধ্যে বাংলা বিভাগে সাতজন ও আইন বিভাগে দুজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার আইন বিভাগের ও সোমবার বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কোনো বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হলে প্রথমে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সভায় তা অনুমোদন করতে হয়। সভায় অনুমোদিত হলে তা রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠাবেন বিভাগের সভাপতি। পরবর্তীকালে রেজিস্ট্রার বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে উপাচার্যের সম্মতি নিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন। পরে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা আবেদনপত্র সংগ্রহ করে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটিতে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরণ করবে।
পরিকল্পনা কমিটি যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের তালিকা সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানোর পর তাঁদের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করার নিয়ম। তবে বিভাগ দুটির ক্ষেত্রে এসবের কিছুই করা হয়নি। উল্টো বারবার পরিকল্পনা কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও ৯ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে যে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে, সেটিতেও ইউজিসির নির্দেশনা মানা হয়নি।
বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি বাতিল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছে বাংলা বিভাগের সভাপতি। অন্যদিকে প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে নীতিবহির্ভূত উল্লেখ করে শিক্ষক সমিতির কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। একইভাবে রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছিলেন আইন বিভাগের তৎকালীন সভাপতি।
এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে পদের বিপরীতে যেসব প্রার্থী আবেদন করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সেসব আবেদন পরিকল্পনা কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাই হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেসব আবেদন বিভাগ দুটির পরিকল্পনা কমিটিতে যাচাই-বাছাই করা হয়নি। বিভাগ প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই করা হয়।
বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শূন্য পদের বিষয়ে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির মতামত জানতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের জন্য আপাতত শিক্ষক পদ পূরণে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে পরিকল্পনা কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে মতামত দেয়। এই মতামতকে অগ্রাহ্য করে চলতি বছর জানুয়ারিতে সাত পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এটিকে নীতিবহির্ভূত পদক্ষেপ উল্লেখ করে চলতি বছরের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি বরাবর চিঠি দেন পরিকল্পনা কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। সেই চিঠির কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে।
চিঠিতে বলা হয়, পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে পত্রিকা শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি নীতিহীনতার নামান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের লঙ্ঘন।
এ ছাড়া বলা হয়, বিজ্ঞাপনে শিক্ষক নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটো মিলিয়ে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ৭ পয়েন্ট, কিন্তু কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে শিক্ষার্থী হিসেবে আবেদনের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা চাওয়া হয় ৭ দশমিক ৫ পয়েন্ট। পরিকল্পনা কমিটি তাই ৭ পয়েন্ট থেকে বাড়িয়ে ৮ পয়েন্ট যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে—যেটি পরিকল্পনা কমিটি, অনুষদ ও একাডেমিক কাউন্সিলে এজেন্ডাভুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে উভয়টিতে ৩.৩০ করে। কিন্তু পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ ছিল দুটির একটিতে ন্যূনতম ৩.৫০ এবং অপরটিতে ৩.৩০।
চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুসারে বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় ক্লাস লোড নেই এবং বিভাগ গতিশীল। শিক্ষকেরা মনে করেন, চবি কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপ নীতিবহির্ভূত ও অমর্যাদাকর।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারকে দেওয়া এক চিঠিতে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম জানান, পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এবং বিভাগকে বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে অবহিত না করে পত্রিকায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি পরিকল্পনা কমিটি পরে অবহিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ এক্টের পরিপন্থী। যেখানে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভর্তির যোগ্যতা ন্যূনতম ৭.৫০ থাকতে হবে, সেখানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা ৭ পয়েন্ট—যা হাস্যকর ও কোনো কাম্য নয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্ভূত জটিলতা নিরসন না করে রেজিস্ট্রার দপ্তর কর্তৃক প্রেরণকৃত ৮৮ প্রার্থীর আবেদন যাচাই-বাছাই করা যুক্তিসংগত নয়। ওই বিজ্ঞাপনটি বাতিল করা হোক। আরও উল্লেখ্য যে বাংলা বিভাগে বর্তমানে নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই মর্মে পত্র দেওয়া হোক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির এক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে। পরিকল্পনা কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে নতুন শিক্ষক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পেছনে প্রশাসনের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।’
এদিকে আইন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির মতামত চেয়ে গত ২৩ মার্চ রেজিস্ট্রার একটি চিঠি পাঠায়। পরবর্তীকালে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সভায় বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যা ৯ এপ্রিল রেজিস্ট্রারকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেন বিভাগের সভাপতি।
আইন বিভাগের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে। পরিকল্পনা কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে নতুন শিক্ষক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য শুধু রাজনৈতিক কারণ ও দল ভারী করা।’
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রশাসনকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আশা করছি, উপাচার্য বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। এটা (নিয়োগ প্রক্রিয়া) বন্ধ করা উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের নির্দেশনা মোতাবেক সবকিছু আইন মেনেই হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা একটা কমও নেব না, বেশিও নেব না।’
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দুটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার অভিযোগ উঠেছে। বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও দুই বিভাগে ৯ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এবার নির্বাচনী বোর্ড আহ্বান করা হয়েছে। বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন বলছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকেরা।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভাগে শিক্ষক লাগবে কি না তা নির্ধারণ করবে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি। সেখানে আগবাড়িয়ে অন্য কারও বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। আমরা উপাচার্যকে বারবার বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে যেন সমুন্নত রাখেন। কিন্তু তিনি বারবার আইন লঙ্ঘন করেই যাচ্ছেন। আমরা বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করব।’
বিভাগ দুটি হলো আইন ও বাংলা বিভাগ। এর মধ্যে বাংলা বিভাগে সাতজন ও আইন বিভাগে দুজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার আইন বিভাগের ও সোমবার বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কোনো বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হলে প্রথমে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সভায় তা অনুমোদন করতে হয়। সভায় অনুমোদিত হলে তা রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠাবেন বিভাগের সভাপতি। পরবর্তীকালে রেজিস্ট্রার বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে উপাচার্যের সম্মতি নিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন। পরে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা আবেদনপত্র সংগ্রহ করে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটিতে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরণ করবে।
পরিকল্পনা কমিটি যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের তালিকা সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানোর পর তাঁদের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করার নিয়ম। তবে বিভাগ দুটির ক্ষেত্রে এসবের কিছুই করা হয়নি। উল্টো বারবার পরিকল্পনা কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও ৯ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে যে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে, সেটিতেও ইউজিসির নির্দেশনা মানা হয়নি।
বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি বাতিল করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছে বাংলা বিভাগের সভাপতি। অন্যদিকে প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে নীতিবহির্ভূত উল্লেখ করে শিক্ষক সমিতির কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। একইভাবে রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছিলেন আইন বিভাগের তৎকালীন সভাপতি।
এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে পদের বিপরীতে যেসব প্রার্থী আবেদন করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সেসব আবেদন পরিকল্পনা কমিটি কর্তৃক যাচাই-বাছাই হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেসব আবেদন বিভাগ দুটির পরিকল্পনা কমিটিতে যাচাই-বাছাই করা হয়নি। বিভাগ প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকেই প্রার্থী যাচাই-বাছাই করা হয়।
বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শূন্য পদের বিষয়ে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির মতামত জানতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের জন্য আপাতত শিক্ষক পদ পূরণে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে পরিকল্পনা কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে মতামত দেয়। এই মতামতকে অগ্রাহ্য করে চলতি বছর জানুয়ারিতে সাত পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়।
এটিকে নীতিবহির্ভূত পদক্ষেপ উল্লেখ করে চলতি বছরের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি বরাবর চিঠি দেন পরিকল্পনা কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। সেই চিঠির কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে।
চিঠিতে বলা হয়, পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে পত্রিকা শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি নীতিহীনতার নামান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের লঙ্ঘন।
এ ছাড়া বলা হয়, বিজ্ঞাপনে শিক্ষক নিয়োগে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটো মিলিয়ে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে ৭ পয়েন্ট, কিন্তু কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে শিক্ষার্থী হিসেবে আবেদনের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা চাওয়া হয় ৭ দশমিক ৫ পয়েন্ট। পরিকল্পনা কমিটি তাই ৭ পয়েন্ট থেকে বাড়িয়ে ৮ পয়েন্ট যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে—যেটি পরিকল্পনা কমিটি, অনুষদ ও একাডেমিক কাউন্সিলে এজেন্ডাভুক্ত হয়েছে।
অন্যদিকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে উভয়টিতে ৩.৩০ করে। কিন্তু পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ ছিল দুটির একটিতে ন্যূনতম ৩.৫০ এবং অপরটিতে ৩.৩০।
চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুসারে বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় ক্লাস লোড নেই এবং বিভাগ গতিশীল। শিক্ষকেরা মনে করেন, চবি কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপ নীতিবহির্ভূত ও অমর্যাদাকর।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারকে দেওয়া এক চিঠিতে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম জানান, পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এবং বিভাগকে বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে অবহিত না করে পত্রিকায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপনটি পরিকল্পনা কমিটি পরে অবহিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ এক্টের পরিপন্থী। যেখানে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভর্তির যোগ্যতা ন্যূনতম ৭.৫০ থাকতে হবে, সেখানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা ৭ পয়েন্ট—যা হাস্যকর ও কোনো কাম্য নয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উদ্ভূত জটিলতা নিরসন না করে রেজিস্ট্রার দপ্তর কর্তৃক প্রেরণকৃত ৮৮ প্রার্থীর আবেদন যাচাই-বাছাই করা যুক্তিসংগত নয়। ওই বিজ্ঞাপনটি বাতিল করা হোক। আরও উল্লেখ্য যে বাংলা বিভাগে বর্তমানে নতুন শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই মর্মে পত্র দেওয়া হোক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির এক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে। পরিকল্পনা কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে নতুন শিক্ষক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পেছনে প্রশাসনের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।’
এদিকে আইন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির মতামত চেয়ে গত ২৩ মার্চ রেজিস্ট্রার একটি চিঠি পাঠায়। পরবর্তীকালে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সভায় বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যা ৯ এপ্রিল রেজিস্ট্রারকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেন বিভাগের সভাপতি।
আইন বিভাগের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে। পরিকল্পনা কমিটি বিচার-বিশ্লেষণ করে নতুন শিক্ষক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য শুধু রাজনৈতিক কারণ ও দল ভারী করা।’
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রশাসনকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। আশা করছি, উপাচার্য বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। এটা (নিয়োগ প্রক্রিয়া) বন্ধ করা উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের নির্দেশনা মোতাবেক সবকিছু আইন মেনেই হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা একটা কমও নেব না, বেশিও নেব না।’
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বারি) ফুটবল খেলা শেষে স্লেজিং (কটু কথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে এই ঘটনা ঘটে।
৯ মিনিট আগেচট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে গত মাসে দুই জাহাজে আগুনের পেছনে কোনো নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জাহাজ দুটির ক্রুদের অদক্ষতা, অবহেলা ও যথাযথ প্রস্তুতির অভাবের কথা উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি।
১৪ মিনিট আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কালের কণ্ঠের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখকে মারধর করার অভিযোগে শাখা ছাত্রদল থেকে মাশফিকুল রাইনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে
১৪ মিনিট আগেমুক্তির দাবিতে খুলনা জেলা কারাগারে অনশনরত দুই জঙ্গির শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। আট দিন ধরে কারা হাসপাতালে রেখে স্যালাইনের মাধ্যমে তাঁদের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
২৪ মিনিট আগে