দশমিনায় সেতুর অভাবে প্রায় ২৮ হাজার মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ১৩

পটুয়াখালীর দশমিনা-গলাচিপা উপজেলার চাঁদপুরা-গুয়াবাঁশবাড়িয়া খালে আজও সেতু নির্মাণ হয়নি। সেতু নির্মাণ না হওয়ার দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলার পাঁচ গ্রামের প্রায় ২৮ হাজার মানুষ। এতে এলাকাবাসীরা ভোগান্তি সয়ে বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এ খাল পারাপার হচ্ছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের চাঁদপুরা-গুয়া বাঁশবাড়িয়া গ্রামের খালে বাঁশের সাঁকো উঁচু-নিচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ ও রোগীদের পারাপরে দুর্ভোগের শেষ নেই। নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। 

উপজেলার চাঁদপুরা গ্রামের বাসিন্দা ৭৫ বছরের বৃদ্ধ সাঈদুল ইসলাম মোহন খান আক্ষেপ করে বলেন, ‘সেতু না থাকায় বকুল বাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়া বাঁশবাড়িয়া এলাকার রাস্তার কোনো উন্নয়নও হয়নি। এলাকার হাজার মানুষের দাবি এ খালের ওপরে একটি সেতু নির্মাণের।’ 

উপজেলার বকুল বাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়া বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জাফর হোসেন, জামাল মিয়া ও শাহ আলম বলেন, ‘চাঁদপুরা-গুয়া বাঁশবাড়িয়া খালে দীর্ঘদিন যাবৎ সেতু না থাকায় গ্রামে পাকা সড়কও তৈরি করা হয়নি। ফলে ছেলে মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে ভরা বর্ষায় খেয়ার নৌকায় ও শুকনোয় মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে পার হতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় গ্রামবাসীদের। 

গ্রামবাসীরা আরও বলেন, ‘দশমিনা-গলাচিপা দুটি উপজেলা নিয়ে একটি আসন। আমরা বর্তমান সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা এমপি কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের কথা বলেছি।’ 

এ বিষয়ে আলীপুরার সুইজ বাজারের বাসিন্দা হাবিব বলেন, ‘এই এলাকা কৃষি প্রধান এলাকা। সেতুর অভাবে গ্রামের মানুষের খেতের ফসল পারাপার এবং জেলা-উপজেলায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তা ছাড়া দুই উপজেলার পাঁচ গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সেতু না থাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রায় সময় বিপাকে পড়ে এবং শিক্ষার্থীর বাবা-মা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তার প্রহর গোনেন।’ 

এলাকার বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, ‘সকল পিতা-মাতা স্বপ্ন দেখেন সন্তান লেখাপড়া করে শিক্ষিত হবেন। কিন্তু এই পাঁচ গ্রামের বাবা-মা সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। সেতুর অভাবে অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানকে স্কুলে না পাঠিয়ে নিরক্ষর রাখছেন। তাই সিংহভাগ শিক্ষার্থী ঝড়ে পরছে উচ্চশিক্ষার অধিকার থেকে।’ 

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা এমপি বলেন, ‘আমাকে কেউ এ বিষয়ে আগে অবহিত করেনি। এখন আমি সেতুর কথা শুনেছি। এই দুই ইউনিয়নের জনসাধারণের জন্য ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করব।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মকবুল আহমেদ বলেন, ‘সেতুর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি শুনেছি, আগামী উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হবে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত