একটি ছাতা ও প্রতিশ্রুতি

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০৯: ৫৫

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ আর ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার ছিলেন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের পুরোনো সহপাঠী। দুজনের মধ্যে মিল ছিল খুব। কোনো এক শনিবারে ড. কাজী মোতাহার হোসেন (তখন তিনি অর্ধেক ছাত্র, অর্ধেক শিক্ষক) গিয়েছিলেন মুন্সিগঞ্জে নিমন্ত্রিত হয়ে বক্তৃতা করতে। ফিরতি পথে শুনলেন হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বেধে গেছে। ঢাকা রেলস্টেশনে পৌঁছে তিনি ফোন করলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে। বললেন নিরাপদে হোস্টেলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার জন্য। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ গেলেন মুহম্মদ হাসানের কাছে।

অনুরোধ করে বললেন, তাঁর গাড়িটা কি রেলস্টেশনে পাঠানো যাবে? হাসান বললেন, ‘না।’

তখন শহীদুল্লাহ গেলেন বন্ধু ড. রমেশের কাছে। রমেশ নিজেই নিজের গাড়ি চালিয়ে রেলস্টেশনে গিয়ে কাজী মোতাহার হোসেনকে তুলে আনলেন এবং পৌঁছে দিলেন শহীদুল্লাহর বাড়ির গেটে।

রমেশের ছোট ছেলেটা একদিন সকাল থেকেই কাঁদছিল। বর্ষাকাল। ঝমঝম বৃষ্টি পড়ছে। কিন্তু কিছুতেই কান্না থামে না ছেলের। মা রেগে গিয়ে ওকে বসিয়ে দিলেন দরজার চৌকাঠের উপরকার প্রশস্ত তাকের ওপর। ছেলেটা তবু কাঁদছে।

হঠাৎ কান্না থামিয়ে বলল, ‘মা, মা, দেখো, একটা ছাতা রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছে!’

মা তাকিয়ে দেখেন, সত্যিই একটা ছাতা হেঁটে আসছে। তবে ছাতাটা বাড়ির কাছাকাছি হওয়ার পর দেখা গেল তাঁর নিচে ভিজে জবজবে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ!
রমেশ বললেন, ‘তুমি এ অবস্থায় এখানে!’

 শহীদুল্লাহর জবাব, ‘তোমার ভাগনে প্রবোধের সঙ্গে কথা ছিল সকাল ৮টায় একটা বিষয়ে আলাপ করব।’

 রমেশ বললেন, ‘এই বৃষ্টির মধ্যে কেন, দুপুরে এলেই তো পারতে।’

‘তা কেমন করে হয়? আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, পালন না করলে গোনাহগার হব। তা আমি কিছুতেই পারিনে।’

হ্যাঁ, প্রতিশ্রুতি রাখা হলো এই বাড়ির শুকনো কাপড় পরে। কাপড় শুকানোর পর নিজের কাপড় পরে বাড়ি এলেন তিনি। 

সূত্র: কাজী মোতাহার হোসেন, স্মৃতিকথা, পৃষ্ঠা ৬২-৬৩ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের ভিন্ন বক্তব্যের পরও সালমা হত্যায় নিজ ভাষ্য়ে অনড় র‍্যাব

ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে: সারজিস আলম

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য ডাক্তারের তদবিরের ঘোষণা

এই সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ কি আছে, অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশ্ন

বাংলাদেশ সিরিজের আগে ধাক্কা খেয়েই চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত