গাজী আবদুর রহিম
অর্ধবৃত্তাকার এক দ্বীপের তিন পাশ নদীবেষ্টিত। যেন একটা সাপ পেঁচিয়ে আছে আড়াআড়ি দ্বিখণ্ডিত বৃক্ষের কোমরে। নদীটার নাম মধুডাঙা। স্বচ্ছ জলের নদী। তবে বারো মাস ঢেউ থাকে। অমাবস্যার রাতে এই নদীর জল মেঘের মতো কালো হয়ে যায়। তখন এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করে মধুডাঙার জল। কেউ হঠাৎ একা দেখলে ভাববে, এটা খুনের রক্তের দরিয়া। এই নদী নিয়ে অনেক রূপকথার গল্প তৈরি হয়েছে।
ওপরে উল্লেখিত দ্বীপটাকে সবাই জেলেপল্লি হিসেবে চেনে। নদীতীরের এই পল্লিতে কোনো পাকা ঘর নেই। যা আছে, সবগুলো মাটির। ওপরে শণের চালা। কারো কারো চালা দিয়ে আবার আসমান দেখা যায়। এই পল্লি ক্ষুধার নিদারুণ এক রাজ্য। তবে ক্ষুধার রাজ্য হলে কী হবে, এখানে কাল্পনিক রাজ্য দেখা যায়। এই দ্বীপ নদীর ওপর ভেসে আছে। ছোট-বড়-মাঝারি ঘরগুলোর দক্ষিণ পাশে বরইগাছের নিচে খসে যাওয়া মাটির ঘর। বারান্দার সঙ্গে রান্নাঘর। এই ঘরটা কালিদাসের। তার ঘরে দেবী বসবাস করে। এই দেবী তার অপূর্ব সুন্দরী ও গুণবতী মেয়ে। নাম ভিমা। এখানে সচরাচর সুন্দরী মেয়ে জন্মে না। কারণ এই দ্বীপে যারা বাস করে, এরা জেলে সম্প্রদায়ের লোক। এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য গায়ের রং কালো হয়। আর সবাই উচ্চ লম্বা হয়। দেহের গড়ন হয় সুঠাম। তবে ভিমার চেহারা ছিল ভিন্ন রকমের। যেন হিন্দি সিনেমার নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাইয়ের চেহারার নকল রূপ পেয়েছে। এখন এই সৌন্দর্য তার বিপদের কারণ হলো। নিম্নবর্গের মানুষের ঘরে উচ্চবর্গের চেহারার মেয়ে থাকা যে কতটা বিবাদের তা বলা কষ্টকর। কালিদাস মেয়েকে নিয়ে খুব পেরেশানিতে আছে। দুষ্ট যুবকেরা তার বাড়ির আশপাশে ঘাপটি মেরে থাকে সারাক্ষণ। এদিকে কালিদাসের সংসারে টানাটানি নিদারুণ। স্ত্রী মারা গেছে গত বছর। দীর্ঘদিন সে অসুস্থ ছিল। তার পেছনে হাজার তিরিশেক টাকা খরচ হয়েছিল চিকিৎসা বাবদ। শেষমেশ টাকাও গেল, স্ত্রীও মারা গেল। মাঝখান দিয়ে কালিদাস ঋণের জলে ডুবে গেল। মাছ ধরার নৌকাটাও গেছে ফুটো হয়ে। পানি ওঠে গড়গড় করে। এই পৌষে দূরদূরান্ত থেকে ধান আনা-নেওয়ার খ্যাপের কাজ করতে পারলে তার কিছু রোজগার হতো। তা ছাড়া মধুডাঙায় এখন মাছের ছড়াছড়ি। ধরতে পারলেই হাটে নিয়ে গেলে কাঁচা টাকা পাওয়া যায়। এই অবস্থায় মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে না কালিদাস। সমিতির লোকেরা দুবেলা আসে ঋণের কিস্তি আদায় করতে। অন্যান্য পাওনাদারও বাড়তি কথা শোনাচ্ছে। রামেশ্বর বলেছে, সাত দিনের মধ্যে তার টাকা না দিতে পারলে কালিদাসকে বাজারে বটগাছের গায়ে পিঠমোড়া দিয়ে বাঁধবে। রামেশ্বর এই গাঁয়ের কেউ না। ওর বাড়ি মহাদেবপুর বাজারের পাশেই। এদিকে ঘরের চালে শণ কিছুটা ওড়ে দক্ষিণের বাতাসে। তিন মাস বাদেই বর্ষাকাল।
পাওনাদারের গালি সইতে না পেরে কালিদাস একদিন কালো আঁধারের নিশিতে পাড়ি দিল যশোরে। যশোরে ধান কাটার কাজে বেশ রোজগার হয়। যাওয়ার সময় ভিমাকে বলে গেছে, ‘মা, তুই দেইখা-শুইনা ভালো মতোন থাকিস। আমি বিশ-পঁচিশ দিনের বেশি থাকপো না।’
এ কাজে ধানও পাওয়া যাবে খোরাকির জন্য, আবার বিক্রি করে টাকাও পাওয়া যাবে। এজন্য এই কাজ তার কাছে ঋণ পরিশোধের জন্য উত্তম পন্থা মনে হয়েছে।
এদিকে কালিদাস চলে যাওয়ায় বাড়িতে একা থাকে ভিমা। সকালবেলা সে ভাঙাচোরা নৌকাটা নিয়ে নদীতে যায় মাছ ধরতে। মেয়ে হলে কী হবে, তার ভেতরে শক্তি-সামর্থ্য সবই আছে। খেওলা জাল ফেলতে পারে। সে স্কুলে যায় না। পড়ালেখার আগ্রহ ছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। মা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে বাড়ির সব কাজের দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
একদিন দুপুরের দিকে রামেশ্বর এসে ডাক পাড়ে, ‘কালিদাস, বাড়িত আছো?’
ভিমা তার হাঁসের বাচ্চাগুলোকে শামুক ভেঙে দিচ্ছিল। রামেশ্বরকে দেখে তাড়াতাড়ি বারান্দায় গিয়ে চৌকি এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘বাবা বাড়িতে নাই।’
‘কই গ্যাছে?’
‘যশোরে। ধান কাটবার কামলা দিবার গ্যাছে।’
‘আমার টাকাগুলান এত দিন হইয়া গেল, তবু পরিশোধ করল না। এরকম করলি চলে বলো?’
‘সব টাকা পরিশোধ কইরা দিবে, একটু সবুর করেন, কাকাবাবু।’
ভিমা ঘর থেকে বাটিতে করে চালভাজা এনে দেয় রামেশ্বরকে। খেতে খেতে দুজন কথা বলে। রামেশ্বর বলে, ‘তোমার নামডা কী য্যান?’
‘ভিমা।’
মানুষের মন বড়ই উচাটন। মেয়েটাকে দেখে রামেশ্বরের মনে ধরে। সে মনে মনে ঠিক করে, তার ছেলের সঙ্গে বেশ মানাবে। এতক্ষণে ভিমা যে জেলের ঘরের মেয়ে, এটা খেয়াল ছিল না রামেশ্বরের।
রামেশ্বর বলে, ‘আজ তাইলে যাইগা।’
‘আমি রান্ধন বসাইছি। খাইয়া যাইবেন, কাকাবাবু।’
‘তা হোকগে। অন্যদিন আইসা খাব।’
রামেশ্বর এরপর থেকে নিয়মিত আসে টাকা চাইতে। তবে তার মনে লক্ষ্যের বিপরীতে একটা উপলক্ষও যে ছিল, সেটা আর কে জানে?
একদিন ভিমার সতেরো বসন্ত পার করে আসা যৌবনে রামেশ্বর গাঢ় ছাপ এঁকে দেয়। এই ছাপ আসলে কলঙ্কের, নাকি স্বর্গের?
সেদিনও পাওনা আদায়ের জন্য এসেছিল রামেশ্বর। তাকে কাকাবাবু সম্বোধন করে বারান্দায় বসতে দিয়েছিল ভিমা। তারপর শুরু হলো ঘোর বর্ষা। সবকিছু পানিতে তলিয়ে যেতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ করেই একটা জানোয়ার হয়ে ওঠে রামেশ্বর। সেদিন ভিমার শত বাধা, কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কাকাবাবু ডাক উপেক্ষা করেছিল রামেশ্বর।
এ ঘটনার পর থেকে সারাক্ষণ মন খারাপ থাকে ভিমার। তার গোলাপের মতো মুখটায় আর ফুটন্ত গোলাপের হাসি আসে না। যেন বিধির এই গোলাপের পাপড়িগুলো কীটের আক্রমণে বুজে যায় যায় ভাব। সারাক্ষণ পৃথিবীটা ঘুরতে থাকে ওর কাছে। হাঁসের বাচ্চাগুলোর সঙ্গে খেলতে আর ভালো লাগে না ওর। নৌকা নিয়ে নদীতে যেতেও মন চায় না।
এক মাস পর বাড়িতে আসে কালিদাস। অনেক টাকা কামিয়েছে সে। ভিমার জন্য এনেছে চুরি ও ব্যান ক্লিপ। আর এনেছে সন্দেশ। মেয়েটা তার সন্দেশ পছন্দ করে। বাবাকে দেখে ধীরপায়ে এসে দাঁড়ায় ভিমা। কালিদাস বলে, ‘মা তোর মুখ এত শুকনো ক্যান? কিচ্ছু খাসনি বুঝি? চিন্তা করিস? আর চিন্তা করতে হইব না। এবার সক্কল দেনা পরিশোধ কইরা দিমু।’
ভিমা মনে মনে বলে, ‘যা দেনা ছিল, তার থাইকা বেশি তো নিয়া গ্যাছে জানোয়ার রামেশ্বর। তুমি আবার কী পরিশোধ করবে, বাবা?’
ভিমা বলে, ‘বাবা, আইসা ভাত খাইয়া নাও।’
কালিদাসের হাতে থাকা ব্যানক্লিপ, চুরি ও সন্দেশের প্যাকেটগুলো ভিমার হাতে দেয়।
উঠোনে রোদে বসে ভাত খায় কালিদাস। শীত পড়ছে বেশ প্রখরতা নিয়ে। সকালে কুয়াশা পড়ে হালকা। এর মধ্যে একদিন হয়ে গেল ঘোর বর্ষা। ঋতুর যেন ঠিকঠিকানা নেই।
কালিদাস নৌকা সারাইয়ের কাজ শুরু করেছে। আরশাদ মিস্ত্রি সকাল থেকেই কাজে লেগেছে। নৌকা গড়ার দক্ষ এক কারিগর এই আরশাদ। বয়স নব্বইয়ের ওপরে। চুল সাদা হয়ে গেছে। দাঁত পড়েনি একটাও। জীবনে কয়েক হাজার নৌকা গড়েছে আরশাদ। এখনো গড়ে যাচ্ছে, দুবেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার তাগিদে।
পরদিন রামেশ্বর আসে টাকা চাইতে। ঘর থেকে টাকা এনে দেয় কালিদাস। রামেশ্বরকে দেখে আড়ালে দাঁড়িয়ে থুতু ফেলে ভিমা। রামেশ্বর ভিমার চোখে মানুষরূপী জানোয়ার।
রামেশ্বর বলে, ‘আজ তাইলে যাইগা কালি।’
কালিদাস বলে, ‘এত দেরি হলো দেনা পরিশোধ করতে, আমাকে ক্ষমা কইরা দিও, দাদা।’
‘সমস্যা নেই। তুমি যাইও দিন বেড়াইয়া আইসো।’
‘নিশ্চয় যাব।’
রামেশ্বর চলে যাওয়ার পর কালিদাসের সামনে এসে দাঁড়ায় ভিমা। ভিমা বলে, ‘রামেশ্বর কী জন্যি আইছিল?’
‘পাওনা টাকা নিবার লাগি।’
ভিমা বাবাকে বলতে গিয়েও বলতে পারেনি। তার ভেতরে অন্যরকম একটা দ্বিধা-ঘৃণা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
কালিদাস বের হয় হাটে যাওয়ার জন্য। তার একটা ঘন জালের দরকার। নদীতে ছোট-বড় হরিণা চিংড়ির ছড়াছড়ি। বাজারে দামও ভালো, কেজি পঞ্চাশ টাকা।
হঠাৎ ভাতপোড়া গন্ধ আসে ভিমার নাকে। ও সেই কখন ভাত বসিয়েছে। তারপর আর খেয়াল করেনি। মেয়েটা সারাক্ষণ চিন্তায় মগ্ন থাকে। কাজে মন বসে না আগের মতো। শুধু মাথা ঘুরায় আর বমি আসে।
হাসের বাচ্চাগুলো দাঁড়িয়ে আছে উঠানের আঙিনায়। একটু পর আরশাদ মিস্ত্রি আসবে ভাত খেতে। এসে দেরি করবে না। লোকটা কাজে ফাঁকি দেয় না।
ভিমা পোড়া ভাতগুলো গরুর নান্দায় ঢেলে দিয়ে আবার নতুন করে ভাত বসায়। কালিদাস হাট থেকে বাড়ি ফেরে। নদীর তীর থেকে আসে আরশাদ মিস্ত্রি। কালিদাস বলে, ‘মিস্ত্রি আইছে। ভাত দে, মা।’
ভিমা বলে, ‘ভাত হইতে আরেকটু বাকি আছে।’
‘আমি হাটে যাইবার সময় না দেইখা গেলাম তুই ভাত বসাইছিলি!’
‘হ। বসাইছিলাম। পুইড়া গ্যাছে, তাই আবার বসাইছি।’
ওদিকে আরশাদ মিস্ত্রি ডাক পাড়ে, ‘কই, ভাত কই! নিয়া আসো, বেলা গড়াইয়া যাইতেছে। অনেক কাম বাকি এখনো।’
কালিদাস বলে, ‘ভাই, দুইডা মিনিট বসেন।’
ভিমা বলে, ‘তোমরা দুইজন বসো। আমি চিড়া আর গুড় আনতাছি।’
চিড়া আর গুড় খেয়ে নদীর তীরে রওনা দেয় কালিদাস ও আরশাদ। আজকে যে করেই হোক কাজ শেষ করা লাগব।
সন্ধ্যায় ঘরে চৌকিতে শুয়ে আছে ভিমা। কালিদাস ভিমার কপালে হাত রেখে বলে, ‘কিরে মা, তোর কি শরীল খারাপ করছে?’
‘না। কেমুন জানি লাগতাছে।’
‘দ্যাখলি, বুঝি আমি। বাবারা মাইয়ার সব দুখ্খো বোঝে। বল কী হইছে?’
‘জানি না কী হইছে। তবে সারাক্ষণ শুধু ওলডানি আসে আর মাথা ঘুরায়।’
এ কথা শুনে কালিদাসের চোখ কপালে উঠে যায়। ‘এখন আমি যা যা জিগাইব, উত্তর দিবি।’
‘কী প্রশ্ন, বলো?’
‘তুই কি কারো লগে শুইছিলি?’
‘অত কিছু কইতে পারুম না। শুধু এটুকুন বলতেছি। হুম। তয় নিজের ইচ্ছায় না। সে জোর করে...’
‘কে সে?’
‘তোমার পাওনাদার। এর বেশি কিচ্ছু আমি কইতে পারুম না।’
‘রামেশ্বর যে এমন কুত্তার কুত্তা। ওরে দেখলে চেনা যায় না। কুত্তাটারে আমি বলি দিব। তুই এই কথা কাউরে কছ নাই তো?’
‘কইলে কী হইব, আর না কইলে কী হইব?’
‘লোকে জানলি তোরে বিয়া দিবার পারুম না, মা। খবরদার, কাউরে বলবি না।’
এ কথা শোনার পর কালিদাসের মন খারাপের রোগে ধরে। তার কোনো কাজে মন বসতে চায় না। তবে তার তো আর বসে থাকলে চলবে না। কালিদাস তার নতুন জালটা নিয়ে নদীতে যায় মাছ ধরতে। অনেক মাছ উঠেছে জালে। সব মিলিয়ে কেজি দেড়েক চিংড়ি মাছ। সেগুলো নিয়ে হাটে যায় কালিদাস ৷ এগুলো বেচে তরিতরকারি কিনে আনবে সে।
হাট থেকে ফিরে কালিদাস দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। কালিদাস বলে, ‘মা, এই অবেলায় ঘরের দরজা বন্ধ কইরা ঘুমাচ্ছিস ক্যান?’
কোনো সাড়া না পেয়ে কালিদাস দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখে, ভিমা আর বেঁচে নেই। সে গলায় রশি নিয়ে এই পৃথিবীর বিষাক্ত মানুষ নামের কীটদের মুখে থুতু দিয়েছে আরও একবার।
পাড়ার লোকেরা চিতা সাজিয়েছে। মধুডাঙা নদীর তীরে শ্মশান। চন্দনের গন্ধে ভরে গেছে চারপাশ। একটু পরই চিতার মুখে আগুন দেবে কালিদাস। কিন্তু তার চোখে-মুখে কোনো শোকের ছাপ নেই। কারণ তার মনে হচ্ছে, ভিমা স্বর্গে চলে গেছে।
শ্মশান থেকে ফিরতে রামেশ্বরের সঙ্গে দেখা হয় কালিদাসের। কালিদাস বলে, ‘রামেশ্বর, তুই মানুষ না। তুই আস্তো একটা কুত্তার বাচ্চা। তুই একটা জানোয়ার।’
এ কথা শুনে রামেশ্বরের চোখ দুটো বড় হয়ে যায়। যেন চিড়িয়াখানার কোনো জন্তু অনেক দিন পর মানুষের দেখা পেয়েছে।
অর্ধবৃত্তাকার এক দ্বীপের তিন পাশ নদীবেষ্টিত। যেন একটা সাপ পেঁচিয়ে আছে আড়াআড়ি দ্বিখণ্ডিত বৃক্ষের কোমরে। নদীটার নাম মধুডাঙা। স্বচ্ছ জলের নদী। তবে বারো মাস ঢেউ থাকে। অমাবস্যার রাতে এই নদীর জল মেঘের মতো কালো হয়ে যায়। তখন এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করে মধুডাঙার জল। কেউ হঠাৎ একা দেখলে ভাববে, এটা খুনের রক্তের দরিয়া। এই নদী নিয়ে অনেক রূপকথার গল্প তৈরি হয়েছে।
ওপরে উল্লেখিত দ্বীপটাকে সবাই জেলেপল্লি হিসেবে চেনে। নদীতীরের এই পল্লিতে কোনো পাকা ঘর নেই। যা আছে, সবগুলো মাটির। ওপরে শণের চালা। কারো কারো চালা দিয়ে আবার আসমান দেখা যায়। এই পল্লি ক্ষুধার নিদারুণ এক রাজ্য। তবে ক্ষুধার রাজ্য হলে কী হবে, এখানে কাল্পনিক রাজ্য দেখা যায়। এই দ্বীপ নদীর ওপর ভেসে আছে। ছোট-বড়-মাঝারি ঘরগুলোর দক্ষিণ পাশে বরইগাছের নিচে খসে যাওয়া মাটির ঘর। বারান্দার সঙ্গে রান্নাঘর। এই ঘরটা কালিদাসের। তার ঘরে দেবী বসবাস করে। এই দেবী তার অপূর্ব সুন্দরী ও গুণবতী মেয়ে। নাম ভিমা। এখানে সচরাচর সুন্দরী মেয়ে জন্মে না। কারণ এই দ্বীপে যারা বাস করে, এরা জেলে সম্প্রদায়ের লোক। এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য গায়ের রং কালো হয়। আর সবাই উচ্চ লম্বা হয়। দেহের গড়ন হয় সুঠাম। তবে ভিমার চেহারা ছিল ভিন্ন রকমের। যেন হিন্দি সিনেমার নায়িকা ঐশ্বরিয়া রাইয়ের চেহারার নকল রূপ পেয়েছে। এখন এই সৌন্দর্য তার বিপদের কারণ হলো। নিম্নবর্গের মানুষের ঘরে উচ্চবর্গের চেহারার মেয়ে থাকা যে কতটা বিবাদের তা বলা কষ্টকর। কালিদাস মেয়েকে নিয়ে খুব পেরেশানিতে আছে। দুষ্ট যুবকেরা তার বাড়ির আশপাশে ঘাপটি মেরে থাকে সারাক্ষণ। এদিকে কালিদাসের সংসারে টানাটানি নিদারুণ। স্ত্রী মারা গেছে গত বছর। দীর্ঘদিন সে অসুস্থ ছিল। তার পেছনে হাজার তিরিশেক টাকা খরচ হয়েছিল চিকিৎসা বাবদ। শেষমেশ টাকাও গেল, স্ত্রীও মারা গেল। মাঝখান দিয়ে কালিদাস ঋণের জলে ডুবে গেল। মাছ ধরার নৌকাটাও গেছে ফুটো হয়ে। পানি ওঠে গড়গড় করে। এই পৌষে দূরদূরান্ত থেকে ধান আনা-নেওয়ার খ্যাপের কাজ করতে পারলে তার কিছু রোজগার হতো। তা ছাড়া মধুডাঙায় এখন মাছের ছড়াছড়ি। ধরতে পারলেই হাটে নিয়ে গেলে কাঁচা টাকা পাওয়া যায়। এই অবস্থায় মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে না কালিদাস। সমিতির লোকেরা দুবেলা আসে ঋণের কিস্তি আদায় করতে। অন্যান্য পাওনাদারও বাড়তি কথা শোনাচ্ছে। রামেশ্বর বলেছে, সাত দিনের মধ্যে তার টাকা না দিতে পারলে কালিদাসকে বাজারে বটগাছের গায়ে পিঠমোড়া দিয়ে বাঁধবে। রামেশ্বর এই গাঁয়ের কেউ না। ওর বাড়ি মহাদেবপুর বাজারের পাশেই। এদিকে ঘরের চালে শণ কিছুটা ওড়ে দক্ষিণের বাতাসে। তিন মাস বাদেই বর্ষাকাল।
পাওনাদারের গালি সইতে না পেরে কালিদাস একদিন কালো আঁধারের নিশিতে পাড়ি দিল যশোরে। যশোরে ধান কাটার কাজে বেশ রোজগার হয়। যাওয়ার সময় ভিমাকে বলে গেছে, ‘মা, তুই দেইখা-শুইনা ভালো মতোন থাকিস। আমি বিশ-পঁচিশ দিনের বেশি থাকপো না।’
এ কাজে ধানও পাওয়া যাবে খোরাকির জন্য, আবার বিক্রি করে টাকাও পাওয়া যাবে। এজন্য এই কাজ তার কাছে ঋণ পরিশোধের জন্য উত্তম পন্থা মনে হয়েছে।
এদিকে কালিদাস চলে যাওয়ায় বাড়িতে একা থাকে ভিমা। সকালবেলা সে ভাঙাচোরা নৌকাটা নিয়ে নদীতে যায় মাছ ধরতে। মেয়ে হলে কী হবে, তার ভেতরে শক্তি-সামর্থ্য সবই আছে। খেওলা জাল ফেলতে পারে। সে স্কুলে যায় না। পড়ালেখার আগ্রহ ছিল, কিন্তু কাজ হয়নি। মা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে বাড়ির সব কাজের দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
একদিন দুপুরের দিকে রামেশ্বর এসে ডাক পাড়ে, ‘কালিদাস, বাড়িত আছো?’
ভিমা তার হাঁসের বাচ্চাগুলোকে শামুক ভেঙে দিচ্ছিল। রামেশ্বরকে দেখে তাড়াতাড়ি বারান্দায় গিয়ে চৌকি এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘বাবা বাড়িতে নাই।’
‘কই গ্যাছে?’
‘যশোরে। ধান কাটবার কামলা দিবার গ্যাছে।’
‘আমার টাকাগুলান এত দিন হইয়া গেল, তবু পরিশোধ করল না। এরকম করলি চলে বলো?’
‘সব টাকা পরিশোধ কইরা দিবে, একটু সবুর করেন, কাকাবাবু।’
ভিমা ঘর থেকে বাটিতে করে চালভাজা এনে দেয় রামেশ্বরকে। খেতে খেতে দুজন কথা বলে। রামেশ্বর বলে, ‘তোমার নামডা কী য্যান?’
‘ভিমা।’
মানুষের মন বড়ই উচাটন। মেয়েটাকে দেখে রামেশ্বরের মনে ধরে। সে মনে মনে ঠিক করে, তার ছেলের সঙ্গে বেশ মানাবে। এতক্ষণে ভিমা যে জেলের ঘরের মেয়ে, এটা খেয়াল ছিল না রামেশ্বরের।
রামেশ্বর বলে, ‘আজ তাইলে যাইগা।’
‘আমি রান্ধন বসাইছি। খাইয়া যাইবেন, কাকাবাবু।’
‘তা হোকগে। অন্যদিন আইসা খাব।’
রামেশ্বর এরপর থেকে নিয়মিত আসে টাকা চাইতে। তবে তার মনে লক্ষ্যের বিপরীতে একটা উপলক্ষও যে ছিল, সেটা আর কে জানে?
একদিন ভিমার সতেরো বসন্ত পার করে আসা যৌবনে রামেশ্বর গাঢ় ছাপ এঁকে দেয়। এই ছাপ আসলে কলঙ্কের, নাকি স্বর্গের?
সেদিনও পাওনা আদায়ের জন্য এসেছিল রামেশ্বর। তাকে কাকাবাবু সম্বোধন করে বারান্দায় বসতে দিয়েছিল ভিমা। তারপর শুরু হলো ঘোর বর্ষা। সবকিছু পানিতে তলিয়ে যেতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ করেই একটা জানোয়ার হয়ে ওঠে রামেশ্বর। সেদিন ভিমার শত বাধা, কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে কাকাবাবু ডাক উপেক্ষা করেছিল রামেশ্বর।
এ ঘটনার পর থেকে সারাক্ষণ মন খারাপ থাকে ভিমার। তার গোলাপের মতো মুখটায় আর ফুটন্ত গোলাপের হাসি আসে না। যেন বিধির এই গোলাপের পাপড়িগুলো কীটের আক্রমণে বুজে যায় যায় ভাব। সারাক্ষণ পৃথিবীটা ঘুরতে থাকে ওর কাছে। হাঁসের বাচ্চাগুলোর সঙ্গে খেলতে আর ভালো লাগে না ওর। নৌকা নিয়ে নদীতে যেতেও মন চায় না।
এক মাস পর বাড়িতে আসে কালিদাস। অনেক টাকা কামিয়েছে সে। ভিমার জন্য এনেছে চুরি ও ব্যান ক্লিপ। আর এনেছে সন্দেশ। মেয়েটা তার সন্দেশ পছন্দ করে। বাবাকে দেখে ধীরপায়ে এসে দাঁড়ায় ভিমা। কালিদাস বলে, ‘মা তোর মুখ এত শুকনো ক্যান? কিচ্ছু খাসনি বুঝি? চিন্তা করিস? আর চিন্তা করতে হইব না। এবার সক্কল দেনা পরিশোধ কইরা দিমু।’
ভিমা মনে মনে বলে, ‘যা দেনা ছিল, তার থাইকা বেশি তো নিয়া গ্যাছে জানোয়ার রামেশ্বর। তুমি আবার কী পরিশোধ করবে, বাবা?’
ভিমা বলে, ‘বাবা, আইসা ভাত খাইয়া নাও।’
কালিদাসের হাতে থাকা ব্যানক্লিপ, চুরি ও সন্দেশের প্যাকেটগুলো ভিমার হাতে দেয়।
উঠোনে রোদে বসে ভাত খায় কালিদাস। শীত পড়ছে বেশ প্রখরতা নিয়ে। সকালে কুয়াশা পড়ে হালকা। এর মধ্যে একদিন হয়ে গেল ঘোর বর্ষা। ঋতুর যেন ঠিকঠিকানা নেই।
কালিদাস নৌকা সারাইয়ের কাজ শুরু করেছে। আরশাদ মিস্ত্রি সকাল থেকেই কাজে লেগেছে। নৌকা গড়ার দক্ষ এক কারিগর এই আরশাদ। বয়স নব্বইয়ের ওপরে। চুল সাদা হয়ে গেছে। দাঁত পড়েনি একটাও। জীবনে কয়েক হাজার নৌকা গড়েছে আরশাদ। এখনো গড়ে যাচ্ছে, দুবেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার তাগিদে।
পরদিন রামেশ্বর আসে টাকা চাইতে। ঘর থেকে টাকা এনে দেয় কালিদাস। রামেশ্বরকে দেখে আড়ালে দাঁড়িয়ে থুতু ফেলে ভিমা। রামেশ্বর ভিমার চোখে মানুষরূপী জানোয়ার।
রামেশ্বর বলে, ‘আজ তাইলে যাইগা কালি।’
কালিদাস বলে, ‘এত দেরি হলো দেনা পরিশোধ করতে, আমাকে ক্ষমা কইরা দিও, দাদা।’
‘সমস্যা নেই। তুমি যাইও দিন বেড়াইয়া আইসো।’
‘নিশ্চয় যাব।’
রামেশ্বর চলে যাওয়ার পর কালিদাসের সামনে এসে দাঁড়ায় ভিমা। ভিমা বলে, ‘রামেশ্বর কী জন্যি আইছিল?’
‘পাওনা টাকা নিবার লাগি।’
ভিমা বাবাকে বলতে গিয়েও বলতে পারেনি। তার ভেতরে অন্যরকম একটা দ্বিধা-ঘৃণা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
কালিদাস বের হয় হাটে যাওয়ার জন্য। তার একটা ঘন জালের দরকার। নদীতে ছোট-বড় হরিণা চিংড়ির ছড়াছড়ি। বাজারে দামও ভালো, কেজি পঞ্চাশ টাকা।
হঠাৎ ভাতপোড়া গন্ধ আসে ভিমার নাকে। ও সেই কখন ভাত বসিয়েছে। তারপর আর খেয়াল করেনি। মেয়েটা সারাক্ষণ চিন্তায় মগ্ন থাকে। কাজে মন বসে না আগের মতো। শুধু মাথা ঘুরায় আর বমি আসে।
হাসের বাচ্চাগুলো দাঁড়িয়ে আছে উঠানের আঙিনায়। একটু পর আরশাদ মিস্ত্রি আসবে ভাত খেতে। এসে দেরি করবে না। লোকটা কাজে ফাঁকি দেয় না।
ভিমা পোড়া ভাতগুলো গরুর নান্দায় ঢেলে দিয়ে আবার নতুন করে ভাত বসায়। কালিদাস হাট থেকে বাড়ি ফেরে। নদীর তীর থেকে আসে আরশাদ মিস্ত্রি। কালিদাস বলে, ‘মিস্ত্রি আইছে। ভাত দে, মা।’
ভিমা বলে, ‘ভাত হইতে আরেকটু বাকি আছে।’
‘আমি হাটে যাইবার সময় না দেইখা গেলাম তুই ভাত বসাইছিলি!’
‘হ। বসাইছিলাম। পুইড়া গ্যাছে, তাই আবার বসাইছি।’
ওদিকে আরশাদ মিস্ত্রি ডাক পাড়ে, ‘কই, ভাত কই! নিয়া আসো, বেলা গড়াইয়া যাইতেছে। অনেক কাম বাকি এখনো।’
কালিদাস বলে, ‘ভাই, দুইডা মিনিট বসেন।’
ভিমা বলে, ‘তোমরা দুইজন বসো। আমি চিড়া আর গুড় আনতাছি।’
চিড়া আর গুড় খেয়ে নদীর তীরে রওনা দেয় কালিদাস ও আরশাদ। আজকে যে করেই হোক কাজ শেষ করা লাগব।
সন্ধ্যায় ঘরে চৌকিতে শুয়ে আছে ভিমা। কালিদাস ভিমার কপালে হাত রেখে বলে, ‘কিরে মা, তোর কি শরীল খারাপ করছে?’
‘না। কেমুন জানি লাগতাছে।’
‘দ্যাখলি, বুঝি আমি। বাবারা মাইয়ার সব দুখ্খো বোঝে। বল কী হইছে?’
‘জানি না কী হইছে। তবে সারাক্ষণ শুধু ওলডানি আসে আর মাথা ঘুরায়।’
এ কথা শুনে কালিদাসের চোখ কপালে উঠে যায়। ‘এখন আমি যা যা জিগাইব, উত্তর দিবি।’
‘কী প্রশ্ন, বলো?’
‘তুই কি কারো লগে শুইছিলি?’
‘অত কিছু কইতে পারুম না। শুধু এটুকুন বলতেছি। হুম। তয় নিজের ইচ্ছায় না। সে জোর করে...’
‘কে সে?’
‘তোমার পাওনাদার। এর বেশি কিচ্ছু আমি কইতে পারুম না।’
‘রামেশ্বর যে এমন কুত্তার কুত্তা। ওরে দেখলে চেনা যায় না। কুত্তাটারে আমি বলি দিব। তুই এই কথা কাউরে কছ নাই তো?’
‘কইলে কী হইব, আর না কইলে কী হইব?’
‘লোকে জানলি তোরে বিয়া দিবার পারুম না, মা। খবরদার, কাউরে বলবি না।’
এ কথা শোনার পর কালিদাসের মন খারাপের রোগে ধরে। তার কোনো কাজে মন বসতে চায় না। তবে তার তো আর বসে থাকলে চলবে না। কালিদাস তার নতুন জালটা নিয়ে নদীতে যায় মাছ ধরতে। অনেক মাছ উঠেছে জালে। সব মিলিয়ে কেজি দেড়েক চিংড়ি মাছ। সেগুলো নিয়ে হাটে যায় কালিদাস ৷ এগুলো বেচে তরিতরকারি কিনে আনবে সে।
হাট থেকে ফিরে কালিদাস দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। কালিদাস বলে, ‘মা, এই অবেলায় ঘরের দরজা বন্ধ কইরা ঘুমাচ্ছিস ক্যান?’
কোনো সাড়া না পেয়ে কালিদাস দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখে, ভিমা আর বেঁচে নেই। সে গলায় রশি নিয়ে এই পৃথিবীর বিষাক্ত মানুষ নামের কীটদের মুখে থুতু দিয়েছে আরও একবার।
পাড়ার লোকেরা চিতা সাজিয়েছে। মধুডাঙা নদীর তীরে শ্মশান। চন্দনের গন্ধে ভরে গেছে চারপাশ। একটু পরই চিতার মুখে আগুন দেবে কালিদাস। কিন্তু তার চোখে-মুখে কোনো শোকের ছাপ নেই। কারণ তার মনে হচ্ছে, ভিমা স্বর্গে চলে গেছে।
শ্মশান থেকে ফিরতে রামেশ্বরের সঙ্গে দেখা হয় কালিদাসের। কালিদাস বলে, ‘রামেশ্বর, তুই মানুষ না। তুই আস্তো একটা কুত্তার বাচ্চা। তুই একটা জানোয়ার।’
এ কথা শুনে রামেশ্বরের চোখ দুটো বড় হয়ে যায়। যেন চিড়িয়াখানার কোনো জন্তু অনেক দিন পর মানুষের দেখা পেয়েছে।
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৭ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৪ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৪ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪