আজকের পত্রিকা ডেস্ক
কলকাতা আর্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আবদুল মঈন। পরে এই পদে অধিষ্ঠিত হন জয়নুল আবেদিন। আমরা তাঁকে শিল্পাচার্য বলে সম্মান জানিয়ে থাকি। ১৯৪৩ সালে বা বাংলা ১৩৫০ সালের দুর্ভিক্ষের কথা বারবারই আমরা স্মরণ করে থাকি। ইংরেজ শাসনামলের শেষভাগে বাংলার প্রাদেশিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমুদ্দীন। দুনিয়াজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, নেতাজির দেশত্যাগ, মহাত্মা গান্ধীর আগস্ট আন্দোলন, সব মিলিয়ে দেশ তখন উত্তেজনায় ফুটছে।
ঠিক সেই সময় এ রকম এক দুর্ভিক্ষ। প্রায় সব বিপ্লবী নেতাই কারান্তরালে। রাজনৈতিক সভা-সমিতি নেই বললেই চলে। মিছিল নেই। কিন্তু একটি মিছিল দিনে দিনে বাড়তে থাকে—মৃত্যুর মিছিল। সেই মিছিলে আদি-অন্ত ছিল না। যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় তা শুরু হতে পারত, ছড়িয়ে যেতে পারত; কিন্তু শেষ হতো না। মৃত্যুপথযাত্রী এসব মানুষ ভাত চাইতেও ভয় পেত। বলত, ‘ফ্যান দাও, ফ্যান দাও।’ এ এক বিষণ্ণ আতঙ্কের সময়। খাবারের দোকানের কাচের ভেতর দিয়ে রসগোল্লা পানতোয়াগুলো দেখা যেত। বিশাল গ্র্যান্ড হোটেলে ফুর্তির জীবন ছিল অব্যাহত। গ্র্যান্ড হোটেল থেকে পরিত্যক্ত উচ্ছিষ্ট নিয়ে তখন টানাটানি চলছে মানুষ আর কুকুরে। মনুষ্যসৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলো। দুর্ভিক্ষপীড়িত মৃত্যুপথযাত্রীদের চিত্রমালা দিয়ে করা হলো এক চিত্র প্রদর্শনী। কলকাতা কমিউনিস্ট পার্টির আহ্বানে তা হয়েছিল।
কলকাতার পার্ক সার্কাসের ১৪ নম্বর রোডে বাথরুমসহ ছোট্ট লাল মেঝের একটি ঘরে থাকতেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। পাশের ঘরেই রাজা মিয়ার কয়লার দোকান। সেই পরিবেশের মধ্যেই রাত ১০টায় শুরু হতো আঁকা। কামরুল হাসানকে স্নেহ করতেন জয়নুল। কামরুলের কাজ ছিল জয়নুলকে রং-তুলি বুঝিয়ে দেওয়া এবং তার সঙ্গে গল্প করা।
দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রদর্শনীটি হয়েছিল কলেজ স্ট্রিট মার্কেটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিয়ামের পাশে মাঝারি মাপের একটি ঘরে। কলকাতার নামীদামি প্রায় সব শিল্পী সেখানে তাদের ছবি দিয়েছিলেন। জয়নুল আবেদিনের ছবিগুলো ছিল সাদামাটা। সাধারণ হলুদ রঙের কার্ট্রিজ কাগজে অয়েল কালারের তুলি দিয়ে স্রেফ কালো রঙের আঁচড় ছিল, যাতে ফুটে উঠেছিল দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের মুখ। প্রদর্শনীতে দামি ছবির সংখ্যা কম ছিল না। দামি ক্যানভাস, দামি ফ্রেমকে ম্লান করে সাধারণ কাগজে আঁকা জয়নুল আবেদিনের এসব স্কেচ হয়ে গেল দুর্ভিক্ষের মানচিত্র। অনেকেই মনে করেন, দুর্ভিক্ষের ওপর হাজার হাজার ছবি এঁকেছিলেন শিল্পাচার্য। কিন্তু তিনি ছবি এঁকেছিলেন মোট ১৩টি। খুব দ্রুত ছবি আঁকতেন জয়নুল আবেদিন। দশ থেকে পনেরো মিনিটে ছবি আঁকা হতো এবং শেষে শুধু একটি কাক এঁকে দিতেন। বিচিত্র এই কাকগুলো জয়নুলের পাসপোর্ট হয়ে উঠেছিল। স্বাক্ষর না থাকলেও বোঝা যেত, এটি জয়নুলেরই কাক। কবি শামসুর রাহমান জয়নুলের কাজ নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন।
তথ্যসূত্র: কামরুল হাসান, বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলন ও আমার কথা
কলকাতা আর্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আবদুল মঈন। পরে এই পদে অধিষ্ঠিত হন জয়নুল আবেদিন। আমরা তাঁকে শিল্পাচার্য বলে সম্মান জানিয়ে থাকি। ১৯৪৩ সালে বা বাংলা ১৩৫০ সালের দুর্ভিক্ষের কথা বারবারই আমরা স্মরণ করে থাকি। ইংরেজ শাসনামলের শেষভাগে বাংলার প্রাদেশিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমুদ্দীন। দুনিয়াজুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, নেতাজির দেশত্যাগ, মহাত্মা গান্ধীর আগস্ট আন্দোলন, সব মিলিয়ে দেশ তখন উত্তেজনায় ফুটছে।
ঠিক সেই সময় এ রকম এক দুর্ভিক্ষ। প্রায় সব বিপ্লবী নেতাই কারান্তরালে। রাজনৈতিক সভা-সমিতি নেই বললেই চলে। মিছিল নেই। কিন্তু একটি মিছিল দিনে দিনে বাড়তে থাকে—মৃত্যুর মিছিল। সেই মিছিলে আদি-অন্ত ছিল না। যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় তা শুরু হতে পারত, ছড়িয়ে যেতে পারত; কিন্তু শেষ হতো না। মৃত্যুপথযাত্রী এসব মানুষ ভাত চাইতেও ভয় পেত। বলত, ‘ফ্যান দাও, ফ্যান দাও।’ এ এক বিষণ্ণ আতঙ্কের সময়। খাবারের দোকানের কাচের ভেতর দিয়ে রসগোল্লা পানতোয়াগুলো দেখা যেত। বিশাল গ্র্যান্ড হোটেলে ফুর্তির জীবন ছিল অব্যাহত। গ্র্যান্ড হোটেল থেকে পরিত্যক্ত উচ্ছিষ্ট নিয়ে তখন টানাটানি চলছে মানুষ আর কুকুরে। মনুষ্যসৃষ্ট এই দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলো। দুর্ভিক্ষপীড়িত মৃত্যুপথযাত্রীদের চিত্রমালা দিয়ে করা হলো এক চিত্র প্রদর্শনী। কলকাতা কমিউনিস্ট পার্টির আহ্বানে তা হয়েছিল।
কলকাতার পার্ক সার্কাসের ১৪ নম্বর রোডে বাথরুমসহ ছোট্ট লাল মেঝের একটি ঘরে থাকতেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। পাশের ঘরেই রাজা মিয়ার কয়লার দোকান। সেই পরিবেশের মধ্যেই রাত ১০টায় শুরু হতো আঁকা। কামরুল হাসানকে স্নেহ করতেন জয়নুল। কামরুলের কাজ ছিল জয়নুলকে রং-তুলি বুঝিয়ে দেওয়া এবং তার সঙ্গে গল্প করা।
দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রদর্শনীটি হয়েছিল কলেজ স্ট্রিট মার্কেটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিউজিয়ামের পাশে মাঝারি মাপের একটি ঘরে। কলকাতার নামীদামি প্রায় সব শিল্পী সেখানে তাদের ছবি দিয়েছিলেন। জয়নুল আবেদিনের ছবিগুলো ছিল সাদামাটা। সাধারণ হলুদ রঙের কার্ট্রিজ কাগজে অয়েল কালারের তুলি দিয়ে স্রেফ কালো রঙের আঁচড় ছিল, যাতে ফুটে উঠেছিল দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের মুখ। প্রদর্শনীতে দামি ছবির সংখ্যা কম ছিল না। দামি ক্যানভাস, দামি ফ্রেমকে ম্লান করে সাধারণ কাগজে আঁকা জয়নুল আবেদিনের এসব স্কেচ হয়ে গেল দুর্ভিক্ষের মানচিত্র। অনেকেই মনে করেন, দুর্ভিক্ষের ওপর হাজার হাজার ছবি এঁকেছিলেন শিল্পাচার্য। কিন্তু তিনি ছবি এঁকেছিলেন মোট ১৩টি। খুব দ্রুত ছবি আঁকতেন জয়নুল আবেদিন। দশ থেকে পনেরো মিনিটে ছবি আঁকা হতো এবং শেষে শুধু একটি কাক এঁকে দিতেন। বিচিত্র এই কাকগুলো জয়নুলের পাসপোর্ট হয়ে উঠেছিল। স্বাক্ষর না থাকলেও বোঝা যেত, এটি জয়নুলেরই কাক। কবি শামসুর রাহমান জয়নুলের কাজ নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন।
তথ্যসূত্র: কামরুল হাসান, বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলন ও আমার কথা
জিয়া হায়দারের পুরো নাম শেখ ফয়সাল আব্দুর রউফ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন হায়দার। কবি হিসেবে পরিচিতি পেলেও তিনি বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের বড় সারথি ছিলেন।
১ ঘণ্টা আগেতারাপদ রায় দুই বাংলার প্রতিষ্ঠিত কবি হলেও তাঁর জন্ম ও শৈশব-কৈশোরের দিনগুলো কেটেছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শহরে। তিনি ১৯৩৬ সালের ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালতপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন টাঙ্গাইল জজকোর্টের আইনজীবী।
১ দিন আগেআধুনিক আফ্রিকান সাহিত্যের পুরোধা ব্যক্তিত্ব চিনুয়া আচেবের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ নভেম্বর নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ওগিদিতে। তিনি ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকদের একজন। লেখাপড়া শেষে নাইজেরিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে রেডিও প্রযোজক ও এক্সটারনাল ব্রডকাস্টিংয়ের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২ দিন আগেবারী সিদ্দিকী সংগীতজীবনের প্রথম দিকে বংশীবাদক হিসেবে পরিচিত পেলেও পরবর্তী সময়ে তিনি একজন লোকসংগীতশিল্পী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
৩ দিন আগে