রজত কান্তি রায়
যাদব বাবু খুব দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কোন ভূতের প্ররোচনায় তিনি যে পাটিগণিত নামের এক অদ্ভুত বিদ্যা উপহার দিয়েছিলেন আমাদের, সে বড় গবেষণার বিষয়। অবশ্য গবেষকেরা বলে থাকেন, যাদব বাবু নাকি শিশুদের গণিতভীতি দূর করতেই পাটিগণিতে বানরের বাঁশে চড়ার অঙ্ক বসিয়ে দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, শিশুরা যাতে হাসতে-খেলতে এবং তাঁর মতো দুষ্টুমি করতে করতে অঙ্ক কষতে পারে। কিন্তু শিশুরা যে তাঁর চেয়েও এক কাঠি সরেস, সেটা বোঝা যায় আমাকে দেখে।
স্কুল জীবনে একবার আমার দুষ্টু বন্ধুরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিল বলে অঙ্কে ৫৬ পেয়েছিলাম। তা ছাড়া পুরো ছাত্রজীবন বিলো দা বেল্ট—৩০-এর ঘরে। ফলে যাদব বাবুকে আমার একজন দুষ্টু মানুষই মনে হয়েছে আগাগোড়া। তবে ম্যাট্রিকে আদু ভাই হওয়ার সমূহ আশঙ্কা মাথায় রেখে প্রশ্ন ফাঁস না করেও কীভাবে যেন ৫৮ পেয়েছিলাম। সেটা ছিল আমার জীবনে বিরাট অর্জন। আমার যে বন্ধুরা আমার মতোই ৩০-এর ঘরে অঙ্কের নম্বর পেত, তারা ভীষণ অবাক হয়েছিল আমার সাফল্যে। সে যাক। বলছিলাম শিশুদের কথা।
আমাদের দেশের শিশুরা যদি যাদব বাবুর মতো অঙ্কে তুখোড় হতো, তাহলে বিভিন্ন সময় অনেককেই নাকাল হতে হতো। বিশেষ করে বাসের ভাড়া বাড়ানো, দ্রব্যের মূল্য বাড়ানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেককেই তারা পাটিগণিত মতে অঙ্ক করে বুঝিয়ে দিতে পারত—তুমি কেন ঘষো আমি সেটা জানি। তবে ঐতিহাসিকভাবে এ দেশের শিশুরা অঙ্ক, আর ইতিহাসে দুর্বল। ফলে পাটিগণিতের মতো মজার জিনিসটা তেমন কেউ বোঝে না। কিন্তু আমাদের এক বন্ধু বাসভাড়া বাড়ানো বিষয়ে যাদব বাবুকে ছাড়িয়ে গেছেন। এ বিষয়ে ফেসবুকে তাঁর একটি লেখা ভাইরাসজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের বন্ধুটির সেই অঙ্কটি তুলে দেওয়া যাক পাঠকদের জন্য।
ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ার কারণে কিলোমিটার প্রতি ২৭ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। এখানে মূল্যবৃদ্ধির হার ২৩ শতাংশ। একটি বাসে যাত্রীর সংখ্যা থাকে ৫২ জন। বড় বাসগুলোতে ৭৪ জন যাত্রী বসতে পারে। ডিজেলচালিত বাসের মাইলেজ ২ কিমি/লিটার থেকে ৫ কিমি/লিটার পর্যন্ত। আমরা ধরি, বাসে ৫২ জন যাত্রী এবং মাইলেজ সর্বনিম্ন ২ কিমি/লিটার। ২৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতি কিলোমিটারে বাসগুলোকে বাড়তি গুনতে হবে (৮০-৬৫) ÷২= ৭.৫০ টাকা। এখন এই টাকা ৫২ জন যাত্রীর মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। প্রতি ভাগে পড়ছে ৭.৫০ ÷ ৫২= ০.১৫ টাকা বা ১৫ পয়সারও কম।
তাহলে প্রতিটি যাত্রীর প্রতি কিলোমিটারে মূল্যবৃদ্ধি হওয়া উচিত ছিল ১০ শতাংশেরও কম। তার বদলে প্রতি কিলোমিটারে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে ৫০ টাকায় ৫ টাকা ভাড়া বাড়া যৌক্তিক ছিল, সেখানে এখন বাসগুলো ২০-৩০ টাকা বেশি রাখবে। অঙ্কটি শেষ হলো।
কী বুঝলেন? অঙ্কটা যদি এভাবে সবাই করতে পারত, তাহলে থেমে থাকা বিপ্লবটা সচল হতো। আর জীবনও কিছুটা সহজ হতো। কারণ আমরা জানি, জীবনের অঙ্ক বেশ জটিল। বাস ভাড়ার অঙ্ক তার চেয়েও জটিল। একটা বিষয় খেয়াল করলেই বুঝবেন—জনৈক দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষ বলেছেন, ওটাকে ধর্মঘট বলে না। ডিজেলের দাম বাড়ার জন্য পরিবহন বন্ধ থাকা বলে। কখনো ভেবেছেন কি, পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা এ দেশে যা চেয়েছে, তাই পেয়েছে। আরও একটি সেক্টর আছে সব পেয়েছির দলে। সে কথা এখানে প্রযোজ্য নয় বলে আনা হলো না। বলছি পরিবহন সেক্টরের কথা। এ সেক্টরের মানুষেরা কোনো রকমে দিন তিনেক চাকা বন্ধ রাখতে পারলে পুরো দেশকে জিম্মি করে ফেলতে পারে খুব সহজে। তারপর কর্তৃপক্ষ আপস করতে বাধ্য হয়। তখন ভাড়া বাড়ে অযৌক্তিকভাবে। আমরা সেটা না বলি আরকি।
নোট: অঙ্কটি কুঙ্গ থাঙ এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া
যাদব বাবু খুব দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কোন ভূতের প্ররোচনায় তিনি যে পাটিগণিত নামের এক অদ্ভুত বিদ্যা উপহার দিয়েছিলেন আমাদের, সে বড় গবেষণার বিষয়। অবশ্য গবেষকেরা বলে থাকেন, যাদব বাবু নাকি শিশুদের গণিতভীতি দূর করতেই পাটিগণিতে বানরের বাঁশে চড়ার অঙ্ক বসিয়ে দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, শিশুরা যাতে হাসতে-খেলতে এবং তাঁর মতো দুষ্টুমি করতে করতে অঙ্ক কষতে পারে। কিন্তু শিশুরা যে তাঁর চেয়েও এক কাঠি সরেস, সেটা বোঝা যায় আমাকে দেখে।
স্কুল জীবনে একবার আমার দুষ্টু বন্ধুরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিল বলে অঙ্কে ৫৬ পেয়েছিলাম। তা ছাড়া পুরো ছাত্রজীবন বিলো দা বেল্ট—৩০-এর ঘরে। ফলে যাদব বাবুকে আমার একজন দুষ্টু মানুষই মনে হয়েছে আগাগোড়া। তবে ম্যাট্রিকে আদু ভাই হওয়ার সমূহ আশঙ্কা মাথায় রেখে প্রশ্ন ফাঁস না করেও কীভাবে যেন ৫৮ পেয়েছিলাম। সেটা ছিল আমার জীবনে বিরাট অর্জন। আমার যে বন্ধুরা আমার মতোই ৩০-এর ঘরে অঙ্কের নম্বর পেত, তারা ভীষণ অবাক হয়েছিল আমার সাফল্যে। সে যাক। বলছিলাম শিশুদের কথা।
আমাদের দেশের শিশুরা যদি যাদব বাবুর মতো অঙ্কে তুখোড় হতো, তাহলে বিভিন্ন সময় অনেককেই নাকাল হতে হতো। বিশেষ করে বাসের ভাড়া বাড়ানো, দ্রব্যের মূল্য বাড়ানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেককেই তারা পাটিগণিত মতে অঙ্ক করে বুঝিয়ে দিতে পারত—তুমি কেন ঘষো আমি সেটা জানি। তবে ঐতিহাসিকভাবে এ দেশের শিশুরা অঙ্ক, আর ইতিহাসে দুর্বল। ফলে পাটিগণিতের মতো মজার জিনিসটা তেমন কেউ বোঝে না। কিন্তু আমাদের এক বন্ধু বাসভাড়া বাড়ানো বিষয়ে যাদব বাবুকে ছাড়িয়ে গেছেন। এ বিষয়ে ফেসবুকে তাঁর একটি লেখা ভাইরাসজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের বন্ধুটির সেই অঙ্কটি তুলে দেওয়া যাক পাঠকদের জন্য।
ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ার কারণে কিলোমিটার প্রতি ২৭ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। এখানে মূল্যবৃদ্ধির হার ২৩ শতাংশ। একটি বাসে যাত্রীর সংখ্যা থাকে ৫২ জন। বড় বাসগুলোতে ৭৪ জন যাত্রী বসতে পারে। ডিজেলচালিত বাসের মাইলেজ ২ কিমি/লিটার থেকে ৫ কিমি/লিটার পর্যন্ত। আমরা ধরি, বাসে ৫২ জন যাত্রী এবং মাইলেজ সর্বনিম্ন ২ কিমি/লিটার। ২৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতি কিলোমিটারে বাসগুলোকে বাড়তি গুনতে হবে (৮০-৬৫) ÷২= ৭.৫০ টাকা। এখন এই টাকা ৫২ জন যাত্রীর মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। প্রতি ভাগে পড়ছে ৭.৫০ ÷ ৫২= ০.১৫ টাকা বা ১৫ পয়সারও কম।
তাহলে প্রতিটি যাত্রীর প্রতি কিলোমিটারে মূল্যবৃদ্ধি হওয়া উচিত ছিল ১০ শতাংশেরও কম। তার বদলে প্রতি কিলোমিটারে ৪০ পয়সা বাড়িয়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে ৫০ টাকায় ৫ টাকা ভাড়া বাড়া যৌক্তিক ছিল, সেখানে এখন বাসগুলো ২০-৩০ টাকা বেশি রাখবে। অঙ্কটি শেষ হলো।
কী বুঝলেন? অঙ্কটা যদি এভাবে সবাই করতে পারত, তাহলে থেমে থাকা বিপ্লবটা সচল হতো। আর জীবনও কিছুটা সহজ হতো। কারণ আমরা জানি, জীবনের অঙ্ক বেশ জটিল। বাস ভাড়ার অঙ্ক তার চেয়েও জটিল। একটা বিষয় খেয়াল করলেই বুঝবেন—জনৈক দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষ বলেছেন, ওটাকে ধর্মঘট বলে না। ডিজেলের দাম বাড়ার জন্য পরিবহন বন্ধ থাকা বলে। কখনো ভেবেছেন কি, পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা এ দেশে যা চেয়েছে, তাই পেয়েছে। আরও একটি সেক্টর আছে সব পেয়েছির দলে। সে কথা এখানে প্রযোজ্য নয় বলে আনা হলো না। বলছি পরিবহন সেক্টরের কথা। এ সেক্টরের মানুষেরা কোনো রকমে দিন তিনেক চাকা বন্ধ রাখতে পারলে পুরো দেশকে জিম্মি করে ফেলতে পারে খুব সহজে। তারপর কর্তৃপক্ষ আপস করতে বাধ্য হয়। তখন ভাড়া বাড়ে অযৌক্তিকভাবে। আমরা সেটা না বলি আরকি।
নোট: অঙ্কটি কুঙ্গ থাঙ এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া
তারাপদ রায় দুই বাংলার প্রতিষ্ঠিত কবি হলেও তাঁর জন্ম ও শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো কেটেছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শহরে। তিনি ১৯৩৬ সালের ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালতপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন টাঙ্গাইল জজকোর্টের আইনজীবী।
৯ ঘণ্টা আগেআধুনিক আফ্রিকান সাহিত্যের পুরোধা ব্যক্তিত্ব চিনুয়া আচেবের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ নভেম্বর নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ওগিদিতে। তিনি ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকদের একজন। লেখাপড়া শেষে নাইজেরিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে রেডিও প্রযোজক ও এক্সটারনাল ব্রডকাস্টিংয়ের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১ দিন আগেবারী সিদ্দিকী সংগীতজীবনের প্রথম দিকে বংশীবাদক হিসেবে পরিচিত পেলেও পরবর্তী সময়ে তিনি একজন লোকসংগীতশিল্পী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
২ দিন আগেতিনি ছিলেন একজন আদর্শবান শিক্ষক—অজিতকুমার গুহর এটাই সবচেয়ে বড় পরিচয়। নিজের জাগতিক উন্নতিকে কখনো বড় করে দেখেননি তিনি। শিক্ষার্থীদের আদর্শ জীবন উপহার দেওয়াই ছিল তাঁর ব্রত। তিনি সক্রিয় ছিলেন ঢাকার প্রগতিশীল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিসরেও। সুবক্তা হিসেবে তাঁর খ্যাতির কমতি ছিল না।
৫ দিন আগে